দ্রাবিড়ের আক্ষেপ, এত ক্রিকেট হয়, ভুল শোধরানোর সময় কোথায়
এজবাস্টনে ইংল্যান্ডকে ৩৭৮ রানের লক্ষ্য দিয়েও ৭ উইকেটে হেরেছে ভারত। কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের কাছে এ হার প্রচণ্ড হতাশার। তিনি মনে করেন, টেস্ট ম্যাচের ফল নিজেদের দিকে টেনে আনার ব্যাপারে ভারতের দুর্বলতা রয়েই যাচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও একইভাবে জয়ের কাছাকাছি থেকে টেস্ট হারতে হয়েছিল ভারতকে।
আপাতত এই ম্যাচের পর ‘ফিনিশিং’ দুর্বলতা নিয়েই কাজ করতে চান দ্রাবিড়, ‘এই হার আমাদের জন্য প্রচণ্ড হতাশার। জয়ের অবস্থান থেকে হার। কিছুদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকায়ও আমরা দুটি সুযোগ হারিয়েছিলাম। আমার কাছে মনে হচ্ছে, এই জায়গায় আমাদের উন্নতির প্রয়োজন আছে। ফিনিশিং নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে।’
টেস্ট ক্রিকেটে এ মুহূর্তে অন্যতম সেরা দলই বলা চলে ভারতকে। সেটির প্রমাণ ভারত রেখেছে সাম্প্রতিক অতীতে। কিন্তু কিছুদিন হলো ফিনিশিংয়ে দুর্বলতা প্রকট মনে হচ্ছে দ্রাবিড়ের কাছে, ‘আমরা কয়েক বছর ধরেই টেস্টে ধারাবাহিকভাবে ভালো করে আসছি। প্রতিপক্ষের উইকেট নিচ্ছি, ব্যাটসম্যানরা রান করছে, আমরা টেস্ট জিতছি। কিন্তু সম্প্রতি, নির্দিষ্ট করে ধরলে শেষ কয়েক মাস আমরা সেই পারফরম্যান্স থেকে অনেকটাই পিছিয়ে আছি।’
ঠিক কী কারণে টেস্টে ‘শক্তিশালী’ ভারতীয় দলের এই সমস্যা হচ্ছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করছেন ভারতীয় দলের কোচ, ‘নানা কারণে এটি হতে পারে। হতে পারে আমরা সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারিনি। হতে পারে ক্রিকেটাররা মানদণ্ড অনুযায়ী ফিট নয়। এ কারণে যে মানদণ্ড নিজেরাই তৈরি করেছি, সেটি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছি।’
এজবাস্টনে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যর্থতাই শেষ পর্যন্ত প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে ভারতের জন্য। ১৯০/৪ থেকে ২৪৫ রানে গুটিয়ে যাওয়া ভারত যদিও ইংল্যান্ডের সামনে ৩৭৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল, কিন্তু সেটি তো ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে যথেষ্ট হয়নি। জো রুট আর জনি বেয়ারস্টো তো রীতিমতো ছেলেখেলা করেই রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ জিতিয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানের ভালো লিড পেয়েও দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে ভারত ইংল্যান্ডের লক্ষ্যকে আরও কঠিন করতে পারেনি। এ ব্যাপারে দ্রাবিড়ের সরল স্বীকারোক্তি, ‘দ্বিতীয় ইনিংসে আমরা মোটেও ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি।’
বিদেশের মাটিতে টেস্টের তৃতীয় ইনিংসে ভারতের ব্যাটিংটা নিয়ে যথেষ্টই চিন্তিত তিনি, ‘আপনারা যদি বিদেশের মাটিতে টেস্টে ভারতের তৃতীয় ইনিংসে ব্যাটিং বিশ্লেষণ করেন, তাহলে দেখবেন, আমরা এই জায়গায় ভালো করছি না। প্রতিক্ষেত্রেই আমরা টেস্টের শুরুটা ভালো করেছি, কিন্তু শেষটা ভালো করতে পারিনি।’
মাত্রাতিরিক্ত ক্রিকেটও ফলে প্রভাব রাখছে বলে মত দ্রাবিড়ের। এজবাস্টন টেস্ট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই তারকার আক্ষেপ অতিমাত্রায় ক্রিকেট নিয়েও। তিনি মনে করেন, এখন ক্রিকেট এত বেশি হয় যে ভুলভ্রান্তি নিয়ে কাজ করার, সেগুলো শুধরে নেওয়ার সময়টুকুও পাওয়া যায় না, ‘ভুলভ্রান্তি পর্যালোচনা করব এখন। প্রতিটি ম্যাচ থেকেই শিক্ষণীয় অনেক কিছুই থাকে। কিন্তু ইদানীং এত ক্রিকেট হচ্ছে, সবকিছু পর্যালোচনা করে ভুলভ্রান্তি শুধরে নেওয়ার সময়ই তো তেমন পাওয়া যায় না।’