‘আমি থাকতে বার্সেলোনা মাদ্রিদের আট পয়েন্ট পেছনে ছিল, এখন তার প্রায় দ্বিগুণ’
গলফ টুর্নামেন্ট কাভার করতেই ৫০ জনের মতো সাংবাদিক হাজির হয়েছেন দেখেই হেসেছেন রোনাল্ড কোমান। সরাসরি বলেছেন, ‘নিশ্চিতভাবেই আপনারা কোমান কাপের জন্য আসেননি।’ গত ২৮ নভেম্বরই বার্সেলোনার সাবেক কোচ হয়ে গেছেন রোনাল্ড কোমান। বিশ্বকাপের পর আবার নেদারল্যান্ডসের দায়িত্ব নেবেন। কিন্তু বার্সেলোনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এখনো শেষ বলা যাচ্ছে না।
বার্সেলোনার প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের নায়ক, ক্লাব কিংবদন্তি—বার্সেলোনার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তাই চিরস্থায়ী। আর যেভাবে কোচিং থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই অতৃপ্তিটাও আছে।
বার্সেলোনা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর ডাচ মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। তবে বার্সেলোনার সংবাদমাধ্যম তাঁর নাগাল পাচ্ছিল না। কোমান কাপ অব গলফ টুর্নামেন্টের সুবাদে আজ সে সুযোগ পেয়েছেন সাংবাদিকেরা। এই টুর্নামেন্ট থেকে প্রাপ্ত লাভ ক্রুইফ ফাউন্ডেশনে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া কোমানকে কঠিন সব প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছিল। কিন্তু কোমান মনে করিয়ে দিয়েছেন, তিনি যে অবস্থায় ছেড়ে এসেছেন, বার্সেলোনা তার চেয়ে খুব বেশি এগোয়নি।
লা লিগায় বার্সেলোনা এখন দুইয়ে আছে। কোমান যখন দায়িত্ব থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন, তখন বার্সেলোনা ৯–এ ছিল। দলের খেলার ধরন নিয়ে এখন সন্তুষ্ট কাতালান সমর্থকেরা। এ নিয়ে কোমানকে প্রশ্ন করতেই ডাচ কোচের জবাব, ‘সত্য হলো, আমি যখন ছিলাম, ক্লাবের পরিস্থিতি এখনো তেমন আছে, এর মানে হলো, সব সময় কোচ বদলালেই আপনি উন্নতি করবেন, এটা সত্য না। আমি শুধু একটা জিনিস চাইব, তারা যেন জাভিকে সমর্থন দেয়। কোচই সব সময় দায়ী না। আমি চাইব, আমাকে যে সমর্থন দেয়নি, তা যেন ওকে দেয়। আমি আশা করব, সভাপতি এ থেকে শিক্ষা নেবে এবং জাভিকে সমর্থন দেবে।’
জাভি তাঁর জায়গায় এসেছেন। এতে কোমানের কোনো আপত্তি নেই। হাজার হলেও মনেপ্রাণে এখনো তিনি বার্সেলোনার। তাই ক্লাবের ব্যর্থতার দায় জাভির কাঁধে দিতে বারণ করে দিয়েছেন কোমান, ‘ক্লাবের অবস্থা খুবই মন খারাপ করে দেওয়া, এটা আমাকে কষ্ট দেয়। আমি এখনো বার্সেলোনায় থাকি। জানুয়ারিতে আমি নেদারল্যান্ডসের কোচ হব। তবে আমি জাভিকে সর্বোচ্চ সমর্থন দিতে বলি। কারণ, ও ক্লাবের কিংবদন্তি, ক্লাবের ভেতরের একজন। বার্সেলোনার বর্তমান অবস্থার জন্য ও দায়ী নয়।’
জাভির প্রতি এমন সমর্থনেও সাংবাদিকদের মন জিততে পারেননি। খুঁচিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছে জাভির বার্সেলোনা তাঁর বার্সেলোনার চেয়ে ভালো কি না। এমন প্রশ্নে অহম জেগে উঠেছিল কোমানের। বলেছেন, ‘হ্যাঁ, নিশ্চিতভাবেই সে কিছু জিনিসে উন্নতি এনেছে। কারণ, তারা তিনজন ফরোয়ার্ড কিনেছে, যারা সামনে খেলতে পারে। কিন্তু তুলনা টানা কখনো ভালো না। আমি যখন সরে গেছি, তখন বার্সেলোনা মাদ্রিদের চেয়ে আট পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল। এখন তারা প্রায় দ্বিগুণ পিছিয়ে। আমার কাজ যেমন জটিল ছিল, জাভির কাজটাও তেমন জটিল। ক্লাবেরই এই অবস্থা। মিথ্যা বলার দরকার তো নেই। ও যে ঘরের মাঠে শেষ কয়েকটা ম্যাচ হেরেছে, এর পেছনে তো কিছু কারণ আছে।’
কোমান অবশ্য একটু ভুল বলেছেন। ২৮ অক্টোবর যখন ছাঁটাই হয়েছেন, তখন ১০ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট ছিল বার্সেলোনার। আর রিয়াল মাদ্রিদের ছিল ১০ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট। অর্থাৎ পার্থক্যটা ছিল ৬ পয়েন্টের। ৩৩ ম্যাচ শেষে সেই ব্যবধান এখন ১৫ পয়েন্ট। অর্থাৎ দ্বিগুণ নয়, আড়াই গুণ পিছিয়ে বার্সেলোনা।