প্রতারকের খপ্পরে ঋষভ পন্ত, দেড় কোটি রুপির বেশি গচ্চা

প্রতারণার শিকার হয়েছেন ঋষভ পন্তছবি: টুইটার

কথায় আছে, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।’ ঋষভ পন্ত লোভ করেছিলেন। ভাগ্য ভালো, চরম শাস্তিটা পেতে হয়নি, তবে ঋষভ পন্তের মতো ক্রিকেটারের আয়–রোজগার বিচারে অল্পের ওপর দিয়েই গেছে।

অর্থ জালিয়াতির অভিযোগে হরিয়ানার ক্রিকেটার মৃণাঙ্ক সিংকে গ্রেপ্তার করেছে জুহু পুলিশ। এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ছয় লাখ রুপি প্রতারণা করার অভিযোগ ছিল মৃণাঙ্কের বিরুদ্ধে। চলতি মাসে এই ক্রিকেটার গ্রেপ্তার হওয়ার পর সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঋষভ পন্তের সঙ্গেও বড় অঙ্কের প্রতারণা করেছেন মৃণাঙ্ক।

তাঁর বিরুদ্ধে ১ কোটি ৬৩ লাখ রুপি প্রতারণার অভিযোগে মামলা করেছেন ভারত জাতীয় দলের উইকেটকিপার ঋষভ এবং তাঁর ব্যবস্থাপক পুনীত সোলাংকি।

ভারতের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দামি ঘড়ি, মুঠোফোন এবং অলংকারসামগ্রী সাশ্রয়ে এনে দেওয়ার কথা বলে পন্তের সঙ্গে ভাব জমানোর পাশাপাশি বিশ্বাসযোগ্যতাও অর্জন করেছিলেন মৃণাঙ্ক। বেশ কিছু ক্রিকেটারকে দামি ঘড়ি এবং অন্যান্য জিনিস এনে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। পন্ত এতে মৃণাঙ্কের ওপর আস্থা পান।

দিল্লি ক্যাপিটালসের এই অধিনায়ককে মৃণাঙ্ক জানান, নিজের ব্যবহার্য মূল্যবান অলংকার ও ঘড়ি তিনি চাইলে বিক্রির জন্য তুলে দিতে পারেন। সেগুলো ভালো দামে বিক্রি করে দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি পন্তকে।

আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়কত্ব করছেন ঋষভ পন্ত
ছবি: টুইটার

পন্ত এরপর ভুলটি করে বসেন। বিক্রির জন্য প্রায় ৬৫ লাখ রুপি দামের নিজের ব্যবহার্য ঘড়ি ও অলংকারসামগ্রী তিনি তুলে দেন মৃণাঙ্কের হাতে। এর পাশাপাশি ফ্রাঙ্ক মুলার ভ্যানগার্ড মডেলের ঘড়ি পেতে মৃণাঙ্ককে নগদ টাকাও দেন পন্ত। একটি ঘড়ির জন্য দেন প্রায় ৩৬ লাখ রুপি। রিচার্ড মিলে মডেলের ঘড়ির জন্য প্রায় ৬২ লাখ রুপি।

কিন্তু কয়েক মাস পর মৃণাঙ্ক তাঁর কথামতো ঘড়ি এনে দিতে পারেননি এবং পন্তের দেওয়ার জিনিসগুলোরও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। বিষয়টি মৌখিকভাবে মীমাংসা করতে রাজি হন এবং পন্তকে ১.৬৩ কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দিতেও রাজি হন। মৃণাঙ্ক সিংয়ের কাছ থেকে এই অর্থমূল্যের চেক পান তিনি এবং ব্যাংকে তা ভাঙাতে গিয়েও বেকায়দায় পড়েন। চেকের বিপরীতে অ্যাকাউন্টে সে পরিমাণ অর্থ ছিল না।

সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘মিড ডে’ জানিয়েছে, ঋষভ পন্ত তাঁর অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, মিথ্যা রেফারেন্স দেখিয়ে প্রথমে বিশ্বাস অর্জন করে পরে প্রতারণা করেছেন মৃণাঙ্ক সিং।

ঋষভের অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘২০২১ সালের জানুয়ারিতে ঋষভ পন্ত এবং সোলাংকিকে মৃণাঙ্ক জানান, তিনি ঘড়ি, অলংকারসামগ্রী ও ব্যাগ কেনাবেচার ব্যবসা শুরু করেছেন। তার কাছ থেকে পণ্য নিয়েছে এমন কিছু ক্রিকেটারের নামও উল্লেখ করেন। খুব স্বস্তা দামে বিলাসবহুল ঘড়ি ছাড়াও অন্যান্য দ্রব্য এনে দিতে পারে, এমন মিথ্যা বলেছে। তার কথায় বিশ্বাস করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মৃণাঙ্কের কাছে নিজের ঘড়ি ও অলংকারসামগ্রী তুলে দিয়েছিল পন্ত।’

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটিকে সূত্র আরও জানিয়েছে, একজন চলচ্চিত্র পরিচালক এবং বেশ কয়েকটি হোটেল মৃণাঙ্কের প্রতারণার শিকার হয়েছে।