বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রতি মুহূর্তের আপডেট
একই সঙ্গে দুটি অনন্য স্বাদ পাচ্ছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এই প্রথম দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। এবং এই ফরম্যাটে এক সঙ্গে এক সিরিজে পাঁচটি ম্যাচ খেলাও এই প্রথম বাংলাদেশের।
বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রতি মুহূর্তের আপডেটে সবাইকে স্বাগতম।
টসে হেরে ব্যাটিং বাংলাদেশ
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টসে জিতেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড। ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
বাংলাদেশ একাদশ
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি থেকে আছে দুটি পরিবর্তন। দলে এসেছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান। বাদ পড়েছেন তাসকিন আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম, সাকিব আল হাসান, নুরুল হাসান (উইকেটকিপার), আফিফ হোসেন, শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, শরীফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ
অস্ট্রেলিয়া একাদশ
অ্যালেক্স ক্যারি, জশ ফিলিপি, মিচেল মার্শ, ময়জেস হেনরিকস, ম্যাথু ওয়েড (অধিনায়ক, উইকেটকিপার), অ্যাশটন টার্নার, অ্যাশটন অ্যাগার, মিচেল স্টার্ক, অ্যান্ড্রু টায়, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজলউড
যে ম্যাচের দেখা মেলে না সহজে
প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির দ্বিপক্ষীয় সিরিজে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া। পড়ুন দুই দলের লড়াইয়ের 'ইতিহাস'।
ছয়ের আগে-পরে পাঁচ ডটে শুরু
প্রথম বলে মুভমেন্টের আভাস ছিল মিচেল স্টার্কের বলে। তবে এরপর ফুললেংথে গিয়েছিলেন তিনি। মোহাম্মদ নাঈম সেটিতে ফ্লিক করে মেরেছেন ছয়। অবশ্য ওভারে স্কোরিং শট ওই একটিই। প্রথম ওভার শেষেও বাংলাদেশের স্কোর ৬ রান।
আলোচনায় উইকেট
মিরপুরের উইকেট কেমন হবে, সেটা নিয়ে একরকম রহস্যই ছিল। রাসেল ডমিঙ্গো চেয়েছিলেন ‘ভালো উইকেট’। খোলাসা করে কিছু বলেননি মাহমুদউল্লাহ। বিপরীতে টার্ন আশা করেছিলেন অ্যাশটন টার্নাররা। প্রথম দুই ওভারে মিলে মুভমেন্টের আভাস। জশ হ্যাজউলউডের প্রথম ওভারে ভুগেছেন সৌম্য সরকার, এ ওভারে উঠেছে মাত্র ৩ রান।
তৃতীয় ওভারেই জাম্পা
স্টার্ক-হ্যাজলউডের পরই অ্যাডাম জাম্পাকে আক্রমণে এনেছেন ম্যাথু ওয়েড। শেষ বলে লং-হপে চার মেরেছেন নাঈম। জাম্পা গুগলির চেষ্টা করেছে, তবে সে অর্থে টার্নের দেখা পাননি এখনও।
ফিরলেন সৌম্য
নড়বড়ে ছিলেন শুরু থেকেই। সৌম্য সরকারের আউটের ধরনটাও অমনই। লেগস্টাম্পের বাইরে সরে গিয়ে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন সৌম্য। তবে তাঁকে অনুসরণ করে শরীর বরাবর শর্ট বল করেছিলেন জশ হ্যাজলউড। সেটিতেই ব্যাট চালালেন সৌম্য, বলটা তাঁর ব্যাটে লেগে খুঁজে নিল স্টাম্প। ১৫ রানে প্রথম উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সিরিজের সেরা খেলোয়াড় সৌম্য ফিরলেন আগেভাগেই।
