টানা তিন উইকেট পেতে ছয় বছরের অপেক্ষা
বগুড়ায় দুই ঢাকার ম্যাচটি শেষ হয়ে গেছে আগের দিনই। বরিশাল ও কক্সবাজারে দুই ম্যাচে তো প্রথম তিন দিনে একটি বলও হয়নি। জাতীয় ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ডের শেষ দিনে আকর্ষণ যেটুকু ছিল, তা শুধু একটি ম্যাচ ঘিরেই। রংপুরে সেই ম্যাচটি আবার প্রথম স্তরের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দল রাজশাহী ও রংপুরের। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে, রাজশাহী ধরে রেখেছে শীর্ষস্থান। তবে দিনটাকে একদম ম্যাড়মেড়ে হতে দেননি রাজশাহীর দেলোয়ার হোসেন। হ্যাটট্রিক করেছেন ৩৩ বছর বয়সী এই পেসার। একটি হ্যাটট্রিকের জন্য জাতীয় ক্রিকেট লিগের ছয় মৌসুমের অপেক্ষারও অবসান হলো তাতে।
জাতীয় লিগ ইতিহাসের নবম হ্যাটট্রিকটি দেলোয়ার করেছেন রংপুরের দ্বিতীয় ইনিংসে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম উইকেট তুলে নিয়ে। ইনিংসের ৩৬তম ওভারের চতুর্থ বলে নাঈম ইসলামকে ফরহাদ রেজার ক্যাচ বানিয়ে শুরু। পঞ্চম বলে বোল্ড রংপুর অধিনায়ক সাজেদুল ইসলাম, পরের বলে বদলি উইকেটকিপার হামিদুল ইসলামের হাতে ক্যাচ হলেন সানজিৎ সাহা।
দারুণ এক কীর্তি, কিন্তু ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বাসে ভেসে যাওয়ার বদলে আশ্চর্য রকম শান্ত দেলোয়ারের কণ্ঠ। মুঠোফোনে জানালেন কী পরিস্থিতিতে হ্যাটট্রিকটা পেলেন, ‘দ্রুত রান তুলে ওরা (রংপুর) ইনিংস ঘোষণা করতে চাইছিল। আমরা চেয়েছি রান না দিতে। রান আটকাতে গিয়েই হ্যাটট্রিকটা পেয়ে গেলাম। ভালো তো লাগছেই, তবে এটা বলতেই হবে কপালে না থাকলে হ্যাটট্রিক হয় না।’
দেলোয়ার টানা চতুর্থ বলে উইকেট পেতেন কি না কে জানে! রংপুর তাঁকে সে সুযোগই দেয়নি। দেলোয়ার হ্যাটট্রিক পেতেই ১৮৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় রংপুর। হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট দেলোয়ারের, বাকি ৪ উইকেট পেয়েছেন সানজামুল ইসলাম। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১ উইকেট এই বাঁহাতি স্পিনারের। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে চতুর্থবার ম্যাচে ১০ উইকেট পেলেন সানজামুল।
ম্যাচ জিততে ৬০ ওভারে ২৭৫ রান করতে হতো রাজশাহীকে। ১২ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর সেই চেষ্টা আর করেনি দলটি। রাজশাহী আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৫ ওভারে ১৩৩ রান তোলার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল। তার আগেই অবশ্য ফিফটি পেয়ে গেছেন রাজশাহীর সাব্বির হোসেন ও ফরহাদ হোসেন।
তিন দিন পর কাল কক্সবাজারে কাল চট্টগ্রাম ও সিলেট ম্যাচে বল গড়িয়েছে মাঠে। দুপুরের পর মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছে দুই দল। সিলেট ১৩ ওভারে ১ উইকেটে ২৬ রান তোলার পরই ড্র মেনে নেয় দুই দল। বরিশালে বরিশাল-খুলনার ম্যাচে চার দিনে একটি বলও না হওয়ায় পরিত্যক্ত হয়েছে। দুই ম্যাচের চারটি দলই পাবে ২ করে পয়েন্ট।
এবারের লিগে কারা চ্যাম্পিয়ন হবে, কারা উঠবে প্রথম স্তরে, কারাই বা নেমে যাবে দ্বিতীয় স্তরে, জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে শেষ রাউন্ড পর্যন্ত। যে রাউন্ডটি শুরু ৫ নভেম্বর। শিরোপা লড়াইয়ে আছে রাজশাহী ও রংপুর। দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে ওঠার সুযোগ কাগজে-কলমে আছে চারটি দলেরই। তবে সম্ভাবনা বেশি দুই ঢাকার।