ওয়াহ ভাইদের ৩০ বছরের রেকর্ড ভাঙলেন পুকোভস্কি–হ্যারিস
দুদিন আগেই একটা স্বপ্নের কথা বলেছেন উইল পুকোভস্কি। অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে জায়গা পেতে চান। আর সেটা ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজেই। স্বপ্নের কথা বলে কিন্তু থেমে নেই অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ব্যাটসম্যান। সুযোগ পাওয়ার জন্য যা করণীয়, সেটাও করে যাচ্ছেন পুকোভস্কি। অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেট শেফিল্ড শিল্ডে আজ ভিক্টোরিয়ার হয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করে নির্বাচকদের একটা বার্তাও পাঠিয়েছেন তিনি—আমার নামটা মাথায় রাখুন!
শুধু কি পুকোভস্কি, নির্বাচকদের বার্তা পাঠিয়েছেন মার্কাস হ্যারিসও—আমি টেস্ট দলে ফিরতে পারি! একই দলের হয়ে কাল ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এরই মধ্যে ৯টি টেস্ট খেলা ওপেনার। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভিক্টোরিয়ার প্রথম ইনিংসে ২৩৯ রান করে আউট হয়েছেন হ্যারিস। ভিক্টোরিয়া ৩ উইকেটে ৫৬৪ রান তুলে ইনিংস ঘোষণার সময় ২৫৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন আরেক ওপেনার পুকোভস্কি।
ইনিংস দুটি খেলার পথে দুজনে মিলে শেফিল্ড শিল্ডের ৩০ বছরের পুরোনো একটি রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছেন। ওপেনিং জুটিতে পুকোভস্কি ও হ্যারিস মিলে করেছেন ৪৮৬ রান, যেটা শেফিল্ড শিল্ডে সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ। পুকোভস্কি ও হ্যারিস ভেঙে দিয়েছেন ১৯৯০ সালে দুই ভাই স্টিভ ও মার্ক ওয়াহর করা ৪৬৪ রানের রেকর্ড। ওয়াহ ভাইয়েরা রেকর্ডটি গড়েছিলেন নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে।
অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে হ্যারিসের অভিষেক ২০১৮ সালে। প্রতিশ্রুতিশীল একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে ঢুকলেও ক্যারিয়ারের প্রথম ৯ টেস্টে বলার মতো তেমন কিছু করতে পারেননি হ্যারিস। এই ৯ টেস্টে ২৪.০৬ গড়ে ৩৮৫ রান করেছেন। দুটি ফিফটি পেলেও নেই কোনো সেঞ্চুরি। ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের পর তাই দল থেকে বাদ পড়েন। সেই থেকে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আর টেস্ট খেলা হয়নি হ্যারিসের।
অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে গত দুই গ্রীষ্ম ধরেই অসাধারণ খেলা পুকোভস্কি আগেই নির্বাচকদের নজরে এসেছেন। কিন্তু বিষণ্নতাজনিত মানসিক চাপের কারণে নিজে থেকেই এত দিন টেস্ট খেলতে চাননি ২২ বছর বয়সী ওপেনার। ২০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ৪২.২৪ গড়ে ১২২৫ রান করেছেন পুকোভস্কি। ৫টি ফিফটির পাশাপাশি সেঞ্চুরি আছে ৫টি। ৫টি সেঞ্চুরির ২টিকেই আবার রূপ দিয়েছেন ডাবল সেঞ্চুরিতে।
বিষণ্নতার কারণে আগে টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেকে দূরে রাখলেও এখন পুকোভস্কি ঘোষণা দিয়েছেন, টেস্ট ক্রিকেটে আসতে প্রস্তুত তিনি। গত সপ্তাহেই একবার বলেছেন, ‘আমার মনে হচ্ছে, আমি এখন ঠিক আছি। প্রতিদিনকার জীবন ও ক্রিকেট দুটিই ভালো চলছে। তবে নির্বাচকেরা আমাকে দলে নেবে কি না, সেটা তাঁদের ব্যাপার।’
পুকোভস্কির ঘোষণা আর ভারতের বিপক্ষে সিরিজের আগে হ্যারিসের সঙ্গে তাঁর জ্বলে ওঠা অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকদের নিশ্চয়ই মধুর এক সমস্যায় ফেলবে। একই সঙ্গে চাপ বাড়িয়ে দেবে টেস্ট দলের বর্তমান দুই ওপেনার জো বার্নস ও ডেভিড ওয়ার্নারের।