ডট বলে বড্ড আপত্তি মুশফিকের
বাংলাদেশের মিডল অর্ডারটা তিনিই সামলান। বিশ্বের অনেক ব্যাটসম্যান সংস্করণ বুঝে জায়গা অদল-বদল করেন। কিন্তু মুশফিকুর রহিম তিন সংস্করণেই বাংলাদেশ ইনিংসের মধ্যভাগটা সামাল দেন।
গত পাঁচ বছর ধরে তিন সংস্করণেই তাঁর সাফল্য সেটা সঠিক বলে প্রমাণ করছে। তাই যে কোনো সংস্করণের রেকর্ড ঘাটতে গেলেই মুশফিকুর রহিমের নামটা খুঁজে পাওয়া যায় ইদানীং।
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে এই সংস্করণে স্পিনারের বিপক্ষে সেরা ব্যাটসম্যান কারা, সে আলোচনা চলছিল। স্পিনারদের বিপক্ষে কারা স্ট্রাইক রোটেট করতে পারেন,দ্রুত রান তুলতে পারেন আর বেশি রান তুলতে পারেন, সেটা খোঁজা হচ্ছিল। দলের রানের চাকা ঘোরানোর কাজটা ধরে রাখতে চাইলে স্ট্রাইক বদলানোর চেয়ে ভালো উপায় নেই। আর সেটা করতে চাইল যত কম ডট বল দেওয়া যায়, তত ভালো। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে সবচেয়ে কম ডট বল খেলা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় আছেন মুশফিক।
স্পিনারদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ৫০০ বল খেলেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের নিয়েই তালিকা করা হয়েছে। সেখানে শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছেন মুশফিক। তাঁর চেয়ে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন যারা, তাঁদের নাম দেখলেই বোঝা যায় টি-টোয়েন্টিতে ডট বল কম খেলাটা কত গুরুত্বপূর্ণ—বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, বাবর আজম।
স্পিন সামাল দেওয়ার জন্য সব ধরনের অস্ত্র আছে মুশফিকের। কাভার ও মিড উইকেটের ফাঁকা জায়গায় দারুণ সফল মুশফিক। কাভারের ওপর দিয়ে উড়িয়ে খেলা লফটেড কাভার ড্রাইভটি মুশফিকের প্রিয়। স্লগ সুইপে মিড উইকেট বাউন্ডারি ছাড়া করায় তো মুশফিকের সুনাম আছেই। যে কোনো স্পিনারকে এই দুই জায়গায় খেললে খেই হারাতে বাধ্য তিনি।
সব ধরনের সুইপ শটে পারদর্শী মুশফিক। সুইপ, রিভার্স সুইপ, প্যাডেল সুইপ, ল্যাপ সুইপ থাকায় স্পিনারদের বিপক্ষে রান বের করায় জায়গার অভাব নেই মুশফিকের। পয়েন্ট, থার্ড ম্যান ওপরে থাকলে যে কোনো সময় রিভার্স সুইপে বাউন্ডারি খুঁজে নেওয়ায় সক্ষম মুশফিক। ফাইন লেগ ওপরে থাকলেও আছে সেই একই ভীতি। আর পায়ের কাজে বল মিড অন, মিড অফ ছাড়া করতেও দক্ষ তিনি। কিপারের মাথার ওপর দিয়ে স্কুপও খেলেন বলের মেধা বুঝে।
গত বিপিএলের সময় খুলনা টাইগার্সের ব্যাটিং কোচ জেমস ফস্টার সে জন্যই মুশফিককে বলেছিলেন ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান, ‘মুশি খুবই উঁচুমানের খেলোয়াড়। পরিস্থিতি এবং কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে। তার হাতে অনেক শট আছে। খেলতে পারে উইকেটের চারপাশেই। সে ৩৬০ ডিগ্রি খেলোয়াড়। গত কয়েক বছর খুলনা টাইটানসে যখন ছিলাম তখন তাকে বল করার পরিকল্পনা করা ছিল ভীষণ অসুবিধার। শক্তি রাখার পাশাপাশি টাচেও খেলতে পারে। সে একটা পূর্ণাঙ্গ প্যাকেজ।’
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে ডট বল খেলার হার:
স্যাম বিলিংস - ২৪%
বিরাট কোহলি - ২৫%
এবি ডি ভিলিয়ার্স - ২৬%
করুণ নায়ার - ২৬%
বাবর আজম - ২৬%
কেএল রাহুল - ২৬%
স্টিভ স্মিথ - ২৮%
রাসি ফন ডার ডুসেন - ২৮%
মুশফিকুর রহিম - ২৯%