পাওয়ার প্লে-তে বাংলাদেশের ৩৩
প্রথম ওভারে স্টার্ককে ছয় মেরেছিলেন, পঞ্চম ওভারে নাঈম মেরেছিলেন আরেকটি। স্লটে পেয়েছিলেন, তুলে মারতে ভুল হয়নি তাঁর। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে এসেছিলেন অ্যান্ড্রু টাই। সে ওভারে উঠেছে ৭ রান। প্রথম ৬ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৩৩ রান। ২৪ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত নাঈম, তাঁর সঙ্গী সাকিব।
সৌম্যর পর নেই নাঈমও
শুরুটা ভালো করেছিলেন, তবে টিকতে পারলেন না নাঈম। অ্যাডাম জাম্পাকে আগে থেকেই করতে গিয়েছিলেন রিভার্স সুইপ। জাম্পা গিয়েছেন ফুললেংথে, সেটির নাগালই পায়নি নাঈমের ব্যাট। তিনি খেলেছেন ২৯ বল, তবে ৩০ রানের বেশী করতে পারেননি। ৭ম ওভারে এসে দ্বিতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ, চাপটাও বাড়ল আরেকটু।
আক্রমণের চেষ্টা সাকিবের
প্রথমে তুলে মেরেছিলেন, লং-অনের ফিল্ডারের সুযোগই ছিল না। এরপর আবারও তুলে মারতে গিয়ে কানায় লেগেছিল ব্যাটের, তবে সাকিব ঠিকই পেয়েছেন ওভারের দ্বিতীয় বাউন্ডারি। অ্যাডাম জাম্পার এ ওভারে উঠেছে ১১ রান, ইনিংসে এখন পর্যন্ত যা সর্বোচ্চ।
জীবন পেলেন মাহমুদউল্লাহ
অ্যাগারের বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে কানায় লেগেছিল মাহমুদউল্লাহর। তবে স্লিপে অ্যাশটন টার্নার রাখতে পারেননি ক্যাচটা। ৫ রানে জীবন পেয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এখন পর্যন্ত তাঁকেও খুব একটা দৃঢ় মনে হয়নি।
কতোদূর যাবে বাংলাদেশ?
অধিনায়ককে হারাল বাংলাদেশ
৫ রানে জীবন পেয়েছিলেন, হ্যাজলউডকে টেনে একটা ছয়ও মারলেন এ ওভারেই। তবে মাহমুদউল্লাহ টিকলেন না এরপর। সামনে এসে তুলে মারতে গিয়েছিলেন, মিড-অফ থেকে এক্সট্রা কাভারে পেছন দিকে ছুটে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন ময়জেস হেনরিকস। সমানসংখ্যক বলে ২০ রান করে ফিরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ৭৩ রানে ৩য় উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিকরা।
যে দৃশ্য দেখতে চান না ব্যাটসম্যান
পেছনে-ডানে সরেও টাইমিং হলো না নুরুলের
সৌম্য শুধু লেগসাইডে সরেছিলেন। নুরুল পেছনে গেলেন, প্রায় স্টাম্প লাইন বরাবর। সঙ্গে গেলেন অফস্টাম্পের দিকে প্রায় ওয়াইডের সংকেতের দাগের ওপরও। তবে এতকিছু করেও শুধু টাইমিংটাই করতে পারলেন না অ্যান্ড্রু টাইয়ের বলে। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শেষ পর্যন্ত ক্যাচ দিয়েছেন তিনি, ৪ বলে ৩ রান করেই। অন্যদিকে সাকিব টিকে আছেন, তবে এখন পর্যন্ত বড় স্কোরের মতো জুটিটা পাচ্ছে না বাংলাদেশ।
রইল বাকী চার (ওভার)
১৬ ওভার শেষে ৯৬ রান বাংলাদেশের, মানে প্রতি ওভারে এসেছে ৬ করে রান। নিশ্চিতভাবেই শেষ ৪ ওভারে ছোটখাট একটা ঝড় তুলতে হবে এখন, লড়াইয়ে থাকতে গেলে। সাকিবের সঙ্গী আফিফ, ব্যাটিংয়ের অপেক্ষায় আছেন শামীম। দেখা যাবে ঝড়?
চেষ্টা করলেন সাকিব...
