কাপালির মতো সিমন্সেরও চার–ছক্কায় অরুচি ধরেছিল?

রাবাদার বলে বোল্ড হন লেন্ডল সিমন্সছবি: এএফপি

লেন্ডল সিমন্স ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচে ৭ বলে ৩ রান করে আউট হন। সে ইনিংসের সময়ই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভক্তরা।

অনেকে তো তাঁর জায়গায় টেস্ট অলরাউন্ডার রোস্টন চেজকেও নামিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তাহলে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিমন্সের ইনিংস দেখে কী বলবেন ভক্তরা?

টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাওয়ার হিটিং নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই। সিমন্স নিজেও সে ঘরানার ব্যাটসম্যানদের একজন। কিন্তু আজ দুবাইয়ে নিজের ইনিংসটা তিনি যত দ্রুত সম্ভব ভুলে যেতে চাইবেন।

১৩.২ ওভারে কাগিসো রাবাদাকে জোর করে মারতে গিয়ে সিমন্স যখন আউট হলেন, তাঁর নামের পাশে ৩৫ বলে ১১—কোনো বাউন্ডারি নেই!

পাওয়ারপ্লেতে তুলে মারতে সিদ্ধহস্ত সিমন্স। কিন্তু আজ পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের তোলা বিনা উইকেটে ৪৩ রানে সিমন্সের অবদান ১৪ বলে ৫। অন্য প্রান্তে ২২ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত ছিলেন এভিন লুইস।

জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় অলক কাপালি
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

সিমন্স হাত খুলে ব্যাট করলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহটা তাদের পাওয়ার হিটিংয়ে সামর্থ্য বিচারে (১৪৩/৮) সাদামাটা হতো না। লুইস ৩৫ বলে ৫৬ করে সিমন্সের আগেই আউট হন।

সিমন্স রানের তুলনায় অনেক বেশি বল খেলে ফেলায় তখন তাঁকে ‘বোঝা’ মনে হতে পারে ক্যারিবিয়ান ভক্তদের। তাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মনেও ভেসে উঠতে পারে পুরোনো এক স্মৃতি।

সিমন্সকে নিয়ে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভক্তদের যেমন লেগেছে, সেদিন অলক কাপালিকে নিয়ে বাংলাদেশের ভক্তদেরও তেমন লেগেছিল। সেটি ছিল প্রথম (২০০৭) টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

কেপ টাউনে এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই ছয়ে নেমে ৩৫ বলে ১৪ রান করেছিলেন কাপালি। সিমন্সের মতোই তাঁর ইনিংসে কোনো বাউন্ডারি ছিল না। আজ কাপালির সেই ইনিংসকেই মনে করিয়ে দিলেন সিমন্স।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে অন্তত ৩৫ বল খেলা কোনো ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানের নজির গড়লেন এই ক্যারিবিয়ান। সবচেয়ে কম রানের ইনিংস কার? কে আবার, ১৪ বছর আগের সে ম্যাচে অলক কাপালি! টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোনো বাউন্ডারি ছাড়া সবচেয়ে বেশি বল খেলা ইনিংসের তালিকায়ও জায়গা করে নিয়েছে সিমন্সের এই ইনিংস।

কাপালি ও স্কটল্যান্ডের ম্যাট ক্রসের এই রেকর্ড টানার বোঝাটা কিছুটা হলেও লাঘব করলেন সিমন্স।

এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এই টুর্নামেন্টে কোনো বাউন্ডারি ছাড়া সবচেয়ে বেশি বল খেলা ইনিংসের রেকর্ডটি কাপালির একার দখলে ছিল।

গত বৃহস্পতিবার ওমানের বিপক্ষে ৩৫ বলে অপরাজিত ২৬ রানের ইনিংস দিয়ে কাপালির পাশে বসেন ক্রস—বলা ভালো, কাপালির কাঁধে এই অনাকাক্ষিত রেকর্ডের ‘বোঝা’ একটু লাঘব করেন। আজ সিমন্সও কোনো বাউন্ডারি ছাড়া ৩৫ বল খেলে দুজনের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন!

ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিশ্চয়ই এমন সিমন্সকে দেখতে চায়নি। মেরে নতুন বলের উজ্জ্বলতা তুলে নিতে যিনি ভালোবাসেন, তাঁর কাছ থেকে অন্তত এমন ইনিংস আশা করেনি ক্যারিবিয়ানরা।

সিমন্স যখন ৩০ বলে ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন, তখনই আরও একটি অনাকাক্ষিত রেকর্ডে নাম লেখান—ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ৩০ বল খেলা সবচেয়ে কম রানের ইনিংস।