২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ক্রিকেট কোচদের ফুটবল কোচ বললেন মাশরাফি

বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর সঙ্গে পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডফাইল ছবি: প্রথম আলো

রাসেল ডমিঙ্গো কি নিজেকে জোসে মরিনিও ভাবেন? কিংবা অ্যালান ডোনাল্ড কি মনে করেন, তিনি আসলে গার্দিওলা! তাঁরা সেটি মনে করুন বা না-ই করুন, আজকালকার ক্রিকেট কোচদের দেখে মাশরাফি বিন মুর্তজার উপলব্ধি—তারা বোধ হয় নিজেদের ফুটবল কোচই ভাবেন।

মাশরাফি কারও নাম ধরে কথাটা বলেননি। তবে সাকিব আল হাসানের টেস্ট দলের নেতৃত্ব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রথম আলোকে আজ বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘এই যুগের ক্রিকেটে কোচরা তো কেউ মরিনিও হতে চায়, কেউ চায় গার্দিওলা হতে। তারা নিজেদের ফুটবল কোচ ভাবে।’

আরও পড়ুন

আধুনিক ক্রিকেট কোচদের এমন দর্শন একদমই মানতে পারেন না মাশরাফি। তাঁর চোখে এই চিন্তাটাই ভুল, ‘ফুটবল কোচ-নির্ভর খেলা হলেও ক্রিকেট পুরোপুরিই অধিনায়ক-নির্ভর খেলা। অধিনায়ককে দল নির্বাচন, একাদশ গঠনে প্রাধান্য না দিলে তার কাছে জবাবদিহিও চাওয়া ঠিক নয়।’

মাশরাফি ও সাকিব আল হাসান
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

সাকিবকে নিয়ে বলতে গিয়ে মাশরাফির কথায় হঠাৎ কোচদের অবতারণা আসলে বাংলাদেশ দলের সদ্য সাবেক টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকের প্রসঙ্গে। ‘আশা করি, সাকিবের ক্ষেত্রে সেটা হবে না, যেটা মুমিনুলের ক্ষেত্রে হয়েছে। অবশ্য কারও সে রকম ইচ্ছা হলেও সাকিবের ক্ষেত্রে হয়তো বলার সাহস পাবে না’—বলেছেন ক্রিকেটার থেকে বর্তমানে নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

একসময় তিন সংস্করণেই বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। ২০০৯ সালে চোটে পড়ে তো টেস্ট ক্রিকেটটাই আর খেলেননি। তবে পালন করেছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কের দায়িত্ব। দীর্ঘ সে অভিজ্ঞতা থেকেই মাশরাফি জানেন অধিনায়কের জন্য কাজের স্বাধীনতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। মাশরাফি বলছিলেন, ‘একজন অধিনায়ক যখন মাঠে নামে তখন সেই ভালো জানে কোন পরিস্থিতিতে তাকে কোন বোলার বা ব্যাটসম্যানকে খেলাতে হবে। অধিনায়কের ওপর যদি আপনার সে আস্থা না থাকে তাকে অধিনায়কত্ব দেওয়াই ঠিক না।’

মুমিনুলের সঙ্গে নেটে কোচ ডমিঙ্গো
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

মাশরাফির চোখে এ সবই ক্রিকেটের সাধারণ যুক্তি, সাফল্যের প্রাথমিক সূত্র। যেগুলো মেনে না চললে ব্যর্থতার সম্ভাবনাই বেশি, ‘যুক্তির বাইরে গিয়ে ক্রিকেটে ভালো ফল আসবে না। সারা দুনিয়া যে যুক্তিতে চলে আপনাকেও সে যুক্তিতেই যেতে হবে। ক্রিকেট অধিনায়ক নির্ভর খেলা। আপনি এটাকে কোচ নির্ভর খেলা করতে যাবেন, ক্রিকেট বোর্ড নির্ভর খেলা করতে যাবেন.. সেসব কোনো কাজেই আসবে না।’

মুমিনুল অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ইচ্ছা প্রকাশের পর আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজকে সামনে রেখে বিসিবি টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেয় সাকিবকে। কিন্তু যিনি নিয়মিত টেস্ট খেলবেন কিনা, সেই আলোচনারই কোনো উপসংহার নেই; টেস্টের অধিনায়কত্ব তাঁর কাঁধেই তুলে দেওয়াটা যেন আলোচনার নতুন শাখাই খুলে দেয়। তবে মাশরাফি সে আলোচনার আলোচক হতে রাজি নন।

আরও পড়ুন

প্রথম আলোকে মাশরাফি বলেছেন, ‘সাকিব অধিনায়ক হয়েও বিশ্রাম নিয়ে টেস্ট খেলবে কিনা সেটা পুরোপুরি নির্ভর করছে সাকিব আর বিসিবির বোঝাপড়ার ওপর। সংবাদমাধ্যম বিষয়টাকে কীভাবে নেয় সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তবে যেটাই হোক, কোথাও যেন যোগাযোগবিভ্রাট না থাকে।’

আরও পড়ুন

অধিনায়কত্বের নতুন ইনিংসে সাকিবের প্রথম পরীক্ষা অ্যান্টিগায় ১৬ জুন থেকে শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট। তার আগে মাশরাফির কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল অধিনায়ক সাকিবের কোথায় উন্নতি প্রয়োজন। না, তেমন কোনো জায়গাই আপাতত খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি, ‘পৃথিবীতে এমন কোনো মানুষ নেই যার উন্নতির দরকার নেই। সে তার নিজস্ব ধরনে উন্নতি করে। আজ যেটা ভুল করবে কাল সেটা ঠিক করবে। মূল কথা হচ্ছে সাকিব অধিনায়ক হিসেবে সঠিক ব্যক্তি কিনা? আমি মনে করি সঠিক ব্যক্তি। আর উন্নতি কোথায় করতে হবে সেটা তার ওপরই নির্ভর করছে।’

** অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে মাশরাফি বিন মুর্তজার কলাম পড়ুন আগামীকাল মঙ্গলবার ছাপা সংস্করণে।