নাটক জমিয়ে রাখছেন শোয়েব আখতার
শোয়েব আখতার ভালোই খেপেছেন। পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলছেন। স্বীকৃত হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে দ্রুতগতির বলটি করেছেন তিনি। এখন ক্রিকেট বিশ্লেষক হিসেবেও তাঁর বেশ নামডাক। ইউটিউবে তাঁর বিশ্লেষণ বেশ আগ্রহ নিয়েই দেখেন ক্রিকেট অনুরাগীরা। এ কারণেই তাঁকে পিটিভি স্পোর্টস তাদের বিশ্লেষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।
এমন একজন তারকাকে লাইভ অনুষ্ঠানে অপমান করেছেন সঞ্চালক। লাইভে ভিভ রিচার্ডসের মতো কিংবদন্তির উপস্থিতিতে শোয়েবকে অনুষ্ঠান ছেড়ে বের হয়ে যেতে বলেছিলেন ডক্টর নোমান নিয়াজ। এ ঘটনায় ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন শোয়েব। কিন্তু সঞ্চালক সেটি করেননি। পরে চারদিক থেকে ওঠা সমালোচনায় ক্ষমা চেয়েছেন নিয়াজ। কিন্তু শোয়েবের এখন আর মন গলছে না। বলছেন, যখন ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন, তখন চাওয়া হয়নি। এখন আর ক্ষমা চেয়ে লাভ নেই।
গত ২৬ অক্টোবর পাকিস্তানি চ্যানেল পিটিভি স্পোর্টসের এক আলোচনা অনুষ্ঠানে শোয়েব আখতারের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান নিয়াজ। একপর্যায়ে নিয়াজ বলেন, ‘আপনি অতি চালাক এবং অভদ্রের মতো আচরণ করছেন। আপনার উচিত এই অনুষ্ঠান ছেড়ে চলে যাওয়া।’ অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে তাঁর সঙ্গে ওই আচরণের জন্য নিয়াজকে দুঃখ প্রকাশ করতে বলেন শোয়েব। কিন্তু নিয়াজ পাত্তা দেননি এ কথায়। শোয়েব সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন।
এ ঘটনায় সবাই নিয়াজের সমালোচনা করেছেন। স্বয়ং ইমরান খানও এ নিয়ে মুখ খুলেছেন। নিয়াজ তাই ক্ষমা চেয়েছেন এবং সেদিন তাঁর এমন কথার পেছনে যুক্তি দিয়েছেন। তবে ওদিকে পিটিভিও বসে ছিল না। শোয়েব আখতারকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছে তারা।
নোটিশ না দিয়ে নিজের পদ থেকে সরে যাওয়া ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সময় অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার কারণে রিকভারি নোটিশ পাঠিয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১০ কোটি ৩৩ লাখ রুপি (প্রায় ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা) চেয়েছে পিটিভি। বলা হয়েছে, নোটিশ না দিয়ে চলে যাওয়ায় তিন মাসের বেতন হিসেবে ৩৩ লাখ ৩৩ হাজার রুপি দিতে হবে। আর বাকি ১০ কোটি রুপি চাওয়া হয়েছে বিশ্বকাপের সময় এভাবে সরে যাওয়ায় চ্যানেলের আর্থিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে।
কিন্তু আইনি লড়াই করার হুমকি শোয়েবও দিয়েছেন। এবং নিয়াজের সবার সামনে ক্ষমা চাওয়ায় তাঁর যে এখন আর মন গলবে না, সেটাও জানিয়ে দিয়েছেন। জিইও সুপার নিউজকে বলেছেন, ‘আমি সেদিন সন্ধ্যায় ক্ষমা চাইতে বলেছি, এখন না। তখন আমি সেটা পাইনি, এ কারণেই চলে এসেছি। এখন আর আমার কাছে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে না। তাঁর ক্ষমা চাইতে হবে পিটিভির কাছে। কারণ, তাঁর কারণেই তাদের ব্র্যান্ডে আঘাত লেগেছে। পাকিস্তানের মানুষের কাছে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে...আমার কাছে না। আমি যখন এই আসন ছেড়েছি, তখনই সে অধ্যায় শেষ করে এসেছি।’
আখতারের দাবি, এই ঘটনা নিয়ে যেন খুব বেশি আলোচনা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতেই সেদিন অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন, ‘আমি চাইলে তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করতে পারতাম এবং তাঁর ব্যাপারে অনেক কিছুই বলতে পারতাম। আমার শক্তিটা দেখুন। আমি চাইলে অনেক কিছু করতে পারতাম। কিন্তু আমি সেটা করিনি, কারণ মনের দিক থেকে বড় থেকেছি। এটা (ঝগড়া) আমার চরিত্রের সঙ্গে যায় না। যারা আমাকে চেনে তারা জানে, এটা আমার সঙ্গে যায় না। কিন্তু এটা চরিত্রের বাইরে গিয়েই করেছি।’
আখতার বলছেন, তখনই যদি নিয়াজ তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতেন, তাহলে আর এত কিছু হতো না, ‘ওই ঘটনার পর আমি নোমানকে এবারও ক্ষমা চাইতে বলিনি। আমি শুধু ওই মুহূর্তেই বলেছি। তিনি তখন সেটা করলে, আমি এই অধ্যায় শেষ করে দিতাম। এবং সেটা পাকিস্তান টিভি, পাকিস্তান স্পোর্টস ও এর ব্র্যান্ডকে বাঁচিয়ে দিত। স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস সেখানে বসে আছেন এবং কোটি কোটি ভক্ত সেটা দেখছেন। ভারতও আমাকে সমর্থন দিয়েছে, কেউ আমার দোষ দেখেনি।’