সিমের ওপর হাত ঘুরিয়ে বলের গতি কমিয়ে এনেছিলেন জশ হ্যাজলউড। টাইমিংটা তাতেই গড়বড় হয়ে গেল সাকিবের। ব্যাট চালিয়েছিলেন, তবে বলকে স্টাম্পে ডেকে এনেছেন এরপর। ৫ রানে একবার কঠিন একটা ফিরতি ক্যাচ দিয়ে অ্যাশটন অ্যাগারের হাত থেকে বেঁচেছিলেন, আউট হওয়ার আগে সাকিব করলেন ৩৬ রান। ৩৩ বলের ইনিংসে তিনটি চার মেরেছেন, বল বদলাতে পারেননি একবারও।*
*সিরিজের প্রটোকল অনুযায়ী, বল গ্যালারিতে গেলে বদলে ফেলা হবে সেটি।
স্টার্কের ‘ট্রেডমার্ক’ ডেলিভারির শিকার শামীম
এমন ডেলিভারিতে পৃথিবীর কোনো ব্যাটসম্যানেরই তেমন কিছু করার থাকে না। শামীম হোসেনেরও থাকল না। মিচেল স্টার্ক এমন ইয়র্কার মারার কাজটা করেন নিয়মিতই। শামীম ব্যাটটা নামানোরও সময় পাননি বলতে গেলে। আগের বলে আবার স্টার্ক করেছিলেন শর্ট বল। ২ ওভার বাকী থাকতে ৬ষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরেছেন, স্টার্ক পেয়েছেন তাঁর প্রথম উইকেট।
নাটকের পর বাঁচলেন আফিফ
স্টার্ককে রিভার্স সুপ করে একটা চার মারলেন আফিফ। এরপর তৈরী হলো ধোঁয়াশা। স্টার্কের ফুলটসে ব্যাট লাগিয়েছিলেন আফিফ, তবে এরপর সেটি লেগেছিল স্টাম্পে। অন-ফিল্ডের দুই আম্পায়ার এরপর পরামর্শ করেছেন টিভি আম্পায়ারের সঙ্গে। শেষ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে নো বল।
১৩১ রানে থামল বাংলাদেশ
শেষ বলে এসে আর বাঁচলেন না আফিফ। মিচেল স্টার্কের টি-টোয়েন্টির ৫০তম শিকার হওয়ার আগে ১৭ বলে ২৩ রান করেছেন এই বাঁহাতি। বাংলাদেশ আটকে গেছে ১৩১ রানেই।
স্টার্কের প্রথম ওভারেই ছয় মেরে শুরু করেছিলেন নাঈম, তবে সে ওভারেই পাঁচ বলের ডট যেন পুরো ইনিংসেরই চিত্র। বাংলাদেশ ঠিক গতিটাই ধরতে পারেনি এ উইকেটে। নাঈম বল খেলেছেন বেশী, সৌম্য সরকার শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আলগা শটে ফিরেছেন।
মাহমুদউল্লাহও স্বস্তিতে ছিলেন না। সাকিব শুরু করেছিলেন, তবে গিয়ার বদলানোর আগেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে। শেষদিকে নুরুল বা শামীমও ঝড় ধরনের কিছুই তুলতে পারেননি। আফিফ যা একটু চেষ্টা করেছিলেন। ইনিংস গড়ার কাজে গড়বড় করে বেশ কঠিন এক চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কখনোই এতো কম রানের সম্বল নিয়ে জেতেনি বাংলাদেশ।
প্রথম বলেই মেহেদীর আঘাত
এর চেয়ে ভালো শুরু আর কিইবা চাইতে পারত বাংলাদেশ! প্রথম বলেই মেহেদী হাসান এনে দিলেন ব্রেক থ্রু। টার্ন করবে ভেবে খেলেছিলেন অ্যালেক্স ক্যারি, তবে রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে করা বলের লাইন মিস করে হয়েছেন বোল্ড।
মেহেদীর পর নাসুমের আঘাত
ফ্লাইট, সঙ্গে টার্ন- জশ ফিলিপের জন্য যথেষ্ট হলো সেটিই। নাসুম আহমেদের এক বল আগেই ছয় মেরেছিলেন, তবে ফিলিপে বাঁচলেন না আর। স্টাম্পিংয়ের ক্ষেত্রে টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষাই করেননি তিনি। ১০ বলের মাঝেই নেই অস্ট্রেলিয়ার ২ উইকেট!
