ডিআরএস প্রযুক্তি নিয়েই প্রশ্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজের!
>আগামীকাল সকাল ছয়টায় সিরিজের শেষ ম্যাচটি হয়ে উঠল শিরোপা নির্ধারণী। অলিখিত ফাইনাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আত্মবিশ্বাসী, সিরিজটা তারাই জিতবে।
শচীন টেন্ডুলকার শুনলে হয়তো খুশি হবেন। ডিআরএস প্রযুক্তি যখন প্রথম দিকে ক্রিকেটে চালু করা হলো, টেন্ডুলকার এর বিপক্ষে ছিলেন। তাঁর মূল আপত্তি ছিল বল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি নিয়ে। টেন্ডুলকার মনে করতেন, বল কোথায় পড়ে কোথায় যাচ্ছে, এটি শতভাগ নির্ভুলভাবে বলতে পারে না বল ট্র্যাকিং। কারণ, বলের গতিপথ শুধু জ্যামিতির রেখা দিয়ে মাপলে ভুল। ধারণা করা হয়, ভারত যে দীর্ঘদিন ডিআরএস চালু করতে রাজি হয়নি, এর পেছনে টেন্ডুলকারের প্রভাব আছে।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১২ রানে হেরে যাওয়ার পর আজ কার্লোস বাফ্রেট যা বললেন, সেটি অনেকটা টেন্ডুলকারেরই বক্তব্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক মনে করেন, দিনেশ রামদিনের আউটটা ম্যাচের ফলে অনেক বড় ভূমিকা রেখেছে। আর এই আউট নিয়ে প্রশ্ন আছে ব্রাফেটের। অর্থাৎ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন বল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি নিয়েই।
রুবেল হোসেনের করা ইনিংসের অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশের এলবিডব্লুর জোরালো আবেদন নাকচ করে দেন আম্পায়ার। বাংলাদেশ তখন রিভিউ চায়। সাধারণত আম্পায়ার এলবিডব্লু না দিলে রিভিউ নিতে ঝুঁকি থাকে। অনেক সময় বল ট্র্যাকিংয়ের ফলাফলে বল স্টাম্পে লাগলেও আম্পায়ারস কল বা মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের কারণে রিভিউ নাকচ হয়ে যায়। বাংলাদেশ তবু ঝুঁকিটা নিয়েছিল। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায়, অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা বলটি শেষ পর্যন্ত ঠিকই স্টাম্পে গিয়ে লাগত। বল ৫০ শতাংশের বেশির ভাগটাই স্টাম্পে লাগত বলে আম্পায়ারকে তাঁর সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়েছে। ৫৮ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ব্রাফেট ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘জানি না এ কথা বললে আবার পরে আমার কোনো সমস্যা হবে কি না (আচরণবিধি ভঙ্গ), তবু বলব, রামদিনের ডিআরএসের ফলাফলটি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। রামদিন আমাদের ইনিংসের মূল ভারসাম্য ছিল। অবশ্য এমন এমন ঘটনা ঘটতেই পারে।’
তামিম ইকবালের ৪৪ বলে ৭৪ আর সাকিব আল হাসানের ৩৮ বলে ৬০ রানের ঝোড়ো দুটি ইনিংসে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১৭১ রান তোলে। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯ উইকেটে ১৫৯ রানে আটকে যায়। ব্রাফেট মনে করেন, তাঁর দল ফিল্ডিংয়ে আরও বেশি তৎপর হলে এত বেশি রান তুলতে পারত না বাংলাদেশ, ‘টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল। শুরুতে কয়েক উইকেট তুলে নিয়ে ওদের চাপে ফেলেও দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু ফিল্ডিংয়ে আজ আমাদের গা-ছাড়া ভাব ছিল। সেখানেই আমরা ম্যাচটা হেরেছি। খেলার মাঝবিরতিতে আমাদের মাথায় হয়তো এই ভাবনা ছিল, রানটা কম হলে আমরা তাড়া করতে পারতাম। গা-ছাড়া ফিল্ডিং এখানেই আমাদের ভুগিয়েছে। এখানে আমাদের উন্নতি করতে হবে।’
আগামীকাল সকাল ছয়টার ম্যাচটা তাই হয়ে উঠল অলিখিত ফাইনাল। ওয়ানডে সিরিজটিও তা-ই ছিল। যেখানে বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ জিতেছে ২-১-এ। ব্রাফেট আশাবাদী, তাঁর দল শেষ ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে, ‘আমার যে ফিরে আসব, এ ব্যাপারে আমি পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী। কখনো কখনো আপনার খারাপ দিন যাবেই। প্রথম ম্যাচে আমরা যেভাবে খেলেছি, তা খেলতে পারল সিরিজ আমাদেরই।’