উমরানদের গতি দেখে খুশি, আবার দুঃখীও গাভাস্কার
ভারতে এককালে বড় অভাব ছিল গতিতারকাদের। যুগ যুগ ধরে মূলত সুইং বোলারদের সুযোগ দিয়ে যাওয়া ভারতে পেস আক্রমণের ভার সামলেছেন জাভাগাল শ্রীনাথ, ভেঙ্কটেশ প্রসাদ, অজিত আগারকার, চেতন শর্মা, জহির খান, বলবিন্দর সিং সান্ধু, আশিস নেহরারা।
ফর্মে থাকলে প্রত্যেকেই দুর্দান্ত বোলার, কিন্তু তাঁদের কাউকে শোয়েব আখতার, ব্রেট কিংবা শন টেইটদের মতো বুনো গতির পেস তারকাদের কাতারে রাখা যাবে না হয়তো। যে অভাবটা গত কয়েক বছরে যশপ্রীত বুমরা একটু হলেও মিটিয়েছেন। কিন্তু বুমরার পর? তেমন গতিসম্পন্ন বোলার কেউই ছিলেন না।
এবার আইপিএল দেখিয়েছে, শোয়েব-লি দের সঙ্গে টেক্কতা দেওয়ার জন্য এখন ভারতও প্রস্তুত। এক উমরান মালিকই গতির ঝড় তুলে কাঁপিয়ে দিচ্ছেন টুর্নামেন্ট।
শুধু উমরানই নন, রাজস্থান রয়্যালসের কুলদীপ সেন, লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের মহসিন খান, গুজরাট টাইটানসের যশ দয়াল—প্রত্যেকেই বুঝিয়েছেন, গতি নিয়ে ভারতের হাপিত্যেশ করার দিন শেষ। বুমরার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিশ্বমঞ্চে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন প্রত্যেকের চোখেমুখে।
যথেষ্ট গর্ব করার মতো বিষয়। ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান সুনীল গাভাস্কার গর্ব করছেনও। কিন্তু ওই যে নিজে যেহেতু ব্যাটসম্যান, সে কারণে তরুণ ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা উমরানদের গতির তোপ সামলাতে গিয়ে যেভাবে লেজেগোবরে অবস্থায় পড়ে যাচ্ছেন, সেটা দেখে তাঁর খারাপও লাগছে।
স্টার স্পোর্টসের আইপিএলভিত্তিক অনুষ্ঠানে সে আফসোসটাই ঝরেছে গাভাস্কারের কণ্ঠে, ‘পেস এমন একটা জিনিস, যা আমি সব সময় পছন্দ করি। কিন্তু অন্য পেসারদের সঙ্গে উমরানকে যে বিষয়টা আলাদা করে, সেটা ওর নিখুঁত জায়গায় বল ফেলার ক্ষমতা। যেটা অবশ্য কুলদীপ, মহসিনদের মতো পেসারদের অত নেই। তাই আপনি যদি উমরানের মতো নিখুঁত জায়গায় বল ফেলতে পারেন, এর অর্থ আপনি ব্যাটসম্যানকে কোনোভাবেই সুযোগ দিচ্ছেন না।’
আর সেখানেই ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তির ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছেন গাভাস্কার, ‘ও এতটাই জোরে বল করে যে আপনি বুঝবেন না কী করা উচিত। ও, কুলদীপ, যশ, মহসিনরা নিয়মিত ১৪০ কিলোমিটারের ওপর গতিতে বল করে যাচ্ছে, ব্যাটসম্যানদের সুযোগ দিচ্ছে না। ওদিক দিয়ে ব্যাটসম্যানদের কথাটা সামগ্রিকভাবে বিবেচনা করলে একটু খারাপ লাগে। যারা সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফিতে ভালো করছে, বোলারদের পিটিয়ে ছাতু বানাচ্ছে, কারণ তারা এমন গতির মুখোমুখি হচ্ছে না সেখানে। কিন্তু এখানে (আইপিএল) আসার পর পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে। তখন তাদের বাড়তি গতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আজীবন ফ্রন্টফুটে খেলে আসার পর এখন গতির তোপে তাদের ব্যাকফুটে খেলতে হচ্ছে। যেটা নতুন ব্যাটসম্যানরা আগে কখনো করেনি। তাই উমরানের মতো বোলারদের উঠে আসার কারণে ভালো যেমন লাগছে, নতুন দিনের ব্যাটসম্যানদের জন্য চিন্তাও হচ্ছে।’