‘ক্রিকেট বলকে ফুটবলের মতো দেখে’ রেকর্ড ক্যারির
‘নিখুঁত! একটি বলও হাত থেকে ফেলেনি। (ক্রিকেট) বলটা ফুটবলের মতো দেখছে! অসাধারণ অভিষেক...গ্লাভসের কাজে সে দশে দশ পাবে।’
অ্যালেক্স ক্যারিকে নিয়ে কথাগুলো মার্ক ওয়াহর। ব্রিসবেন টেস্ট দিয়ে লাল বলের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছে ক্যারির। বিতর্কে জড়িয়ে টিম পেইন দল থেকে ছিটকে পড়ায় কপাল খোলে ক্যারির।
এখন তো পেইনের কপাল পোড়ার দশা। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়কের উইকেটকিপার হিসেবে দলে ফেরাই যে কঠিন!
অভিষেক টেস্টেই ইতিহাসের প্রথম উইকেটকিপার হিসেবে ৮টি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড গড়েছেন ক্যারি। ভাগ বসিয়েছেন অভিষেকে সর্বোচ্চ ডিসমিসালের রেকর্ডেও।
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে ৩টি ক্যাচ নেন ক্যারি, দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫টি ক্যাচ। অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি উইকেটকিপার অ্যাডাম গিলক্রিস্টের হাত থেকে ৪৬১তম ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাগি গ্রিন টুপিটা পান ক্যারি।
আর তাতেই রেকর্ডে নাম লেখানো হয়ে গেছে তাঁর। টেস্ট অভিষেকে এত দিন সর্বোচ্চ ৭টি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড ছয় উইকেটকিপারের দখলে ছিল। ক্রিস রিড ও ব্রায়ান তাবের ছাড়াও অ্যালান নট, পিটার নেভিল, চামারা দুনুসিংহে ও ঋষভ পন্তের দখলে ছিল এই রেকর্ড। তাঁদের পেছনে ফেলে আজ এই রেকর্ড একার দখলে নেন ক্যারি।
ইংল্যান্ডের ক্রিস রিড ও অস্ট্রেলিয়ার ব্রায়ান তাবেরের নাম আলাদা করে বলা হলো কারণ, শুধু ক্যাচের রেকর্ড বাদ দিয়ে সব ধরনের ডিসমিসাল হিসাবে নিলে সেখানে এখনো তাঁরা রেকর্ডে জ্বলজ্বলে। ক্যারি আজ তাঁদের রেকর্ড ছুঁয়েছেন। টেস্ট অভিষেকে এর আগে সর্বোচ্চ ৮টি করে ডিসমিসাল ছিল রিড ও তাবেরের।
১৯৬৬ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেকে ৮ ডিসমিসালের দেখা পান তাবের। ৩৩ বছর পর ১৯৯৯ সালে বার্মিংহামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক তাবেরের রেকর্ডে ভাগ বসান রিড। এর ২২ বছর পর তাঁদের পাশে বসলেন ক্যারি।
চোটের কারণে ডেভিড ওয়ার্নার অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে ওপেন করতে পারেননি। জয়ের জন্য ২০ রানের লক্ষ্য পাওয়া অস্ট্রেলিয়াও ঝুঁকি নেয়নি। ‘মেকশিফট’ ওপেনার হিসেবে ক্যারিকে নামানো হয়।
এর মধ্য দিয়ে আরেকটি রেকর্ডের দেখা পান ৩০ বছর বয়সী এ উইকেটকিপার। ছেলেদের টেস্ট অভিষেকে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম উইকেটকিপার হিসেবে ওপেন করলেন ক্যারি। নেল ম্যাসির সৌজন্যে মেয়েদের ক্রিকেটে তা আগেই দেখেছে অস্ট্রেলিয়া।
তবে অস্ট্রেলিয়া ছাপিয়ে সব দেশ মিলিয়ে ছেলেদের ক্রিকেটে গত ৫৬ বছরের হিসাব কষলে মাত্র তিনজন উইকেটকিপার অভিষেক টেস্টে দলের হয়ে ওপেন করার সুযোগ পেয়েছেন।
১৯৬৫ সালে ওয়েলিংটনে পাকিস্তানের হয়ে টেস্ট অভিষেকে ওপেন করেন নওশাদ আলী। ১১ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর গত ৫৬ বছরে টেস্ট অভিষেকে ওপেন করেছেন যে তিনজন, তাঁরা সবাই উইকেটকিপার-শ্রীলঙ্কার ব্রেন্ডন কুরুপ্পু, নিউজিল্যান্ডেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্স ক্যারি।
১৯৮৭ সালে কলম্বো টেস্টে অভিষেকেই অপরাজিত ২০১ রানের ইনিংস খেলেন কুরুপ্পু। নিজের অভিষেকে ১৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ম্যাককালাম। কিন্তু ক্যারি আজ অপরাজিত থাকতে পারেননি। ৯ রানে আউট হন।
তাতে অবশ্য চতুর্থ ইনিংসে মাত্র ২০ রানের লক্ষ্যে নামা অস্ট্রেলিয়ার খুব একটা ক্ষতি হয়নি, অ্যাশেজের প্রথম টেস্টটা আজ তারা জিতেছে ৯ উইকেটে।