তিন ম্যাচ দেখেই হার্দিককে বিশ্বকাপের নিশ্চয়তা দিয়েছিলেন ধোনি
আইপিএল শেষ হওয়ার পর থেকেই চলছে নতুন এক আলোচনা। গুজরাট টাইটানসকে চ্যাম্পিয়ন করা হার্দিক পান্ডিয়াই নাকি ভারতের নতুন ধোনি। ভবিষ্যৎ অধিনায়কের খোঁজে লোকেশ রাহুল, ঋষভ পন্তের পর তৃতীয় সংযোজন পান্ডিয়া। খোঁজ অবশ্য নতুন অধিনায়কের না বলে নতুন ধোনির—বলাই ভালো। কারণ, অধিনায়ক হিসেবে ধোনির সাফল্যের রেকর্ডের পুনরাবৃত্তিই দেখতে চায় ভারত।
ধোনি কেন ধোনি হয়েছেন, কেন অন্য সবার চেয়ে আলাদা, সেটা ‘নতুন ধোনি’ই জানিয়েছেন আবার। হার্দিক পান্ডিয়ার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শুরুটা প্রত্যাশিত ছিল না। কিন্তু ধোনি তাঁর মধ্যে ঠিকই সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছিলেন। এ কারণেই হার্দিকের মাত্র তৃতীয় ম্যাচ শেষেই বলে দিয়েছিলেন, জায়গা নিয়ে চিন্তা না করতে, বিশ্বকাপে তাঁর জায়গা পাকা।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক পান্ডিয়ার। ৬৩টি ওয়ানডে ও ৫৪টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ১১টি টেস্টও খেলেছেন। পেস বোলিং অলরাউন্ডারের জন্য হন্যে হয়ে ওঠা ভারত বহুদিন পর একজন পরিপূর্ণ অলরাউন্ডার পেয়েছিল। কিন্তু ধোনি না থাকলে হয়তো ক্যারিয়ারটা থমকে যেতে পারত শুরুতেই।
আইপিএলের কল্যাণে পেস বোলিং অলরাউন্ডারের দেখা মাঝেমধ্যেই পায় ভারত। কিন্তু জাতীয় দলে থিতু হতে পারেন না অধিকাংশ। পান্ডিয়া এ দিক থেকে ব্যতিক্রম। দলে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হয়ে উঠেছেন যেন, চোট থেকে ফিরে বোলিং করতে না পারার পরও তাঁকে দলে রেখেছে ভারত, ২০২১ বিশ্বকাপে খেলিয়েছে।
২৮ বছর বয়সী অলরাউন্ডার এ কারণেই কৃতজ্ঞ ধোনির কাছে। ২০১৬ সালে তাঁর ওপর ওভাবে আস্থা রাখা হয়েছিল বলেই তো এখন এই অবস্থানে আসতে পেরেছেন।
এসজিটিভির সঙ্গে এক পডকাস্টে নিজের অভিষেকের মুহূর্তের কথা স্মরণ করেছেন এভাবে, ‘যখন ভারত দলে ঢুকলাম, এমন লোকজনকে পেলাম যাঁদের দেখে বড় হয়েছি—সুরেশ রায়না, হরভজন সিং, যুবরাজ সিং, এমএস ধোনি। বিরাট কোহলি, আশিষ নেহরা। আমি ভারতের হয়ে খেলার বহু আগে থেকেই তাঁরা তারকা। আমার জন্য, এখানে আসতে পারাটাই বড় কিছু।’
চারপাশে এত তারকা দেখার আনন্দ, এত রোমাঞ্চ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ওভারেই উবে যেতে বসেছিল পান্ডিয়ার, ‘আমার ধারণা, আমিই প্রথম ক্রিকেটার যে নিজের প্রথম ওভারে ২১ রান (১৯ রান) দিয়েছে। সত্যি বলছি, ভেবেছিলাম, ঠিক আছে, এটাই হয়তো আমার শেষ ওভার। কিন্তু আমার ভাগ্য ভালো মাহি ভাইয়ের নেতৃত্বে খেলেছি, যিনি আমার ওপর অনেক আস্থা রেখেছেন এ কারণেই আমি এই অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি।’
২০১৬ ছিল বিশ্বকাপের বছর। সে বছরই অভিষিক্ত হার্দিক মনে মনে বিশ্বকাপের আশা পুষে রাখলেও বাজে শুরু পর কিছুটা হতোদ্যম হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু ধোনি বর্তমান পারফরম্যান্স নয়, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাতেই নজর রেখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের তিন ম্যাচ পরই মাহি ভাই বললেন, তুমি বিশ্বকাপ দলে থাকবে। আমার জন্য বিশ্বকাপে খেলা কিংবা তিন ম্যাচ পরই সেটা জেনে যাওয়া (দারুণ অনুভূতি)! ওই ম্যাচে ব্যাট করিনি, কিন্তু তিনি আমাকে বলেছেন, আমি নাকি নিজেকে তুলে ধরতে পেরেছি। স্বপ্ন পূরণ হয়েছিল সেদিন আমার।’
বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়ে পান্ডিয়া কী করেছিলেন, সেটা বাংলাদেশের সমর্থকদের ভালোই মনে আছে। শেষ ৩ বলে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২ রান নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। সেদিন ওই মুহূর্তে বোলিংয়ের ভয়ংকর চাপটা সামলেছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তখনো তিন মাস পূর্ণ না করা পান্ডিয়াই।