ঘরের মাঠে ভারত এত অসহায়
>ওয়াংখেড়ে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। অপরাজিত সেঞ্চুরি তুলে নেন ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চ
মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দুই দলের দুই ইনিংসে দেখা গেল ভিন্ন দৃশ্য। ভারত ২৫৫ রান তুললেও বেশ মজায় ছিলেন দর্শকেরা। হইচই চলেছে বেশ। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ৩০ ওভার পেরোতে সে দর্শকেরাই চুপসে গেলেন ফাটা বেলুনের মতো! ঘরের মাঠে ভারতকে শেষ কবে এতটা অসহায় দেখা গেছে, সে প্রশ্নটা আসতেই পারে যেকোনো ক্রিকেট-দর্শকের মনে।
আগে ব্যাটিং করে ভারত যে সংগ্রহ তুলেছে তা মোটেও সাদামাটা না। যশপ্রীত বুমরা, মোহাম্মদ শামি, কুলদীপ যাদব, শার্দুল ঠাকুরদের মতো বোলাররা থাকলে প্রতিপক্ষের কাছে এ সংগ্রহও বড় হয়ে ওঠার কথা। ভুল। ডেভিড ওয়ার্নার-অ্যারন ফিঞ্চ মিলে আজ মুম্বাইয়ের মাঠে ভাবনাটা ভুল প্রমাণ করে ছাড়লেন। ভারতের এ সংগ্রহ তাড়া করতে নেমে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনাররা যে আর কোনো ব্যাটসম্যানকেই নামতে দেননি! দুই ওপেনারের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচটা অস্ট্রেলিয়া জিতল ১০ উইকেটে, সেটিও ৭৪ বল হাতে রেখে। এত রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ!
যে কোহলি সংগ্রহ যাই হোক না কেন মাঠে সব সময় আক্রমণাত্মক থাকেন তাঁকেও আজ বেশ অসহায় লেগেছে ওয়ার্নার-ফিঞ্চের ব্যাটিংয়ের সামনে। হার মোটামুটি নিশ্চিত বোঝার পর কোহলির চিরচেনা প্রাণচাঞ্চল্য কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিল! কোহলির জন্য এ যেন নতুন স্বাদ। তেতো স্বাদ বলাই ভালো। ওয়ানডে ইতিহাসেই এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ন্যূনতম ২৫০ রান তাড়া করতে নেমে ১০ উইকেটে জিতল কোনো দল। হেরে যাওয়া দলে শ্রীলঙ্কা (২০১৬, ইংল্যান্ড) ও বাংলাদেশের (২০১৭, দক্ষিণ আফ্রিকা) পর এবার যোগ হলো কোহলির ভারত। হেরে যাওয়া তিনটি দলই এশিয়ান!
নেতৃত্ব পাওয়ার পর ওয়ানডেতে তাঁকে যে কখনো ১০ উইকেটে হারতে হয়নি। ওয়ানডেতে ভারত ১০ উইকেটে হেরেছেই মাত্র চার বার (আজকের হারের আগে)। সবশেষ ছিল ২০০৫ সালে ইডেন গার্ডেনসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সেটি আজকের আগে এ সংস্করণে ভারতের ১০ উইকেটে হারের সবশেষ নজিরও। তখন অধিনায়ক ছিলেন রাহুল দ্রাবিড়। এরপর নেতৃত্বভার পেয়েছেন অনিল কুম্বলে (১ ম্যাচ), মহেন্দ্র সিং ধোনি (২০০ ম্যাচ), সুরেশ রায়না (১২ ম্যাচ) ও গৌতম গম্ভীর (৬ ম্যাচ)—তাঁদের কেউ-ই অধিনায়ক হিসেবে ১০ উইকেটে হারেননি, যা দেখতে হলো কোহলিকে। তাঁর আগে অধিনায়ক হিসেবে ১০ উইকেটের হার দেখেছেন সুনীল গাভাস্কার, শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী এবং দ্রাবিড়।
১১২ বলে ১২৮ রানের ইনিংস খেলেছেন ওয়ার্নার। ছিল ১৭টি চার ও ৩টি ছক্কার মার। অন্য প্রান্তে ১১৪ বলে ১১০ রান করেছেন ফিঞ্চ। ২টি ছক্কা ও ১৩টি চার মেরেছেন তিনি। দুই স্পিনার কুলদ্বীপ ও রবীন্দ্র জাদেজা ছাড়া ভারতের তিন পেসারের কেউ-ই ওভারপ্রতি ৬ রান করেও রাখতে পারেননি।