কিশোরীকে ধর্ষণ মামলায় ইয়াসিরের নামটা ভুলে ঢোকানো হয়েছিল?
১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহর নাম। তাঁর বন্ধু ফারহান ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল, আর এই ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ছিল ইয়াসিরের বিরুদ্ধে। কিন্তু মাসখানেক পরই মামলা থেকে ইয়াসিরকে পুলিশ মুক্তি দিয়েছে বলে জানাচ্ছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম পাক অবজারভার।
ইসলামাবাদের শালিমার পুলিশ স্টেশনে ধর্ষণের শিকার কিশোরী নিজের আগের বয়ান থেকে সরে আসার পর পুলিশ ইয়াসিরের নাম এফআইআর (অভিযোগপত্র) থেকে মুছে দিয়েছে। কিশোরী নাকি নতুন বয়ানে বলেছে, ইয়াসিরের নাম মামলায় ভুলে ঢোকানো হয়েছিল। পাক অবজারভার লিখেছে, গত মাসে আলোচনায় আসা এই মামলার সঙ্গে ইয়াসিরের কোনো যোগসাজশ নেই বলে জানিয়েছে পুলিশও।
বন্ধুর হাতে ধর্ষণের শিকার কিশোরীকে হেনস্তা করার অভিযোগে গত ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ ইয়াসিরের নাম অভিযোগপত্রে তুলেছিল। ইসলামাবাদের শালিমার পুলিশ স্টেশনে ওই কিশোরীর চাচি অভিযোগপত্রটি লেখান বলে তখন জানা যায়। সে সময়ে পাকিস্তানের দণ্ডবিধির ২৯২-বি ও ২৯২-সি (শিশু পর্নোগ্রাফি) ও ৩৭৬ (ধর্ষণের শাস্তি) ধারায় ইয়াসির ও তাঁর বন্ধু ফারহানকে অভিযুক্ত দেখানো হয়।
অভিযোগপত্রে কিশোরীর চাচি বলেন, সেপ্টেম্বরে লাহোরে ইয়াসির শাহ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ফারহান তাঁর ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থী ভাতিজির (ধর্ষণের শিকার কিশোরী) মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। অভিযোগকারীকে উদ্ধৃত করে পুলিশের অভিযোগপত্রে লেখা, ‘লাহোর থেকে ফেরার প্রায় দুই-তিন মাস পরও আমার ভাতিজিকে খুব মনমরা দেখতাম, অসুস্থও ছিল।’ এরপর বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করার পর নাকি ওই কিশোরী জানায়, হোয়াটসঅ্যাপে ইয়াসিরের সঙ্গে কথা বলতে ওই কিশোরীকে বাধ্য করেন ফারহান।
অভিযোগকারী জানান, একদিন তাঁর ভাতিজি কোচিং থেকে ফেরার সময় ফারহান ট্যাক্সিতে করে কিশোরীকে উঠিয়ে নিয়ে যান। বন্দুকের মুখে কিশোরীকে ধর্ষণ করেন, সেটির আবার ভিডিও করে রাখেন। কাউকে কিছু জানালে ভিডিওটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও ফারহান দিয়েছেন বলে অভিযোগপত্রে লেখা।
সেখানে ইয়াসিরের ভূমিকা হিসেবে লেখা, ইয়াসির ওই তরুণীকে হুমকি দিয়েছেন, কাউকে কিছু জানালে ইয়াসির নিজের ক্ষমতা ও পরিচিতি কাজে লাগিয়ে উল্টো ওই কিশোরীকেই অন্য কোনো মামলায় অপরাধী বানিয়ে দেবেন! ওই কিশোরীর চাচি জানিয়েছেন, ফারহান এই সুযোগ নিয়ে কিশোরীকে ব্ল্যাকমেল করে আরেকবার ধর্ষণ করেন।
এরপর ইয়াসিরকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে অভিযোগকারী সবকিছু জানালে ইয়াসির সবকিছু হাসি-তামাশায় উড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানান অভিযোগকারী। কিশোরী মেয়েদের তাঁর ভালো লাগে বলেও নাকি ইয়াসির জানিয়েছেন, এমনটাই লিখেছেন কিশোরীর চাচি।
বিকল্প প্রস্তাবও ইয়াসির দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারী, ‘আমি পুলিশে মামলা করার হুমকি দেওয়ার পর ইয়াসির জানায়, ও (কিশোরী) ফারহানকে বিয়ে করলে সে ক্ষেত্রে ওকে (কিশোরী) সে (ইয়াসির) একটা ফ্ল্যাট কিনে দেবে এবং ওর (কিশোরীর) বয়স ১৮ হওয়া পর্যন্ত সব খরচ বহন করবে।’
সেটির পাশাপাশি নোংরা প্রস্তাবও ইয়াসির দিয়েছেন বলে অভিযোগপত্রে লিখেছিলেন কিশোরীর চাচি। ইয়াসির নাকি এখন ইসলামাবাদে নিজের ফ্ল্যাটে ওই কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে চান। পাকিস্তানি লেগ স্পিনার নাকি কিশোরীর চাচিকে জানিয়েছেন, ওই কিশোরী তাঁকে (ইয়াসির) ‘সন্তুষ্ট’ করতে পারলে সব ঝামেলা মিটিয়ে ফেলা হবে।
কিন্তু পুলিশের তদন্তের পর এখন ইয়াসির সব অভিযোগ থেকেই মুক্তি পাচ্ছেন!