বল ব্যাটে লাগলেও এলবিডব্লিউ!

বিতর্কিত সেই আউটের পর মাঠ ছাড়ছেন মিচেল। ছবি: টুইটার
বিতর্কিত সেই আউটের পর মাঠ ছাড়ছেন মিচেল। ছবি: টুইটার
অকল্যান্ডে কাল ভারত-নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে একটি আউট নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধে উঠেছে


ড্যারিল মিচেলকে শুধু রোহিত শর্মাই ফেরাতে পারতেন। ভারতীয় অধিনায়ক তা করেননি। মিচেলকে ফেরালে অন্তত সিদ্ধান্তটি নিয়ে ওঠা বিতর্ক মাটিচাপা পড়ে যেত। আর তাতে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) নিয়েও এত কথা হতো না।

ঘটনাটা কাল অকল্যান্ডে ভারত-নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে। ক্রুনাল পাণ্ডিয়ার করা ষষ্ট ওভারের শেষ বলটি ‘স্কিড’ করে আঘাত হানে মিচেলের প্যাডে। ভারতের এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেন মাঠের আম্পায়ার ক্রিস ব্রাউন। কিন্তু কিউই ব্যাটসম্যান মিচেল সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন। তাঁর আচরণেই বোঝা যাচ্ছিল, বল যে ব্যাটে লেগেছে সে ব্যাপারে তিনি শতভাগ নিশ্চিত।

টিভি আম্পায়ারের দ্বারস্থ হতেই গড়বড়ের শুরু। ‘স্নিকো’তে বল ব্যাটে লাগার কোনো চিহ্ন মেলেনি। কিন্তু হটস্পটে ধরা পড়ল, বল ব্যাটে লেগেছে। ব্যাটের কানায় সাদা চিহ্নও ভেসে উঠল। জায়ান্ট স্ক্রিনে গ্যালারির দর্শকেরাও তা দেখেছেন। শুধু তাই নয়, বল ট্র্যাকিং প্রযুক্তিতে ধরা পড়ল ব্যাটে লাগায় বল স্বাভাবিক গতিপথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। সবাই ভেবেছিল, মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত তুলে নিয়ে ব্যাটসম্যানকে ‘নট আউট’ ঘোষণা করবেন টিভি আম্পায়ার শন হেগ। কিন্তু টিভি আম্পায়ার আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখলেন—আউট!

মিচেল তো হতচকিত। তিনি মাঠ ছাড়তে চাচ্ছিলেন না। ভারতের অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গে কথা বলার জন্য এগিয়ে যান। রোহিত তখন আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলায় ব্যস্ত। রাগে গজরাচ্ছেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন ভারতের উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনি। মোট কথা, বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে গিয়েছিলেন দুই দলের খেলোয়াড়েরাই। ধারাভাষ্যকক্ষেও তখন ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেসার সাইমন ডুল ‘একেবারেই হাস্যকর সিদ্ধান্ত’ বলে নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন। পরে অবশ্য আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে মাঠ ছাড়েন মিচেল।

হটস্পটে বল ব্যাটে লাগার চিহ্ন (সাদা অংশটুকু)। ছবি: টুইটার
হটস্পটে বল ব্যাটে লাগার চিহ্ন (সাদা অংশটুকু)। ছবি: টুইটার

ম্যাচে ভারত ৭ উইকেটে জেতার পর ওই আউট নিয়ে কথা বলেছেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। ভারতের পেসার খলিল আহমেদ জানান, আম্পায়ারের প্রতি সম্মান দেখিয়েই তাঁরা সিদ্ধান্তটি মেনে নিয়েছেন। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে খলিল বলেন, ‘আমরা আম্পায়ারের (তৃতীয়) সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলাম। কারণ সিদ্ধান্তটি নিয়ে আমরা কিছু করতে পারি না। তাই অপেক্ষায় ছিলাম এবং আম্পায়ার যা বলেছেন মেনে নিয়েছি।’ কিউই স্পিনার ইশ সোধি অবশ্য সরাসরি ক্ষোভ ঝেড়েছেন, ‘কী ঘটেছে তা বুঝতে পারিনি। সবাই দেখেছে ব্যাটে হটস্পটের দাগ ছিল। এমন আউট আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এর আগে দেখিনি।’

আইসিসির নিয়ম বলছে, ফিল্ডিং দলের অধিনায়ক চাইলে আউটের আবেদন প্রত্যাহার করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে আম্পায়ারের অনুমতি লাগবে এবং সেটি হতে হবে পরের বলটি ডেলিভারি হওয়ার আগেই। মৌসুমের শুরুতে বিগ ব্যাশেও প্রায় এমন এক আউটের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। সেটি ছিল রান আউটের সিদ্ধান্ত। যদিও টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় ব্যাটসম্যান আউট ছিলেন না। প্রতিপক্ষ দল অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক কলিন ইনগ্রাম অবশ্য আউট হওয়া ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে এনেছিলেন উইকেটে।