ছেলেদের ক্রিকেটে মেয়েদের ধারাভাষ্য দেওয়া 'অনুচিত'
করোনাভাইরাস জীবন কাড়ছে, পাল্টে দিচ্ছে পেশাগত ভাবনা। জিওফ্রে বয়কট যেমন তাঁর ধারাভাষ্য ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন। হৃৎপিণ্ডে চারবার অস্ত্রোপচার করানো বয়কট ৭৯ বছর বয়সে ‘জীবাণুনাশক’কক্ষের মধ্যে সারা দিন ধারাভাষ্য দেওয়ার চাপ নেননি। তাই বিবিসি টেস্ট ম্যাচ স্পেশালের সঙ্গে ১৪ বছরের সম্পর্ক আর বাড়াননি।
ঠোঁটকাটা হিসেবে পরিচিত ইংল্যান্ডের সাবেক এ ব্যাটসম্যান মাইক্রোফোন ছেড়ে কলম হাতেও তুলেছেন বিতর্ক। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ কাল বয়কটের একটি কলাম প্রকাশ করেছে। ১০৮ টেস্টে ৮ হাজারের বেশি রান করা সাবেক এ ওপেনার সেখানে বুঝিয়ে দিয়েছেন, ছেলেদের ক্রিকেটে মেয়েদের ধারাভাষ্য দেওয়া অনুচিত।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নারী ধারাভাষ্যকার এখন কম নয়। অ্যালিসন মিচেল, গাবি লোগান, ইশা গুহারা খ্যাতি কুড়িয়েছেন ধারাভাষ্যে। বয়কট তাঁদের প্রশংসা করেও দেখিয়ে দিয়েছেন সীমানা। বিশেষজ্ঞ মতামত দেওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন বয়কট। তার কারণ ব্যাখ্যায় তিনি লিখেছেন, ‘(খেলার) চাপ ও আবেগ সমন্ধে জানার পাশাপাশি কৌশলও থাকতে হবে। এগুলো বই পড়ে, ক্লাব ক্রিকেট, দ্বিতীয় গ্রেড কিংবা পুর্ণ সম্মানের সঙ্গে বলছি, মেয়েদের ক্রিকেট খেলে রপ্ত করা যায় না। মেয়েরা তাদের খেলায় যত ভালোই হোক, ছেলেদের ক্রিকেটে শক্তি ও গতির সঙ্গে এর কোনো সাযুজ্য নেই।’
বয়কট সোজাসাপ্টাই লিখেছেন, ‘বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে টেস্ট ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং সেখানে সাফল্যের জন্য কী কী লাগে, সেসব বুঝতে হবে।’ বিবিসি টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে বয়কটের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন ইশা গুহা।
স্বাভাবিকভাবেই বয়কটের এমন মন্তব্যের সমালোচনা হচ্ছে। ফক্স ক্রিকেট,নাইন ও সেভেন চ্যানেলের বিশেষজ্ঞ ধারাভাষ্যকার এবং অস্ট্রেলিয়া নারী দলের সাবেক অধিনায়ক লিসা স্টলেকার বয়কটের সমালোচনায় বলেছেন, খেলাটা ছাড়ার সময় হয়েছে তাঁর। মার্ক টেলর ও ইয়ান হিলির সঙ্গে ধারাভাষ্য দেওয়া স্টলেকার বলেন, ‘ছেলেদের কিংবা মেয়েদের ক্রিকেটে ভাবনার জায়গাটা কিন্তু একই। আমাদের মনে রাখা উচিত, এমন লোকের দরকার নেই, যারা ছেলে ও মেয়েদের ক্রিকেট সমান নয় বলে এই প্রশ্ন তুলবে। এটা আলাদা।’
স্টলেকার যুক্তি দিয়েছেন, ‘একই কথা তার ক্ষেত্রেও খাটে। মেয়েদের ক্রিকেটে তাহলে ছেলে ধারাভাষ্যকারদের দরকার নেই। কারণ, তারা মেয়েদের বিপক্ষে খেলেনি। কিন্তু এটা কোনো কথা হলো না।’