২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

চলে গেলেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের কিংবদন্তি রডনি মার্শ

রডনি মার্শ (১৯৪৭–২০২২)ছবি: এএফপি

কয়েক দিন আগে জানা গিয়েছিল রডনি মার্শের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এই উইকেটকিপার।

আজ সকালে অ্যাডিলেডের একটি হাসপাতালে তিনি ৭৪ বছর বয়সে মারা গেছেন। মার্শের সাবেক সতীর্থরা খবরটি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুর সময় স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন মার্শ।

নির্বাচকের দায়িত্বও পালন করেছেন। হার্ট অ্যাটাকের পর কোমায় ছিলেন তিনি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বুলস মাস্টার্সের আয়োজিত একটি প্রীতি টুর্নামেন্টে অংশ নিতে কুইন্সল্যান্ড যাওয়ার পথে হার্ট অ্যাটাক হয় মার্শের।

তাঁর সাবেক অধিনায়ক, ধারাভাষ্যকার এবং দীর্ঘদিনের বন্ধু ইয়ান চ্যাপেল চ্যানেল নাইনকে বলেছেন, ‘শুধু তার খেলার সামর্থ্যের জন্য নয়, রডনি স্পষ্টবাদী ছিল। আপনি তার চোখে কেমন, তা দ্রুতই বুঝিয়ে দিত। অনেকেই তাকে চিনত, সবাই হয়তো পছন্দ করত না কিন্তু সম্মানটা করেছে।’

ক্রিকেট তাসমানিয়া মার্শের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বিবৃতিতে বলেছে, ‘রড অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের আইকন। তার চলে যাওয়া বিশ্ব ক্রিকেটের জন্যই বড় ক্ষতি।’ ১৯৭০ সালে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক মার্শের।

৯৬ টেস্ট ও ৯২ ওয়ানডে ক্যারিয়ারের শেষ টেনেছেন ১৯৮৪ সালে। অবসর নেওয়ার সময় টেস্টে সর্বোচ্চ ৩৫৫ ডিসমিসালের রেকর্ড গড়েছিলেন মার্শ। রেকর্ডটি এখন মার্ক বাউচারের দখলে। তবে অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি পেসার ডেনিস লিলির সঙ্গে দারুণ জুটি ছিল মার্শের।

কিংবদন্তি পেসার ডেনিস লিলির সঙ্গে দারুণ জুটি ছিল মার্শের
ছবি: টুইটার

ক মার্শ ব লিলি—তখন ছিল টেস্ট ক্রিকেটে নিয়মিত চিত্র। লিলির বলে উইকেটের পেছনে ৯৫টি ক্যাচ নিয়েছেন মার্শ, যা বোলার এবং উইকেটকিপারের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ ডিসমিসালের রেকর্ডও।

১৯৮৪ সালে সিডনিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম টেস্টটি ছিল লিলি ও মার্শের ক্যারিয়ারেও শেষ টেস্ট। এই ম্যাচ দিয়ে দুজন টেস্ট ক্যারিয়ারের ইতি টানার আগে দারুণ এক মিল রেখে যান। মার্শের ডিসমিসালসংখ্যা যেমন ৩৫৫, তেমনি লিলির উইকেটসংখ্যাও ৩৫৫!

আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে পছন্দ করতেন মার্শ। ১৯৮২ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেটকিপার হিসেবে টেস্টে শতক পেয়েছেন। খেলা ছাড়ার পর অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট একাডেমি প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন মার্শ।

রিকি পন্টিং ও জাস্টিন ল্যাঙ্গারের মতো কিংবদন্তিরা তাঁর পরিচর্যাতেই উঠে এসেছেন। নির্বাচকদের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

মার্শের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘গত সপ্তাহ থেকে আমাদের পরিবার যে পরিমাণ ভালোবাসা ও সমর্থন পেয়েছে সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। জীবনের সবচেয়ে কঠিন সপ্তাহে এই সমর্থন আমাদের শক্তি জুগিয়েছে।’

অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান টেস্ট দলের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটে রড অনেক বড় মাপের ব্যক্তিত্ব। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটকে প্রায় ৫০ বছরের মতো অসাধারণ সেবা করেছেন।’

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জানান, বড় হয়ে ওঠার পথে রডনি মার্শ ছিলেন তাঁর প্রিয় ক্রিকেটারদের একজন, ‘অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের অন্যতম সেরা টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে তাকে মনে রাখবেন সবাই।’

নির্বাচকের দায়িত্বও পালন করেছেন মার্শ
ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনার মার্ক ওয়াহ বলেছেন, রডনি মার্শ একজন ‘নিখাদ কিংবদন্তি। নির্বাচক হিসেবে তার সঙ্গে কয়েক বছর কাজ করার অভিজ্ঞতা হয়েছে। তার মতো সৎ, বিনয়ী এবং দয়ালু মানুষ হয় না।’