পাকিস্তান দলে ফেরার অপেক্ষায় আবিদ আলী
গত বছরের ডিসেম্বরে কায়েদে আজম ট্রফিতে খেলার সময় হঠাৎ বুকের ব্যথা অনুভব করেন আবিদ আলী। পরীক্ষা করে দেখা যায়, বুকের মধ্যে বাসা বেঁধেছে অ্যাকিউট করোনারি সিনড্রোম। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে, সুস্থ হয়ে ২২ গজে ফিরতে পারবেন তো ৩৪ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার!
এনজিওপ্লাস্টি অস্ত্রোপচারে হার্টে পরানো হয় দুটি রিং। পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া শেষে চার মাস পরই হাতে তুলে নিয়েছিলেন ব্যাট। চিকিৎসকের ছাড়পত্র মেলায় এখন তাঁর অপেক্ষাটা আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফেরার।
এর আগে তিনি স্মরণ করলেন, গত কয়েক মাসে কতটা কষ্টের মধ্য দিয়ে গেছে তাঁর জীবন। ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবিদ আলী বলেছেন, ‘গত পাঁচ-ছয় মাস চরম অস্বস্তিতে ছিলাম আমি। কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে আমি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছি। আমি যে পরিস্থিতিতে ছিলাম, আমি কখনোই বর্তমান অবস্থানে আসতে পারব বলে আশা করিনি।’
শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল যে এত দ্রুত মাঠে ফেরার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন না আবিদ নিজেই, ‘আমি কখনই কল্পনা করিনি যে এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে এবং প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছিল যেন আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে। তবে সব প্রশংসা মহান আল্লাহর এবং সব চিকিৎসকের, যাঁরা আমাকে ফিরে আসতে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। ভক্ত ও গণমাধ্যমও এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে।’
অসুস্থ হওয়ার আগে বাংলাদেশ সফরে এসে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে শতক ও অর্ধশতক করে পাকিস্তানের জয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন এই ওপেনার। সুস্থ হয়ে ফিরে ঘরোয়া ক্রিকেট এসপিএলে খেলে প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্সও ছিল চমৎকার। এখন জাতীয় দলের হয়ে ফেরার তর সইছে না আবিদের, ‘আমি আমার ফর্ম ফিরে পেতে চাই। সঙ্গে পাকিস্তানের হয়ে খেলা চালিয়ে যেতে চাই, যেভাবে আমি আগে করছিলাম। ফলাফল আল্লাহর হাতে। আমি যা করতে পারি তা হলো, নিজেকে প্রস্তুত করা এবং নিশ্চিত করা যে আমি ফেরার জন্য পুরোপুরি ফিট আছি।’
পাকিস্তানের জার্সিতে অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি হাঁকানো আবিদ ফিরে গেলেন শৈশবে, ‘সবাই পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখে। আমার জন্য, অনুপ্রেরণা শুরু হয়েছিল নিজের শহর মোজাং থেকে, যেখানে ওয়াসিম আকরাম এবং সরফরাজ নওয়াজের জন্ম হয়েছিল। তাঁরা আমার আদর্শ ছিলেন এবং আমি তাঁদের মতোই পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করতে চেয়েছিলাম।’
এখন পর্যন্ত খেলেছেন ১৬টি টেস্ট খেলেছেন আবিদ। চার শতক ও তিন অর্ধশতকে ৪৯.১৬ গড়ে ১১৮০ রান করেছেন। ওয়ানডেতে ৬ ইনিংসে একমাত্র শতক ও অর্ধশতকে ৩৯.০০ গড়ে রান করেছেন ২৩৪।