পরিবারে কারও মৃত্যুর চেয়ে যখন ‘ক্রিকেট গুরুত্বপূর্ণ’
ভক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ক্রীড়াঙ্গনের তারকাদের জন্য এখন বেশ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ক্রীড়াবিদদের নানা অর্জনে অভিনন্দনসূচক বার্তায় সয়লাব হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
তাতে অংশ নেন ভক্তরাও। এর মধ্য দিয়ে পছন্দের ক্রীড়াবিদদের আরও কাছাকাছি যেতে পারেন ভক্তরা। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কি ক্রীড়াবিদদের জন্য সব সময়ই এমন সহায়ক ভূমিকা পালন করে? মাঝেমধ্যেই এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই ক্রীড়াবিদদের জন্য নির্মম হয়ে ওঠে।
পছন্দের ক্রীড়াবিদদের নিয়ে ‘ট্রল’ করতেও বাধে না ভক্তদের। বাজে পারফর্ম করলে নানা ধরনের সমালোচনা তো আছেই। ডেল স্টেইন ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ায় তাঁকে পারফরম্যান্স নিয়ে এমন কিছু শুনতে হয়নি।
তবে অন্য রকম এক নির্মম অভিজ্ঞতাই হলো দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি এই পেসারের। অ্যাশেজে ব্রিসবেন টেস্টের চতুর্থ দিনে ৪০০ উইকেটের দেখা পান নাথান লায়ন। গত শুক্রবার এই মাইলফলকের দেখা পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বর্তমান ও সাবেক ক্রিকেটার থেকে সমর্থকদের অভিনন্দনে ভেসে যান লায়ন।
ডেল স্টেইন একটু দেরি করে ফেলেন। সোমবার তিনি টুইটারে অভিনন্দন জানান লায়নকে, ‘নাথান লায়ন, তোমাকে কুর্নিশ। ৪০০! চালিয়ে যাও। অভিনন্দন।’
ঘটনাটা এ পর্যন্ত স্বাভাবিকই ছিল। কিন্তু কিছু অতি–উৎসাহী ভক্তের কারণে তা আর স্বাভাবিক থাকেনি। ডেল স্টেইনের সে পোস্টে এক ভক্ত জানতে চান, অভিনন্দন জানাতে দেরি হলো কেন? আরেক ভক্ত খোঁচা মারেন, অভিনন্দন জানানোর গতি ‘ধোনির ব্যাটিংয়ের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন।’
ডেল স্টেইন এসব কথার উত্তরে সে পোস্টেরই মন্তব্যে ব্যাখ্যা করেন, ‘ক্ষমা প্রার্থনা করছি। দাদা মারা গেছেন। সে সময় আমি তাঁর ও আমার পরিবারের সঙ্গে ছিলাম।’
ব্যস, এখানেই ঘটনাটা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। অনেক ভক্ত মন্তব্য করে সহমর্মিতাও প্রকাশ করেন। কিন্তু অতি-উৎসাহী ভক্তরা এরপরও ‘ট্রল’ করা থামাননি।
বন্ধুত্বসূচক খোঁচার ছলে সেসব ভক্ত তখনো অটল থাকেন নিজেদের দাবিতে, লায়নকে আরও আগে অভিনন্দন জানানো উচিত ছিল। ডেল স্টেইন এরপর আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে করা দুর্দান্ত আউট সুইংয়ের মতো তাঁর মন্তব্যও সুইং করে সেসব ‘ট্রল’ করা ভক্তদের লাগার কথা।
স্টেইন আরেকটি টুইট করেন, ‘নির্বোধের মতো মশকরা চলছে। নাথান লায়নের ৪০০ উইকেট পাওয়া নিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাতে দেরি করে ফেলেছি। ক্ষমা চাচ্ছি। এর পর থেকে এমন পরিস্থিতিতে পারিবারিক দুঃখজনক ঘটনা এড়িয়ে চলব। কারণ, ক্রিকেট বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
এরপর যদি ভক্তদের বোধোদয় ঘটে!