ক্যারিবিয়ানে পাওয়েল-ঝড়
প্রথম ম্যাচে উড়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ বল পর্যন্ত অপেক্ষায় থেকে ১ রানের জয়। টি-টোয়েন্টি সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের পারফরম্যান্সের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। গতকাল ব্রিজটাউনে তো ২০০-ও পার করল সফরকারীরা; কিন্তু পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটিংয়ের এই ইতিবাচকতাও বাঁচাতে পারেনি ইংল্যান্ডকে। ২০ রানে হেরে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে গেল ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ডের ২০৪ রানও কম হয়ে গেছে রোভম্যান পাওয়েলের সামনে। ৫১ বলের শতকের পথে ইংল্যান্ডের বোলিংকে কচুকাটা করেছেন ১০৭ রান তোলা পাওয়েল।
সিরিজে কালই প্রথম নেমেছিলেন পাওয়ালে। বোলিং অলরাউন্ডার ওডিন স্মিথের জায়গায় ব্যাটিংয়ের শক্তি বাড়াতেই ডেকে আনা হয়েছে তাঁকে। পেশির ব্যবহারে নিজের শক্তিটা প্রথম ম্যাচেই দেখিয়ে দিয়েছেন পাওয়েল। দুই ওপেনার ব্র্যান্ডন কিং ও শাই হোপ ধীরগতিতে শুরু করেছিলেন। কিং (১০) ফেরার পর রানের গতি বাড়ে। তিনে নামা নিকোলাস পুরানই দলকে টি-টোয়েন্টির গতিতে রান এনে দিচ্ছিলেন। অন্য প্রান্তে শাই হোপ ছিলেন ওয়ানডের ছন্দে। ১০ বলে ৬ রান তোলা হোপের পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ফেরা তাই ইংল্যান্ডের জন্য দুঃসংবাদ হয়ে এসেছে।
পাওয়েল যখন নামছেন, পুরানের নামের পাশে তখনই ৩২ রান। ১৭ বলে ৩ ছক্কা আর ২ চার মারা পুরানকেই ইংল্যান্ডে মূল দুশ্চিন্তা মনে হচ্ছিল। সে চিন্তা একটু পরই মিলিয়ে গেছে। ৫.২ ওভারে উইকেটে নেমেছিলেন পাওয়েল। ৯.১ ওভারেই পুরানকে ছাড়িয়ে গেছেন রানে! প্রথম ২০ বলে ৪ ছক্কা আর ১ চারে ৩৮ তোলা পাওয়েল ইনিংস যত এগিয়েছে তত ভয়ংকর হয়েছেন।
অন্যদিকে পুরান খেলেছেন, পাওয়ার হিটিং ব্যাটিংয়ের পরিপূর্ণ সঙ্গী হয়ে। ১৭তম ওভারে ৪৩ বলে ৭০ রান করে ফিরেছেন পুরান। এর মধ্যেই জুটিতে ১১ ওভারে ১২২ রান চলে এসেছে। পুরানের ইনিংসে চারের (৪) চেয়ে ছক্কাই (৫) বেশি ছিল। তবে পাওয়েলের তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিলেন পুরান। ৩১ বলে পঞ্চাশ করা পাওয়েল পরের পঞ্চাশ তুলেছেন ২০ বলে। ৪ চার ও ৯ ছক্কায় ৫১ বলে শতক পেয়েছেন পাওয়েল। শতকের পরের বলেই এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার ছক্কা মেরেছেন। ইংল্যান্ডকে স্বস্তি দিয়ে এর পরের বলেই আউট পাওয়েল।
ততক্ষণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ১৯ ওভারে ২১০। রোমারিও শেপার্ড ও কাইরন পোলার্ড শেষ ওভারে আরও ১৪ রান এনে দিয়েছেন।
ওদিকে দলে চোট ও অসুস্থতা মিলিয়ে দলে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে নামা ইংল্যান্ডের হয়ে লড়েছেন টম ব্যান্টন ও অভিষিক্ত ফিল সল্ট। জেসন রয়, জেমস ভিন্স ও মঈন আলী ৯ ওভারের মধ্যে ফিরে গেছেন; তবু ইংল্যান্ডের রানরেট ১০–এর ওপরে ছিল। ১০ ওভারের মধ্যে পঞ্চাশ তোলা ব্যান্টন একাই লড়ছিলেন। ২৯ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পথে তিনটি করে চার ও ছক্কা মেরেছেন ব্যান্টন। কিন্তু অন্য প্রান্তে সঙ্গী পাচ্ছিলেন না। ১৩তম ওভারে দলকে ১২৯ রানে ফিরলেন ব্যান্টন। ৩৯ বলে ৭৩ তোলা এই উইকেটরক্ষক পঞ্চাশের পর মেরেছিলেন আরও তিন ছক্কা। ইনিংসের বাকিটা অভিষিক্ত সল্টের গল্প।
ক্যারিবীয় অঞ্চলে কৈশোর কাটানো সল্ট ২২ বলে পেরিয়েছেন পঞ্চাশ। শেষ ওভারে ৩৬ রান দরকার ছিল ইংল্যান্ডের। শেপার্ডের প্রথম ২ বলে ছক্কা মেরে অবিশ্বাস্য এক স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন সল্ট। কিন্তু তৃতীয় বলে বোল্ড হয়ে যান ২৪ বলে ৫৭ করা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।