শেন ওয়ার্ন যখন খেলেছেন, বিশ্বের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানের কাছেই ছিলেন আতঙ্কের এক নাম। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানদেরও কি কম ভুগিয়েছেন তিনি! তবে সেসব ভোগান্তি ভুলে লঙ্কানরা শেন কিথ ওয়ার্নকে জায়গা দিয়েছে হৃদয়ে। আজ গলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্ট শুরুর আগে অর্জুনা রানাতুঙ্গাও সেটাই বলেছেন।
১৪৫ টেস্ট খেলে ২৫.৪১ গড়ে ৭০৮ উইকেট পেয়েছেন ওয়ার্ন। টেস্টে ক্যারিয়ারের ৫০০তম উইকেটটি তিনি পেয়েছেন গলেই। গত মার্চে ৫২ বছর বয়সে না–ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ওয়ার্ন। গলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আরেকটি টেস্ট ম্যাচের আগে তাঁকে স্মরণ করেছে শ্রীলঙ্কানরা। ম্যাচ শুরুর আগে ওয়ার্নকে নিয়ে কথা বলেছেন শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক রানাতুঙ্গা।
গল টেস্টের আগে ওয়ার্নকে স্মরণ করার একটি কারণও আছে লঙ্কানদের। ২০০৪ সালে সুনামিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল গল স্টেডিয়ামের। গল স্টেডিয়ামের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সেটা দেখতে শ্রীলঙ্কায় ছুটে গিয়েছিলেন ওয়ার্ন। সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য চ্যারিটি ম্যাচও খেলেছিলেন কিংবদন্তি লেগ স্পিনার।
সেসব দিনের কথা লঙ্কানরা কখনো ভুলবে না। রানাতুঙ্গা আজ ম্যাচ শুরুর আগে ওয়ার্ন-স্মরণে সেটাই বললেন, ‘সবাই তাকে অসাধারণ এক খেলোয়াড় হিসেবে জানে। কিন্তু সুনামির পর সে শ্রীলঙ্কানদের হৃদয়ের আরও কাছাকাছি চলে আসে।’
ওয়ার্নের মৃত্যুর খবর পেয়ে শ্রীলঙ্কাও যেন থমকে গিয়েছিল। সেটার কারণ যে সুনামির পর শ্রীলঙ্কায় ওয়ার্নের ত্রাণ দিতে ছুটে যাওয়া, রানাতুঙ্গা বললেন তা-ই। গল স্টেডিয়াম নতুন করে গড়ে তোলার জন্য ১০ লাখ ডলারেরও বেশি অর্থ তুলে দিয়েছিলেন ওয়ার্ন।
রানাতুঙ্গার নেতৃত্বে ১৯৯৬ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় শ্রীলঙ্কা। সেবার যে অস্ট্রেলিয়ার স্লেজিং অস্ত্রেই পন্টিং-ওয়াহদের বধ করার চেষ্টা করেছিলেন, রানাতুঙ্গা সেটাও বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়া সফর করতে গেলে দেখবেন তারা খুব নির্মম আচরণ করে। আমরা এটা (স্লেজিং) তাদের কাছ থেকে শিখেছি। অস্ট্রেলিয়ার কপাল খারাপ ১৯৯৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে আমরা এটা তাদের বিরুদ্ধেই প্রয়োগ করেছি।’
আমি মনে করি, মুরালি সব সময়ই শেনের চেয়ে একটি উইকেট বেশি নিতে চাইত। আমি নিশ্চিত শেনও তা–ই চাইত।
সুনামির পর গল আর শ্রীলঙ্কার জন্য একসঙ্গে কাজ করেছেন শ্রীলঙ্কার অফ স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরন ও শেন ওয়ার্ন। তবে মাঠে তাঁরা দুজন ছিলেন একে অন্যের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বী। রানাতুঙ্গা সেই বিষয় নিয়েও কথা বলেছেন, ‘আমি মনে করি, মুরালি সব সময়ই শেনের চেয়ে একটি উইকেট বেশি নিতে চাইত। আমি নিশ্চিত শেনও তা–ই চাইত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেললে আমরা মুরালির সেরাটা দেখতে পেতাম।’
রানাতুঙ্গা ছাড়াও আজ ওয়ার্ন-স্মরণ অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার সাবেক ক্রিকেটারদের মধ্যে ছিলেন অরবিন্দ ডি সিলভা, মুরালিধরন, রুমেশ কালুভিতারানা।