ওয়ান্ডারার্সের অসমান বাউন্সকেই দুষছেন তামিম

জোহানেসবার্গে হারের ব্যাখ্যা নেই তামিমের কাছেছবি: এএফপি

প্রথমে ব্যাটিং–ব্যর্থতা, এরপর বোলারদের অসহায়ত্ব—ওয়ান্ডারার্সে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে দেখতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা বাংলাদেশ দলের এই হতাশার ছবিটাই দেখে গেছেন। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্বচ্ছন্দে হারিয়ে ইতিহাস গড়া দলটির সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের কোনো মিল নেই।

প্রথম ম্যাচে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করে ৩১৪ রান করেছিল বাংলাদেশ। আজ টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করে মাত্র ১৯৪। যে রান ৩৭.২ ওভারেই টপকে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরেছে মূলত ৫০ ওভার ব্যাটিং করেও ২০০ রান করতে না পারায়। নিজেদের ভুল ছাড়া যে ব্যাটিং–ব্যর্থতার কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করাতে পারছেন না অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে শুরুতেই পথ হারিয়েছিল বাংলাদেশ
ছবি: এএফপি

ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক শন পোলকের প্রশ্নে তামিম বললেন, ‘এমন ম্যাচের ব্যাখ্যা করা একটু কঠিন। আমি উইকেটের দোষ দিতে পারি, আরও অন্যান্য বিষয়ের দোষ দিতে পারি। কিন্তু আমরাই ভুল করেছি। আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’

পোলকের ফিরতি প্রশ্নে অবশ্য ওয়ান্ডারার্সের অসমান বাউন্সের কথা বললেন তামিম, ‘পেস ও বাউন্স সামলে নেওয়া যায়। কিন্তু অসমান বাউন্স, এটার ব্যাখ্যা দেওয়া একটু কঠিনই। দক্ষিণ আফ্রিকার অর্জনকে খাটো করে দেখছি না। এটাও ঠিক, আমাদের আরেকটু ভালো করা উচিত ছিল।’

এমন উইকেটেও আরও ভালো ব্যাটিং করা যেত বলে মনে করেন তামিম। টপ অর্ডার যদি ব্যাটিং পাওয়ার প্লেটা পার করে দিতে পারত, তাহলে ওয়ান্ডারার্সের ফাটল ধরা উইকেটেও আড়াই শ রান করা সম্ভব ছিল আর তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়া করার কাজটা এত সহজ হতো না। তামিমও বললেন এ কথা, ‘বল উঁচু–নিচু হয়েছে, কিন্তু আমাদের সুযোগ ছিল আরেকটু ভালো করার। ২৩০-২৪০ রান পর্যন্ত যাওয়া সম্ভব ছিল। এরপর যেকোনো কিছুই হতে পারত। যদি আপনি দ্বিতীয় ইনিংসে দেখেন, বল কিন্তু তখনো উঁচু–নিচু হচ্ছিল।’

উইকেটের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে খেলতে পারেননি ব্যাটসম্যানরা
ছবি: এএফপি

নতুন বলের উজ্জ্বলতা কমে এলে ব্যাটিং সহজ, সেটি তো আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজের জুটিতেই প্রমাণিত। দুজন মিলে ৮৬ রান যোগ করে বাংলাদেশের রানটাকে দুই শর কাছাকাছি নিয়ে যান। ম্যাচ হারের হতাশায় মধ্যেও আফিফ-মিরাজের জুটি জ্বলজ্বল করছে। তামিমকেও দুজনের প্রশংসা করতে হলো, ‘ওরা দুজনই ভালো ব্যাটিং করেছে। যখন ১০০ রানও কঠিন মনে হচ্ছিল, ওদের কারণেই আমরা ১৯০ রান করতে পেরেছি। আফিফ ভালো করেছে। মিরাজ আবারও ভালো করেছে। এসব আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক।’

আফিফ-মিরাজের সাফল্যে বাকিদের ভুলগুলো ভুলে যেতে রাজি নন তামিম। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা ও লুঙ্গি এনগিডিকে আরও ভালোভাবে সামলানো উচিত ছিল বলে মনে করেন তিনি, ‘আমরা এই হারকে হালকাভাবে নিতে পারি না। আমরা বেশ কিছু ভুল করেছি। ওরা ভালো খেলেছে। আমরা জানতাম, ওরা প্রথম ১০ ওভারে খুব করে উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করবে। ওদের দুই বোলারই বিশ্বমানের। আমাদের ওদের ভালো খেলতে হবে, যেমনটা আমরা প্রথম ম্যাচে করেছি। পরে আমরা রান করতে পারব। মাঝের ওভারে ওদের ওপর পাল্টা আক্রমণ করতে পারব। কিন্তু প্রথম ১০ ওভারে আমরা কেমন করি, এটা গুরুত্বপূর্ণ।’

আসলেই তা–ই। প্রথম ম্যাচে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৩ রান করেছিল বাংলাদেশ আর দ্বিতীয় ম্যাচে ১০ ওভার শেষে স্কোর ৩ উইকেটে ৩০। পার্থক্যটা কোথায় হয়ে গেছে, বোঝা গেল তো এবার!