তুষার ইমরানদের বিজ্ঞাপন হতে পারবেন রাব্বি?
>ঘরোয়া ক্রিকেটে এক যুগের বেশি সময় খেলার পর জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন ফজলে রাব্বী। বামহাতি ব্যাটসম্যানের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দিয়েছেন নির্বাচকেরা। রাব্বির সামনে সুযোগ তুষার ইমরানদের বিজ্ঞাপন হওয়া। যাঁরা দীর্ঘদিন ভালো খেলে যাচ্ছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে; কিন্তু সহজেই সুযোগ মিলছে না জাতীয় দলে।
১৪ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। ‘ক্রিকেটে কিছু হবে না’, এ ভাবনায় একটা সময় আশাও হারিয়ে ফেলেছিলেন। ভাগ্যিস ক্রিকেট ছাড়েননি ফজলে রাব্বি! নইলে এই পুরস্কারটা কি পেতেন? ৩০ বছর বয়সে সুযোগ পেলেন জাতীয় দলে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ দলের চমক হলেন!
একটু বয়স হলেই ‘জাতীয় দলের জন্য উপযুক্ত নন’ কথাটা যে সত্য নয়, নির্বাচকেরা সেটি মাঝেমধ্যে রাব্বিদের মতো খেলোয়াড়দের সুযোগ দিয়ে প্রমাণ করেন। যেমনটা তাঁরা করেছেন নাজমুল ইসলাম, সানজামুল ইসলাম, সাকলাইন সজীবদের সুযোগ দিয়ে। ‘তরুণ খেলোয়াড় ছাড়া সুযোগ নেই’—নির্বাচকেরা সব সময় শুধু এ ভাবনা নিয়ে এগিয়েছেন সেটি অবশ্যই নয়। নইলে একটু বেশি বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ পেতেন না শামসুর রহমান, মার্শাল আইয়ুব, জিয়াউর রহমান, আরাফাত সানিরাও। এবার রাব্বিকে সুযোগ দেওয়ার কারণটা হচ্ছে, যেহেতু সাকিব আল হাসান-তামিম ইকবাল নেই, দলটা একেবারে যেন তারুণ্যনির্ভর না হয়ে পড়ে, অভিজ্ঞতা-তারুণ্যের মিশ্রণ চেয়েছেন নির্বাচকেরা।
হাবিবুল বাশার আজ দুপুরে সংবাদমাধ্যমকে তাই বলেছেন, ‘আমাদের দুজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় নেই, তাই মিশ্রণটা খুব দরকার ছিল। আর আমাদের দেশে এখন একটু একটু পরিবর্তন হচ্ছে। (ঘরোয়া ক্রিকেটে) যারা সিনিয়র আছে তাদের খেলার সুযোগটা কম থাকত। এখন অনেক প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা হচ্ছে, ভালো করছে। ফিটনেসের মান অনেক বেড়েছে। আগে ৩০ বছরের পর একটা ছেলের ফিটনেস ধরে রাখাও কঠিন ছিল। সেটা থেকে এখন বেরিয়ে আসছে সবাই। অভিজ্ঞতা আসলে কেনা যায় না। সেটা অর্জন করতে হয়। একটা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে দলে নেওয়া কিন্তু সহজ। একজন তরুণ ক্রিকেটারকে দলে নিতে বেশি ঝুঁকি নিতে হয়। দুটিই আমাদের চিন্তা করা উচিত, আমরা চিন্তা করিও। আমরা চাই না সব অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এক সঙ্গে চলে যায়, পুরো দলটা তারুণ্যনির্ভর হয়ে যাক। সব সময় মিশ্রণ থাকা ভালো।’
ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে নির্বাচকেরা সাধারণত তরুণ খেলোয়াড়দের বেশি গুরুত্ব দেন। কিন্তু মাঝে মধ্যে ঘরোয়া ক্রিকেটে লম্বা সময় ভালো খেলা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দেরও জাতীয় দলে সুযোগ দেন। কিন্তু তাঁরা কতটা আস্থার প্রতিদান দিতে পেরেছেন? শামসুর, মার্শাল, জিয়া, সানি, সাকলাইন—কেউই দলে থিতু হতে পারেননি। এমনকি লম্বা বিরতির পর ফেরা দুই বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাক- মোশাররফ হোসেনও দলে জায়গা পোক্ত করতে পারেননি। এবার রাব্বি পারবেন তুষার ইমরানদের বিজ্ঞাপন হতে?
হঠাৎ তুষারের কথা আসছে কারণ, দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলে যাচ্ছেন, অথচ জাতীয় দলে সুযোগ মিলছে না। নির্বাচকেরা তুষারদের মতো ব্যাটসম্যানদের নিতে দ্বিধায় ভোগেন। এ দ্বিধা কাটিয়ে তোলার সুবর্ণ সুযোগ রাব্বির সামনে। নির্বাচক হাবিবুল তাঁকে নিয়ে বেশ আশাবাদী, ‘ওর ব্যাটিংটা এখন অনেক বদলে গেছে। আগে আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করত। এখন দেখছি (আয়ারল্যান্ড সফরে), সে দলের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যাটিং করে থাকে। সে এখন একজন পরিণত ব্যাটসম্যান। একজন ভালো ফিল্ডার, সঙ্গে স্পিন বল করতে পারে। সব মিলিয়ে আমাদের জন্য প্যাকেজ বলা চলে।’
তাঁর প্রতি এই যে আস্থা, এর প্রতিদান দেওয়াই হবে জিম্বাবুয়ে সিরিজে রাব্বির মূল কাজ।