স্বপ্নের শুরু বাংলাদেশের
মেহেদী হাসান। নাসুম আহমেদ। সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের তিন স্পিনারই আঘাত করলেন নিজেদের প্রথম ওভারে। সর্বশেষ সাকিবের শিকার ময়জেস হেনরিকস। সাকিবের ধীরগতির ফুললেংথের বলটা সুইপের চেষ্টা করেছিলেন হেনরিকস, ডানদিকে সরে গিয়ে। সফল হননি, হয়েছেন বোল্ড। ২.১ ওভারেই তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
তিন উইকেট, তিন রেকর্ড
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়ার কোনো ব্যাটসম্যান ইনিংসের প্রথম বলে আউট হলেন, অ্যালেক্স ক্যারি বোল্ড হয়েছেন মেহেদী হাসানের বলে।
জশ ফিলিপে স্টাম্পড হয়েছেন নাসুম আহমেদের বলে, প্রথম কোনো অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার হিসেবে টি-টোয়েন্টি এই আউট হলেন তিনি।
এরপর ময়জেস হেনরিকেস হয়েছেন সাকিবের বলে বোল্ড। ১১ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। টি–টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়া এর চেয়ে কম রানে প্রথম ৩ উইকেট হারিয়েছে শুধু একবার। ২০১০ সালে ব্রিজটাউনে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচটি ৭ উইকেটে হেরেছিল অস্ট্রেলীয়রা। আজ ফল হবে কী?
পাওয়ার প্লে-তে ২৮ রান
পাওয়ার প্লে-তে বাংলাদেশ তুলেছিল ৩৪ রান। অস্ট্রেলিয়া তুললো আরও কম। প্রথম ৬ ওভারে ২৮ রান তুলতে পেরেছে তারা। হারিয়েছে ৩ উইকেটও।
এক ওভার, তিন সম্ভাবনা
৯ম ওভারে ইনিংসের ৪র্থ স্পিনার হিসেবে আক্রমণে এসেছেন মাহমুদউল্লাহ। তিনটি সম্ভাবনা তৈরী করেছিলেন, তিনটিই কঠিন।
প্রথমে কাভারে ম্যাথু ওয়েড ক্যাচ তুললেও সেটি গেছে ফিল্ডারের নাগালের বাইরে দিয়ে। এরপর সুইপ করতে গিয়েছিলেন। উইকেটকিপার নুরুল হাসান তাঁকে অনুসরণ করেছিলেন, তবে বল গেছে তাঁর বিপরীত দিক দিয়ে। হাত বাড়িয়ে শুধু গ্লাভসেই লাগাতে পেরেছেন। এরপর দারুণভাবে বলের পেস কমিয়ে এনে মিচেল মার্শকে বোকা বানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তবে ফিরতি ক্যাচটা গেছে তাঁর নাগালের বাইরে দিয়েই।
ওয়েডকে ফেরালেন নাসুম
নাসুম আহমেদ বোলিংয়ে ফিরলেন, পেয়ে গেলেন উইকেট। লেগস্টাম্পের বেশ বাইরে নিরীহ বলটা ম্যাথু ওয়েড ছেড়ে দিলে হতে পারতো ওয়াইড। সেটিতেই শট খেলতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনলেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক। ফাইন লেগে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ১০ম ওভারে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, ভেঙেছে মার্শের সঙ্গে ওয়েডের ৪৫ বলে ৩৮ রানের জুটি। ইনিংসের মাঝপথে তাদের স্কোর এখন ৫২ রান।
হিট উইকেট!
বল গিয়েছিল ফাইন লেগের দিকে। নুরুল হাসান তাকিয়ে ছিলেন সেদিকেই। খানিকবাদে স্টাম্পের দিকে তাকিয়েই শুরু করলেন উল্লাস। অ্যাশটন অ্যাগার যে হয়েছেন হিট-উইকেট! নাসুমের নীচু হওয়া বলটা ঘুরিয়েছিলেন অ্যাগার, তবে ভার সামলাতে গিয়ে পেছনে গিয়েছিলেন একটু। তাঁর পা এলোমেলো করে দিয়েছে স্টাম্প। নাসুম আহমেদ পেয়েছেন ইনিংসে নিজের তৃতীয় উইকেট, অস্ট্রেলিয়া হারিয়েছে ৫ম উইকেটটি।
বাধা মার্শ
২১৯ রান। ১৫২.০৮ স্ট্রাইক রেট। ৪৩.৮০ গড়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে হারা সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন মিচেল মার্শ। তিনে তাঁকে জায়গা করে দিতে নীচে নেমে গেছেন ম্যাথু ওয়েডও। মার্শ টিকে আছেন এখনও। বারকয়েক উইকেটের গতিতে ধোঁকা খেলেও অপরাজিত তিনি। শেষ ৬ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ৫৯ রান, মার্শ অপরাজিত ৩৮ বলে ৩৬ রানে।
রিভিউ হারাল বাংলাদেশ
