আগের ম্যাচে পাকিস্তান জিতেছিল ৩০৫ রান তাড়া করে। সেখানে ২৭৫ রানে তাদের আটকে রাখার পর নিজেদের ভালো একটা সুযোগই দেখার কথা ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু মোহাম্মদ নওয়াজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নাটকীয় ধসে পড়ার পর সে সুযোগ নেওয়ার ধারেকাছেও যেতে পারল না তারা। মুলতানে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে রান তাড়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে ১৫৫ রানেই থেমে গেছে ক্যারিবীয়রা, পাকিস্তান জিতেছে ১২০ রানে। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করেছে বাবর আজমের দল।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে ক্যাচ দেন শাই হোপ। কাইল মায়ার্স ও শামার ব্রুকসের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অবশ্য সে চাপ সামাল দেয় তারা। শুধু চাপ সামাল দেওয়া নয়, তাদের ৫৪ বলে ৬৭ রানের জুটি ম্যাচ থেকে পাকিস্তানকে ছিটকে দেওয়ারই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। ২৫ বলে ৩৩ রান করা মেয়ার্সকে ফেরান এ ম্যাচ দিয়েই দলে ফেরা মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ধসের শুরুও সেখান থেকেই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মূল ক্ষতিটা অবশ্য করেন বাঁহাতি স্পিনার নওয়াজ। ১০ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন এ বাঁহাতি স্পিনার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দেন একাই। দেশের মাটিতে নওয়াজের চেয়ে কম রান দিয়ে ৪ বা এর বেশি উইকেট এর আগে নিয়েছেন পাকিস্তানের একজন স্পিনার—আব্দুল কাদির। আর নওয়াজের আগে পাকিস্তান বোলার হিসেবে ১০ ওভার বোলিং করেও ২০-এর চেয়ে কম রান দিয়েছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ, ২০১১ সালে।
৭১ রানে ১ উইকেট থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সে সময় পরিণত হয় ১১৭ রানে ৬ উইকেটে। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। শাদাব খান ও ওয়াসিম ভাগ করে নেন ক্যারিবীয়দের শেষ ৪ উইকেট। ৩২.২ ওভারেই গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তানের ইনিংসে ছিল পরিচিত দৃশ্যই। ফখর জামান ব্যর্থ হয়েছেন আবারও, আরেকটি শতরানের জুটি গড়েছেন বাবর ও ইমাম-উল-হক। দুজনের ১২০ রানের জুটি ভেঙেছে ভুল বোঝাবুঝিতে ইমামের রান-আউট হওয়াতে। এর আগে ৭২ বলে ৭২ রান ইমামের।
বাবর অবশ্য এগোচ্ছিলেন রেকর্ড টানা চারটি শতকের দিকেই। আকিল হোসেইনের বলটা লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে তাঁকে ফিরতে হয় ৭৭ রান করেই। আর ২৩ রান করলে ওয়ানডেতে টানা চারটি শতকের কুমার সাঙ্গাকারার রেকর্ড ছুঁতে পারতেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
বাবরের উইকেটের পর অবশ্য খেই হারায় পাকিস্তানও। মোহাম্মদ রিজওয়ান, মোহাম্মদ হারিস ও মোহাম্মদ নওয়াজ—মিডল অর্ডারে তেমন কিছু করতে পারেননি কেউ। আগের দিন ঝড় তোলা খুশদিল শাহও ভুগেছেন, ৩১ বলে করতে পেরেছেন ২২ রান। শাদাব করেছেন ২৩ বলে ২২ রান।
শেষ দিকে আফ্রিদির ৬ বলে ১৫ ও ওয়াসিমের ১৩ বলে ১৭ রানের অপরাজিত ক্যামিওতে ২৭৫ পর্যন্ত যায় পাকিস্তান। ম্যাচের মাঝপথেও যেটিকে যথেষ্টর চেয়ে কমই মনে হচ্ছিল। তবে নওয়াজ যে ভেবেছিলেন অন্য কিছু!