ফুটবল থেকে শিখছে ক্রিকেট
শ্রীলঙ্কা সফর সামনে রেখে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মনোযোগ এখন খেলোয়াড়দের প্রস্তুতিতে। আর এ ক্ষেত্রে তাদের জন্য শিক্ষা হয়ে এসেছে বাংলাদেশ ফুটবল দলের তিক্ত অভিজ্ঞতা। শ্রীলঙ্কা সফরের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলেও যেন করোনাধাক্কা না লাগে, সে ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা বিসিবির।
ঈদের আগেই শুরু হয়েছে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত অনুশীলন। ব্যক্তিগত অনুশীলন চলবে এ মাসের শেষ পর্যন্ত। এরপর তিনজন, পাঁচজন করে ছোট ছোট দলে ভাগ করে অনুশীলনের সুযোগ দেবে বিসিবি। ক্রিকেট বোর্ডের আগের পরিকল্পনাটা ছিল—ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে অনুশীলনের পর দল ডেকে কোভিড–১৯ পরীক্ষা করিয়ে শ্রীলঙ্কায় পাঠানোর। এ পরিকল্পনায় এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।
৩ টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে ২৩ সেপ্টেম্বর। তার আগে বাংলাদেশেই সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে সপ্তাহখানেকের জন্য একটি আবাসিক ক্যাম্প হবে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানালেন, আবাসিক ক্যাম্পে ডাকা হবে ২০ থেকে ২৪ জন ক্রিকেটারকে। করোনার কারণেই সংখ্যাটা বেশি। বাংলাদেশ দলকে রাখা হবে রাজধানীর একটি হোটেলে। হোটেল থেকে ক্রিকেটাররা যাওয়া–আসা করবেন মাঠে।
ফুটবল দলের অভিজ্ঞতা দেখে বিসিবির পরিকল্পনা—ক্রিকেটাররা যাঁর যাঁর বাসায় থাকা অবস্থাতেই সবার একবার করোনা পরীক্ষা করানো। পরীক্ষায় নেগেটিভ আসা ক্রিকেটারদের আবাসিক ক্যাম্পে ডাকা হবে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী কাল প্রথম আলোকে বলেন, ফুটবলের ভুল থেকে তাঁরাও শিখেছেন, ‘ভুল থেকে শেখার থাকে সব সময়ই। ওখানে (ফুটবলে) যে বিষয়গুলো সামনে এসেছে, সেগুলো আরও সতর্কভাবে আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে আবাসিক ক্যাম্প শুরুর আগে বাসায় থাকতেই একবার সবার টেস্ট করা হবে। যারা নেগেটিভ, তাদের আবাসিক ক্যাম্পে ডাকা হবে। ক্যাম্পে আরেকবার পরীক্ষা হবে।’
দলে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধের দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবেই বিসিবির মেডিকেল বিভাগের ওপর। বিসিবির সিনিয়র চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী বলছেন করোনা প্রতিরোধে তাঁদের পরিকল্পনার কথা, ‘ফুটবলের ঘটনায় আমরা বুঝতে পারছি, আমাদের সময় নিয়ে একাধিক পরীক্ষা করাতে হবে। শেষ মুহূর্তে পরীক্ষা করে ফুটবলের মতো ১০-১২ জন পজিটিভ চলে এলে দলই গঠন করা যাবে না। এ কারণে একটু বেশি খেলোয়াড় প্রাথমিক দলে ডাকতে হবে। ফুটবল আমাদের ভালো শিক্ষা দিয়েছে, আশা করি এটা কাজে লাগবে।’
>শ্রীলঙ্কা সফর নিশ্চিত হওয়ার পর বিসিবির ভাবনায় এখন দলের প্রস্তুতি
তারা শিক্ষা নিচ্ছে ফুটবল দলের করোনা–অভিজ্ঞতা থেকে।
কন্ডিশনিং ক্যাম্প চলাকালেও হবে পরীক্ষা। আর ভ্রমণের ৭২ ঘণ্টা আগে একটি পরীক্ষা তো বাধ্যতামূলকই। পরীক্ষাগুলো কোথায় হবে, সেটি এখনো ঠিক না হলেও প্রথম পরীক্ষার ব্যবস্থা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর করবে। দেশের এসব ঝক্কি শেষে শ্রীলঙ্কায় গিয়েও হ্যাপাও কম নয়। টেস্ট সিরিজ শুরুর আগের মাসখানেক সময় শ্রীলঙ্কার কোন শহরে বাংলাদেশ দল থাকবে, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। শুরুতে কলম্বোর কথা বলা হলেও গত সপ্তাহে হঠাৎ দেশটির রাজধানী শহরের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া চিন্তা বাড়িয়েছে আয়োজকদের। বিসিবির প্রধান নির্বাহী বললেন, ‘আমাদের দল এক মাস কোথায় থাকবে, ওরা এখনো এটা নিয়ে কাজ করছে। ওরা কলম্বোর কথা বলেছিল। ক্রিকেটীয় সুবিধার কথা চিন্তা করে অন্য ভেন্যুর কথাও চিন্তা করতে পারে।’ নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, সিরিজের প্রথম টেস্টের ভেন্যু এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে দুটি টেস্ট একই ভেন্যুতে দেবে। আরেকটি টেস্ট অন্য ভেন্যুতে হবে।
শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে যোগ দিতে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই ঢাকায় চলে আসার কথা প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোসহ বিদেশি কোচিং স্টাফ সদস্যদের। ডমিঙ্গোসহ কোচিং বহরে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকান কোচদের অবশ্য ভ্রমণ জটিলতা আছে। সেটি নিরসনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। তবে স্পিন পরামর্শক ড্যানিয়েল ভেট্টোরির বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা কম। ভেট্টোরি একেবারে শ্রীলঙ্কাতেও যোগ দিতে পারেন দলের সঙ্গে।