পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টিম ম্যানেজমেন্টে পরিবর্তনের আভাস ছিল আগেই। হেড কোচ মিসবাহ-উল-হকের বদলি খুঁজে বেড়াচ্ছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিসের পারফরম্যান্স নিয়েও সন্তুষ্টি ছিল না বোর্ডের। বিকল্প খোঁজা হচ্ছিল তাঁরও। এর মধ্যেই আজ পরিবারকে আরও বেশি সময় দেওয়ার কথা বলে পদত্যাগ করেছেন দুজনই।
২০১৯ বিশ্বকাপের পর এ দুজনকে পাকিস্তান ক্রিকেট দলে নিয়োগ দেওয়া হয়। মিসবাহর ভূমিকাটা ছিল একই সঙ্গে প্রধান নির্বাচক ও হেড কোচের। ব্যাপারটি নিয়ে বেশ বিতর্কও তৈরি হয়। একজন একই সঙ্গে কীভাবে জাতীয় দলের প্রধান নির্বাচক ও হেড কোচ হতে পারেন, বিতর্কটা ছিল সেটি নিয়েই। প্রথমে আত্মবিশ্বাসী থাকলেও মিসবাহ পরে প্রধান নির্বাচকের পদটা ছেড়ে দিতে বাধ্যই হন। দুজনেরই চুক্তির আরও এক বছর বাকি ছিল।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা দুজনই সোমবার পদত্যাগ করেন। পদত্যাগপত্রে মিসবাহ লেখেন, ‘জ্যামাইকার কোয়ারেন্টিনে থেকে আমি আমার ২৪ মাসের সময়টা বিশ্লেষণ করার সুযোগ পেয়েছি। আগামী কয়েক মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যে সূচি, তাতে বুঝতে পারছি, আমাকে একটা বড় সময় পরিবারের বাইরে জৈব সুরক্ষিত পরিবেশে কাটাতে হবে। আমি পাকিস্তান দলের হেড কোচের পদ থেকে সে কারণেই পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের আগে নিজের পদত্যাগ প্রসঙ্গে মিসবাহ ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে, ‘আমি বুঝতে পারছি পদত্যাগের সময়টা সঠিক হচ্ছে না। তবে আমি মনে করি, আগামী দিনগুলোর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য আমি সঠিক মানসিক অবস্থায় আছি। সময় এসেছে নতুন কারও আমার দায়িত্বটা বুঝে নেওয়ার আর দলকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।’
ওয়াকারের পদত্যাগপত্রেও মোটামুটি একই কারণ লেখা, ‘মিসবাহ আমার সঙ্গে তাঁর ভাবনা বিনিময় করেছে। ওর কথা শুনে আমার মনে হয়েছ আমারও পদত্যাগ করা উচিত। কারণ গত ২৪ মাস ধরে আমরা কাজ করেছি জুটি হিসেবে। তাই ওর পদত্যাগের পর আমারও পদত্যাগ করা উচিত। পাকিস্তান দল ও এর তরুণ প্রতিভাদের সঙ্গে কাজ করাটা আমার জন্য খুব গৌরব আর সন্তুষ্টির বিষয় ছিল। আমি মনে করি আমি যাদের নিয়ে কাজ করেছি, তাদের সবারই উন্নতি হয়েছে। করোনার কারণে গত ১৬ মাস আমরা জৈব সুরক্ষা বলয়ের যে অভিজ্ঞতা নিয়েছি, সেটা একেবারেই নজিরবিহীন। এমন কিছু কখনোই আমরা আমাদের খেলোয়াড়ি জীবনে দেখিনি।’
আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানে ১৮ বছর পর পা রাখবে নিউজিল্যান্ড দল। কিউরা সেখানে ওয়ানডে সিরিজ খেলবে। মিসবাহ ও ওয়াকারের পদত্যাগের পর আজই পাকিস্তান ক্রিকেট দলে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাকলায়েন মুশতাক ও আবদুল রাজ্জাককে। দুজনই অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব পালন করবেন। সাকলায়েন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় উন্নয়ন প্রকল্পের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। রাজ্জাক সাম্প্রতিককালে পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচ হিসেবে ভালোই সাফল্য পেয়েছেন। জিতেছেন তিনটি ট্রফি।