ফাঁস হয়ে যাবে ভেবে ফিক্সারের কথা গোপন রেখেছেন উমর আকমল
আইসিসি পইপই করে একজন ক্রিকেটারকে বলে দেয়, কোনোভাবে কোনো ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেলেই যেন সেটা ক্রিকেটাররা নিজ নিজ বোর্ডকে জানিয়ে দেন। একেবারে বয়সভিত্তিক দল থেকে ক্রিকেটারদের মগজে নির্দেশনাটা ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এরপরও সব ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার কথা কি আইসিসি কিংবা সংশ্লিষ্ট ক্রিকেট বোর্ডের কাছে পৌঁছায়?
না পৌঁছানোর প্রমাণ তো বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা দুই বছর আগে পেয়েছেন হঠাৎ আইসিসির কাছ থেকে সাকিব আল হাসান এক বছর নিষিদ্ধ হওয়ায়। বাংলাদেশের অলরাউন্ডারের অপরাধ ছিল, তিনি ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার কথা গোপন করেছিলেন। একই অপরাধ পাকিস্তানে করেছেন উমর আকমল। শাস্তিও পেয়েছেন। দেড় বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আগামী এপ্রিলে।
তবে এখন উমর আকমল আবার হঠাৎ আলোচনায় তাঁর ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন করার কারণ জানিয়ে। তাঁর শঙ্কা ছিল, তাঁর তথ্যগুলো ফাঁস হয়ে যাবে। পিসিবি তাঁর দেওয়া তথ্য গোপন রাখতে পারবে না শঙ্কায়ই নাকি বোর্ডকে কিছু জানাননি তিনি।
‘পিসিবির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটের কাছে আমি রিপোর্ট করিনি। কারণ, আমার শঙ্কা ছিল গোপন তথ্যগুলো সেখান থেকে ফাঁস হয়ে যাবে, গোপন আর থাকবে না’—লাহোরে সংবাদকর্মীদের বলেছেন উমর।
ক্রিকেট আমার রুটিরুজি। খেলাটা থেকে দূরে থাকায় গত এক বছরে আমার কেমন ক্ষতি হয়েছে, সেটা আমি জানি।
কোনো ধরনের ফিক্সিংয়ে জড়ানোর ইচ্ছা তাঁর ছিল না জানিয়ে উমরের দাবি, ‘সবকিছু জানিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা আমার সব সময়ই ছিল। আমি বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম এটা জানাতে যে পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) স্পট ফিক্সিং করতে আমার কাছে প্রস্তাব এসেছে। দুর্ভাগ্যবশত তিনি ব্যস্ত থাকায় তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি আমার, এরপর এসব ঘটল। এমন কিছুর (ফিক্সিং) সঙ্গে আমি কখনো জড়িত ছিলাম না। কারণ, আমার কাছে পাকিস্তানের হয়ে খেলাই সবচেয়ে বড় সম্মানের ব্যাপার।’
২০২০ পিএসএলের আগে উমর আকমলের কাছে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু সেগুলো গোপন রাখায় পিসিবির কাছ থেকেই শাস্তি পেয়েছেন। এপ্রিলে তাঁর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হলেও ক্রিকেটে ফিরতে আরও সময় লাগবে উমরের। সংশোধনের অংশ হিসেবে ফিক্সিং–বিরোধী শিক্ষামূলক কাজে অংশ নিতে হবে এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানকে।
তবে দ্রুত খেলায় ফেরার জন্য এখন পিসিবির যা চায়, তাই করতে রাজি উমর, ‘ক্রিকেট আমার রুটিরুজি। খেলাটা থেকে দূরে থাকায় গত এক বছরে আমার কেমন ক্ষতি হয়েছে, সেটা আমি জানি। আমি পাকিস্তানের জার্সিতে আমার ক্যারিয়ারটাকে আবার জাগিয়ে তুলতে চাই। আশা করি, সেটা করতে পারব।’ নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে অনেক কিছু শিখেছেন জানিয়ে বললেন, ‘গত ১২ মাসে অনেক কিছু শিখেছি। আশা করি, এখন আবার ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে পারব। আমার মধ্যে এখনো অনেক ক্রিকেট বাকি।’