২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

এমন লজ্জায় আগে পড়েনি বাংলাদেশ

ওয়ানডেতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশ ধবলধোলাই হয়েছে ৩০ বার। ১০-২০ বছর আগে ধারাবাহিক হোঁচট খাওয়ার দিনে ধবলধোলাই হওয়াটাই যেন বাংলাদেশের ‘নিয়তি’ ছিল। গত চার বছরে ওয়ানডেতে নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করার পর শ্রীলঙ্কার কাছে ধবলধোলাই হওয়া হজম করা কঠিনই বাংলাদেশের দর্শকদের। র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের চেয়ে নিচে আছে এমন দলের কাছে কখনো ধবল ধোলাই খেতে হয়নি!
শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ এমন উদযাপনের সুযোগ কমই পেয়েছে। ছবি: এএফপি
শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ এমন উদযাপনের সুযোগ কমই পেয়েছে। ছবি: এএফপি

খুব ক্লান্তির এক সিরিজ গেল বাংলাদেশের। টানা হার সেই ক্লান্তিটা যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ক্লান্তির মধ্যে আরেক ভোগান্তি, কলম্বো থেকে আজ সকালে নির্ধারিত সময়ে ঢাকাগামী শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি ছাড়েনি। বেলা সাড়ে ১১টার জায়গায় তাই দুপুর আড়াইটায় ঢাকায় এসে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। ধরাবাঁধা নিয়ম না থাকলেও অলিখিত রীতি অনুযায়ী সব সময়ই বিমানবন্দরে কথা বলেন দলের কেউ না কেউ। আজ সে সবের কিছুই হলো না। শ্রীলঙ্কার কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ক্রিকেটার বা কোচিং স্টাফ কিংবা কী বলবেন, কী বলার আছে! র‍্যাঙ্কিংয়ের নিচের কোনো দলের কাছে ওয়ানডেতে ধবলধোলাই হওয়ার লজ্জায় বাংলাদেশ যে আগে কখনো পড়েনি! বিমানবন্দরে দলের সবাই যেন পালিয়ে বাঁচলেন। শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশ লজ্জার এক রেকর্ড সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে। না, ধবল ধোলাইয়ের লজ্জা নতুন কিছু তো নয়। কিন্তু র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশেরও নিচে আছে এমন দলের হাতে এই কলঙ্ক তিলক আগে কখনো পরতে হয়নি।

বিসিবি যে দলের এই ব্যর্থতায় ভীষণ উদ্বিগ্ন, সেটি দুপুরে জানালেন বোর্ডের মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস, ‘এটা আমাদের আসল চেহারা না। আমরা এর চেয়ে ভালো খেলি। হতে পারে একটা সিরিজ খুব খারাপ যায়, একটা সিরিজ খুব ভালো যায়। ইংল্যান্ডে গিয়ে অনেক ধবলধোলাই হয়, অস্ট্রেলিয়াতেও অনেকে ধবলধোলাই হয়। এটা নিয়ে চিন্তিত নই। চিন্তিত অনেকগুলো ঘাটতি নিয়ে। সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে। খুব বাজে ফিল্ডিং হয়েছে আমাদের। আমরা দল হিসেবে খেলিনি।’

জালাল ইউনুস যে ধবলধোলাইয়ের কথা বললেন, বাংলাদেশ তাদের ৩৩ বছরের ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ৩০ বার ধবলধোলাই হয়েছে। এ বছরই টানা দুবার হলো। ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারের পর এবার শ্রীলঙ্কার কাছেও একই ফল। গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ চার বার ওয়ানডেতে ধবলধোলাই হয়েছে। এর মধ্যে এ বছরই হলো দুবার। ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮—এই চার বছরে বাংলাদেশ মাত্র দুবার ধবলধোলাই হয়েছে—একটি নিউজিল্যান্ডে আরেকটি দক্ষিণ আফ্রিকায়। এই সময়ে ব্যর্থতার চেয়ে বাংলাদেশের সাফল্য বেশি ছিল বলে ধবলধোলাই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়নি। কিন্তু এবার যে হচ্ছে, সেটি বিসিবির নীতিনির্ধারকদের কথায় বোঝা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রথমবার দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছে ১৯৯৯ সালের অক্টোবরে। এর পর হয়েছে আরও ২৯ বার। টেস্ট-খেলুড়ে সবগুলো দেশের কাছে ধবলধোলাই হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা থাকলেও এবার শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যে লজ্জাটা পেল বাংলাদেশ, যেটি অতীতে কখনো হয়নি। র‍্যাঙ্কিং প্রথা চালু হওয়ার পর বাংলাদেশ নিচের দলের কাছে কখনো ধবলধোলাই হয়নি। হ্যাঁ, ২০১০ সালে হল্যান্ডের কাছে বাংলাদেশ হেরেছিল। তবে সে সফরে মাত্র এক ওয়ানডে ছিল। লঙ্কানদের কাছে সিরিজ বাজেভাবে হারের পরও বাংলাদেশ ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে সাতেই আছে। তবে সিরিজটা ৩-০ ব্যবধানে জিতে আটে থাকা শ্রীলঙ্কা রেটিং পয়েন্টে অনেক দূরত্ব কমিয়েছে।