লিটন দাসকে একটু আগেই ব্যাট হাতে মাঠে নেমে যেতে হলো। নামতে হলো তামিম ইকবালের জায়গায়। তামিম দুর্দান্ত এক শতক পেয়েছেন, খেলছিলেনও দারুণ। কিন্তু পানিশূন্যতার কারণে হাতের পেশিতে টান লাগায় চা বিরতির পর আর মাঠে নামতে পারলেন না তিনি। তাঁর চমৎকার ইনিংসটি থেমে রইল ১৩২ রানেই।
লিটন এসে অবশ্য তামিমের অসম্পূর্ণ কাজটাই এগিয়ে নিয়েছেন মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে। দ্বিতীয় সেশনে দলীয় ১৭২ আর ১৮৪ রানের মাথায় নাজমুল হোসেন আর অধিনায়ক মুমিনুল হকের ফেরা দলের ওপর হঠাৎ চাপ তৈরি করলেও সেটি খুব ভালোভাবে সামলেছেন মুশফিক আর লিটন। চা বিরতির পর এ দুজন ৯৮ রানের জুটি গড়ে ৩০০ রান পার করে দিয়েছেন। অর্ধশতক পেয়েছেন দুজনই। চট্টগ্রাম টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩১৮। মুশফিক অপরাজিত আছেন ১৩৪ বলে ৫৩ করে। লিটনের সংগ্রহ ১১৪ বলে ৫৪। এখনো ৭৯ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
গতকাল দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল বিনা উইকেটে ৭৬। শুরুতে কিছুটা স্নায়ুচাপে থাকলেও দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল আর মাহমুদুল হাসান একটা ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন। আজ তৃতীয় দিন সকালে তামিম–মাহমুদুল নিজেদের জুটিটা বড় করেছেন। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম টেস্টে বাংলাদেশর উদ্বোধনী জুটিতে শতরান পেরোনো সংগ্রহ এসেছে। প্রথম সেশনে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল বিনা উইকেটে ১৫৭। এই সেশনে ফিফটি পূরণ করেন তামিম, মাহমুদুল দুজনই।
প্রথম সেশনে লঙ্কান বোলারদের আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই খেলেছেন দুজন। মাহমুদুল অবশ্য দারুণ এক সুযোগ দিয়েছিলেন আসিত ফার্নান্দোর বলে। তাঁর পুল ফাইন লেগে সোজা চলে গিয়েছিল লাসিথ এম্বুলদেনিয়ার হাতে। কিন্তু সেটি ধরতে পারেননি লঙ্কান স্পিনার।
দ্বিতীয় সেশনে তামিম শতরান পেয়েছেন। ১৬২ বলে শতক পূর্ণ করে প্রথম সেশনে আরও একটি মাইলফলক পেরিয়েছিলেন তামিম। ৮৪ রান করেই বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান টেস্টে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহে পেছনে ফেলেছিলেন মুশফিকুর রহিমকে। অবশ্য দিনের শেষে আবারও মুশফিক ফিরে পেয়েছেন নিজের আসন। টেস্টে সর্বোচ্চ রানে তামিম–মুশফিকের নিজেদের লড়াইটা দারুণ জমে উঠেছে। একদিন তামিম এগিয়ে যাচ্ছেন, তো অন্যদিন মুশফিক। আজ চট্টগ্রামে একই দিনে টেস্টের সর্বোচ্চ রানে দুইবার বদল দেখল বাংলাদেশ।
তামিম তাঁর অসমাপ্ত ইনিংসে করেছেন ১৩২। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর এই প্রথম টেস্টে শতক পেলেন তিনি। তবে তাঁর ইনিংসটি সুযোগহীন ছিল না। শতরান করেও স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখানেও ব্যর্থ লঙ্কান ফিল্ডাররা। ২১৭ বলের ইনিংসে ছিল ১৫টি চার। দ্বিতীয় সেশনে ফেরা মাহমুদুল ১৪২ বলে ৯টি চারে করেছেন ৫৮ রান।
শ্রীলঙ্কা প্রথম সাফল্য পায় মাহমুদুলকে ফিরিয়েই। তবে তাঁদের জন্য আশীর্ব্দ হয়ে এসেছেন কাসুন রাজিথা। দ্বিতীয় দিন নিজেদের ইনিংসের শেষ দিকে শরীফুল ইসলামের বাউন্সারে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন বিশ্ব ফার্নান্দো। ব্যাটিংও করেছেন এরপর। আজ সকালে বোলিং করলেও তাঁকে সতর্কতা হিসেবে হাসপাতালে পাঠিয়ে কনকাশন বদলি নামানো হয় রাজিথাকে। এই রাজিথাই দুটি সাফল্য দেন শ্রীলঙ্কাকে। প্রথমে নিরোশান ডিকভেলার ক্যাচে ফেরান নাজমুল হোসেনকে। পরে তাঁর দুর্দান্ত এক বলে বোল্ড হন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক।