এবার ক্যানসারে আক্রান্ত ক্রিস কেয়ার্নস
বিপদ যেন কাটছেই না ক্রিস কেয়ার্নসের। গত আগস্টে হৃদ্যন্ত্রের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় এক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক এই অলরাউন্ডার।
জানা গিয়েছিল, কেয়ার্নসের হৃদ্যন্ত্রের মহাধমনিতে গুরুতর সমস্যা ধরা পড়েছে। যে কারণে হৃদ্যন্ত্রের অস্ত্রোপচার করা হয় তাঁর।
অস্ত্রোপচারের সময় বাড়তি বিপদ হিসেবে যোগ হয়েছিল স্ট্রোক। ফলে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হন তিনি। কেয়ার্নসের আইনজীবী অ্যারন লয়েডের এক বিবৃতি অনুযায়ী তখন জানা যায়, চলাফেরার শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন কেয়ার্নস।
সেরে উঠতে সামনে দীর্ঘ পুনর্বাসনপ্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হবে তাঁকে।
সেই দীর্ঘ পুনর্বাসনপ্রক্রিয়াই শেষ হয়েছিল গত সপ্তাহে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন ৫১ বছর বয়সী এই তারকা। কিন্তু ছাড়া পেয়েই আরেক বিপদে পড়েছেন।
নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, অন্ত্রের ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। নিজের এই নতুন শারীরিক সমস্যার কথা নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন কেয়ার্নস, ‘গতকাল আমাকে বলা হয়েছে, আমার অন্ত্রে ক্যানসার হয়েছে। আমার জন্য ব্যাপারটা অনেক বড় চমক হয়েই এসেছে। কারণ, আমি এমনটা প্রত্যাশা করিনি। তাই এখন আবার শল্যচিকিৎসক আর বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসে ঠিক করব, আমার কী করা উচিত। আমি সব সময় ভাবি, জীবনের এই পর্যায়ে আসতে পারার জন্য আমি কতটা সৌভাগ্যবান। জীবনে যা যা করেছি, এর জন্য আমি কতটা কৃতার্থ।’
ন্যাশনাল ফুটবল লিগের (এনএফএল) কিংবদন্তি তারকা টম ব্র্যাডি কিছুদিন আগেই বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন। আর দশজন ভক্তের মতো যা নাড়া দিয়ে গিয়েছিল ক্রিস কেয়ার্নসকেও।
কিন্তু সপ্তাহ শেষে ব্র্যাডির অবসরের কষ্ট কেয়ার্নসের কাছে ছাপিয়ে গেছে নিজের ক্যানসারের খবরে, ‘ভেবেছিলাম, টম ব্র্যাডির অবসরের খবরটাই এই সপ্তাহের সবচেয়ে বাজে খবর হবে। কিন্তু দেখা গেল, টিবি১২–এর অবসরের খবরটা অনেক বড় ব্যবধানেই দ্বিতীয় হয়েছে!’
আরেক লড়াইয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন কেয়ার্নস, ‘খুব বাজে সপ্তাহ যে কেটেছে, তা-ও নয়; ছেলেদের সঙ্গে খেলাধুলা করেছি, নোয়ার (ছেলে) জন্মদিনও পালন করেছি। আরও একটা লড়াই সামনে। আশা করি, প্রথম রাউন্ডেই এই লড়াইয়ের বিপক্ষে বিজয়ী হব।’
১৯৮৯ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৬২টি টেস্ট ও ২১৫টি ওয়ানডে খেলেছিলেন কেয়ার্নস। টেস্টে নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩৩ গড়ে ৩ হাজার ৩২০ রান করেছেন কেয়ার্নস। উইকেট নিয়েছেন ২১৮টি। শতক করেছেন ৫টি ও ২২টি অর্ধশতক। ওয়ানডেতে বেশি কার্যকর ছিলেন সাবেক এই অলরাউন্ডার।
২০১ উইকেট নিয়েছেন এ সংস্করণে। ২০০০ সালে উইজডেনের বর্ষসেরা পাঁচ ক্রিকেটারের একজন হয়েছিলেন কেয়ার্নস। স্ত্রী মেল ও সন্তানদের নিয়ে গত কয়েক বছর ক্যানবেরায় বসবাস করছিলেন তিনি।
একসময় বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ভাবা হতো তাঁকে। ২০০০ আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দারুণ এক শতক করে জিতিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডকে। কেয়ার্নসের বাবা ল্যান্সও নিউজিল্যান্ডের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন।