আমিরের পক্ষে ব্যাট করছেন আফ্রিদি
মোহাম্মদ আমির, সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটার!
বিশেষণ হিসেবে নামের আগে সাবেক বসানোর সুযোগটা আমির নিজেই সৃষ্টি করেছেন। মাত্র ২৮ বছর বয়সেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন আমির। গত ডিসেম্বরে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করে দেশে ফেরার আগেই আচমকা নিজের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন বাঁহাতি ফাস্ট বোলার। বলেছেন, পাকিস্তান ক্রিকেটের কর্তাব্যক্তিরা যে আচরণ করছেন, তাতে খেলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে।
স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারিতে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা শেষে আমিরকে পাকিস্তান দলে ফেরানোয় সবচেয়ে বড় অবদান ছিল শহীদ আফ্রিদির। নিজের অবসরবার্তাতেও আফ্রিদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন আমির। এখন আবার আমিরের পক্ষে ব্যাট ধরেছেন আফ্রিদি। সাবেক অলরাউন্ডার বলছেন, আমিরের বিষয়টি আরেকটু ভালোভাবে সামলানো উচিত ছিল বোর্ডের।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের টেস্ট দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন আমির। দীর্ঘ সংস্করণের ক্রিকেট থেকে তাঁর অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত পাকিস্তানের কোচ মিসবাহ-উল-হক মেনে নিতে পারেননি। একই সঙ্গে কোচ ও প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব পাওয়া মিসবাহ সেটা পরের সিরিজেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। জিম্বাবুয়ের সঙ্গে সিরিজে ডাক পাননি আমির।
সে সময় বলা হয়েছিল, নতুনদের বাজিয়ে দেখার জন্য বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আমিরকে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড সফরের দলেও উপেক্ষিত ছিলেন আমির। ওদিকে দলের বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিস তো নিয়মিতই সমালোচনা করেছেন আমিরের। বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলার জন্যই টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন আমির, বরাবরই এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার।
অবসরের বার্তায় ওয়াকারের প্রতি ক্ষোভ ঝেড়েছেন আমির। বলেছেন, দলে এমন আবহ সৃষ্টি করা হয়েছে যেন অবসর নিতে বাধ্য হন তিনি। আফ্রিদিও বলছেন, পাকিস্তানের ক্রিকেটে এমন কিছু নতুন নয়। কোচের সঙ্গে মতের অমিল পাকিস্তান ক্রিকেটেরই ‘ঐতিহ্য’। তবে দেশের স্বার্থে দুই পক্ষেরই আলোচনায় বসা উচিত ছিল। আজ লাহোরে আমির প্রসঙ্গে আফ্রিদি বলেছেন, ‘দেশের সম্মানের কথা চিন্তা করে হলেও একসঙ্গে কাজ করা উচিত ছিল।’
ওয়াকার ইউনিসের সঙ্গে তাঁর নিজেরও যে সমস্যা হতো, সেটাও বলেছেন আফ্রিদি। সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, আমিরের ভবিষ্যৎ নিয়ে দল কী ভাবছে, সেটা পরিষ্কারভাবে জানালেই এ সমস্যা হতো না।
এর আগেও আমিরের অবসরের ঘোষণায় নিজের অসন্তুষ্টি লুকাননি আফ্রিদি। গত ডিসেম্বরে যখন সবাইকে চমকে দেওয়া আমিরের ঘোষণাটা এল, তখনই আফ্রিদি বলেছিলেন, ওয়াকার ইউনিস যা করেছেন, সেটা ভুল। তবে আমিরও একটু তাড়াহুড়া করছেন বলে তাঁর ধারণা, ‘আমি বুঝতে পারছি না কেন সে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি যখন জানলাম, তখন আমিরের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বলেছি, আমার ব্যক্তিগত মত হলো, এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।’
লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে একই দলে খেলা আমিরকে স্পট ফিক্সিংয়ের নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর থেকেই দেখভাল করেছেন আফ্রিদি। পাকিস্তানের এক দশকের সেরা পেসারকে এভাবে হারিয়ে ফেলায় সাবেক সতীর্থ ইউনিসের দায়টাও অনেক বড় মনে হয়েছিল আফ্রিদির, ‘ওয়াকার যদি আমিরের ব্যাপারে সৎ হতেন এবং অন্যদের মতো ওর সঙ্গেও একই ধরনের আচরণ করতেন, তাহলে আমিরকে ফোন করে এ ব্যাপারে কথা বলতেন। সেটা হয়নি, আর এতেই আমির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেটা আমার চোখে ভুল।’