বেশ সরে গিয়ে সুইপ করতে গিয়েছিলেন অ্যাশটন টার্নার। সাকিবের বলে এলবিডব্লুর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার মাসুদুর রহমান। তবে বাংলাদেশের রিভিউ শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে ইমপ্যাক্ট বেশ বাইরে হওয়ায়। ইনিংসে একমাত্র রিভিউটি হারিয়ে ফেলল বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ৫০ রান।
মার্শ-বাধা কাটালেন নাসুম
বাধা হয়ে ছিলেন মার্শ, নিজের শেষ ওভারে এসে তাঁকে ফেরালেন নাসুম আহমেদ। ঝুলিয়ে দেওয়া বলটায় স্লগ সুইপ করতে গিয়েছিলেন মার্শ, তবে হয়েছেন টপ-এজড। স্কয়ার লেগ থেকে বেশ খানিকটা ছুটে এসে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন শরীফুল। নাসুম পেয়েছেন চতুর্থ উইকেট, অস্ট্রেলিয়া হারিয়েছে ষষ্ঠটি।
‘সেরা’ নাসুম
এর আগে ৪ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের সেরা বোলিং ছিল সাকিবের। ২০১৬ সালে বেঙ্গালুরুতে ২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। আজ সে রেকর্ড ভাঙলেন নাসুম। ১৯ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন এই বাঁহাতি স্পিনার। সব মিলিয়ে দুই দলের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ডটি অবশ্য থেকে গেল অস্ট্রেলিয়ান পেসার ডার্ক ন্যানেসেরই। ১৮ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি, ২০১০ সালে ব্রিজটাউনে।
মোস্তাফিজের প্রথম, অস্ট্রেলিয়ার সপ্তম
মোস্তাফিজকে যেন শেষের জন্যই জমিয়ে রেখেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। মোস্তাফিজ এলেন, কাটারে ধোঁকা দিলেন টার্নারকে। তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছেন টার্নার, অস্ট্রেলিয়া ডুবেছে আরেকটু।
শরীফুলের জোড়া আঘাত
প্রথমে অ্যান্ড্রু টাই, এরপর অ্যাডাম জাম্পা। ১৯তম ওভারে এসে দুজনকেই ফেরালেন শরীফুল। ১০৪ রানে ৯ম উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
ওয়ানডে, টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি
২০০৫। ২০১৭। ২০২১।
প্রথমে ওয়ানডে। এরপর টেস্ট। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি। তিন সংস্করণেই অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর স্বাদ পেল বাংলাদেশ।
এর আগে ৪ ম্যাচের সবকটিতেই বাংলাদেশ হেরেছিল অস্ট্রেলিয়ার কাছে, সব ম্যাচই ছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এদিন আগে ব্যাটিং করে ১৩১ রানে থেমে সে ধারা ভাঙার কাজটা নিজেরাই কঠিন করে তুলেছিল বাংলাদেশ। এ ম্যাচ জিততে বদলাতে হতো ইতিহাস, এর আগে যে কখনোই টি-টোয়েন্টিতে এত কম রানের সম্বল নিয়ে জেতেনি তারা।
ইনিংসের প্রথম বলেই মেহেদী হাসানের উইকেট যেন বদলে দিল সবকিছু। অস্ট্রেলিয়াকে আর দাঁড়াতেই দেয়নি এরপর স্বাগতিকরা। প্রথম ৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়া হারিয়েছে ৩ উইকেট, মেহেদীর পর নাসুম ও সাকিবও নিয়েছেন নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার সমস্যা ছিল ব্যাটিং, সেটিই ধসে গেল বাংলাদেশের স্পিন-তোপে। নাসুম আহমেদ বোলিং শেষ করেছেন ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে। দুটি করে নিয়েছেন দুই পেসার- মোস্তাফিজ ও শরীফুল। একটি করে নিয়েছেন সাকিব ও মেহেদী।
ইনিংসের শেষ বলে গিয়ে মিচেল স্টার্ককে বোল্ড করেছেন মোস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে শরীফুলের জোড়া আঘাতের পর শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। একটা ওয়াইডের সঙ্গে মোস্তাফিজ দিয়েছেন তিনটা সিঙ্গেল।
অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে গেছে ১০৮ রানেই। ২৩ রানের জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।