দেখতে দেখতে ২৫ বছর হয়ে গেল! একটু আলংকারিক ভাষায় বললে ‘রজত জয়ন্তী’। শুনতে হয়তো নাটকীয় শোনাবে, কিন্তু সত্যি বলছি, আমার মনে হয়, এই তো সেদিন...। সময়, জিপসি সময় কত দ্রুতই না বয়ে যায়!
মাঝের ২৪ বছরে বলতে গেলে প্রতিটি ১৩ এপ্রিলেই ফিরে এসেছে সেই স্মৃতি। ‘রজত জয়ন্তী’ একটু বাড়তি তাৎপর্য দাবি করে বলে এবার একটু বেশিই আসছে। মনে পড়ছে উৎসবমুখর কিলাত ক্লাব, সেই পর্যন্ত যেতে আবেগময় সেই যাত্রা। ১৯৯৭ সালের এই দিনেই কুয়ালালামপুরের কিলাত ক্লাব মাঠে কেনিয়াকে হারিয়ে বাংলাদেশের আইসিসি ট্রফি জয়। যে জয় উৎসবের রঙে রঙিন করে হয়েছিল পুরো বাংলাদেশ।
সেই উৎসবে আমি ছিলাম না। কিলাত ক্লাব মাঠে যে জয়োৎসব, সেটির অংশ হয়ে থাকতে পারাতেই সান্ত্বনা খুঁজতে হয়েছিল আমাকে। ছিলাম না ১৪ এপ্রিল মানিক মিয়া এভিনিউয়ে আইসিসি ট্রফিজয়ী দলকে দেওয়া বিশাল গণসংবর্ধনাতেও। আমি তখনো কুয়ালালামপুরে। শারীরিক ও মানসিক শক্তির পরীক্ষা নেওয়া এক সফরের ধকলে প্রায় বিধ্বস্ত।
আইসিসি ট্রফির মূল টুর্নামেন্ট ছিল ২১ দিনের। বাংলাদেশ দল কুয়ালালামপুর গিয়েছিল মনে হয় দিন দশেক আগে। মালয়েশিয়ার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার ছিল, ছিল প্রস্তুতি ম্যাচও। আমি এরও আগে। ক্রিকেটের আগে ফুটবল কাভার করতে।
ঘটনাচক্রে বিশ্বকাপ ফুটবলের বাছাই পর্বে বাংলাদেশের গ্রুপের প্রথম রাউন্ডও সেবার কুয়ালালামপুরে। যেটি শুরু আইসিসি ট্রফি শুরুর আট দিন আগে। স্বাগতিক মালয়েশিয়া ছাড়াও বাংলাদেশের গ্রুপে সৌদি আরব ও তাইনিজ তাইপে। শুধুই আইসিসি ট্রফি কাভার করলে যেদিন যেতাম, তার সপ্তাহখানেক আগে গেলে দুটিই কাভার করা যায়।
তখন ব্যাচেলর জীবন, কোনো পিছুটান নেই। রুমে তালা মেরে চলে গেলেই হয়। আমি তাই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের আগেই কুয়ালালামপুরে। যে কারণে একই দিনে বাংলাদেশের ফুটবল ও ক্রিকেট দুই জাতীয় দলেরই ম্যাচ কাভার অনন্য অভিজ্ঞতাও হয়েছে। কুয়ালালামপুর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে সুগোই বুলোতে যেদিন হল্যান্ডের সঙ্গে ক্রিকেট দলের প্রস্তুতি ম্যাচ, সেদিনই সন্ধ্যায় বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে চাইনিজ তাইপের সঙ্গে খেলা। মনে আছে, ফুটবলের প্রেসবক্সে বসে সেদিন হল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রিকেটে ৫ উইকেটে পরাজয়ের ম্যাচ রিপোর্ট লিখেছিলাম।
প্রস্তুতি ম্যাচে হল্যান্ডের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ দল, কেনিয়ার বিপক্ষেও নিশ্চিত হার থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল বৃষ্টি। টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই জানা ছিল, এই দুটি দলই হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রবল প্রতিপক্ষ। ১৯৯৪ আইসিসি ট্রফিতে দুই দলের কাছেই হেরেছিল বাংলাদেশ। হেরেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছেও। এই তিনটি দলই পরে বাংলাদেশের স্বপ্নের শবদেহ মাড়িয়ে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ খেলে। কাকতালীয়ই বলতে হবে,১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ একে একে হারায় এই তিন দলকেই।
আগের আইসিসি ট্রফিতে বিপর্যয় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ওপর চাপটা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছিল এবার। প্রকৃতিতে ভিন্ন হলেও সাংবাদিকদের চ্যালেঞ্জও কম ছিল না। আমার সাংবাদিকতা জীবনের কঠিনতম অ্যাসাইনমেন্ট বেছে নিতে গেলে এর ধারেকাছেও কিছু আসবে না। আর কোনো টুর্নামেন্ট কাভার করতে গিয়ে যে এত সব প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়তে হয়নি।
মিডিয়ার জন্য ন্যুনতম সুযোগ সুবিধা নেই। প্রেসবক্স তো নেই-ই, মাঠের পাশে বসার জন্য চেয়ার-টেবিল, মালয়েশিয়ার রাগী সূর্যের তেজ থেকে বাঁচতে একটা ছাতা পেতেও প্রায় কাকুতি-মিনতি করতে হয়েছে প্রতিটি ম্যাচে। তা পাওয়া গেলেও সেগুলো বয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে সাংবাদিকদেরই। সংযুক্ত আরব আমিরাত ম্যাচে ছাতাও জোটেনি। কাজ করতে হয়েছে তীব্র রোদে পুড়তে পুড়তেই।
সেমিফাইনাল ও ফাইনালে অবশ্য ছায়ায় বসার একটা ব্যবস্থা হয়েছিল। কিলাত ক্লাবের দোতলায় টানা কিছু চেয়ার, কিন্তু লেখার টেবিল নেই। তার চেয়েও বড় সমস্যা, নিচের অনেকটা মাঠ দেখা যায় না সেখান থেকে। যোগ হয়েছিল আরেকটি বিচিত্র সমস্যাও। একপাশে 'মিডিয়া' লেখা থাকলেও আরও অনেকেরই বসার জায়গা ওই দোতলায়। যাদের প্রায় সবাই টুর্নামেন্টের স্পনসরের জ্বলজ্যান্ত বিজ্ঞাপন হয়ে উঠেছিলেন।
নিচে কিলাত ক্লাবের ক্যানটিনে এই এলাকায় যে অ্যালকোহল নিষিদ্ধ, এটি বেশ বড় করে লেখা। কিন্তু দোতলাতে এই নিষেধাজ্ঞার বালাই নেই। সাংবাদিকদের বসার জায়গার পাশেই স্পনসর হওয়ার সুবিধা কাজে লাগিয়ে কার্লসবার্গ বিয়ার বিক্রি হচ্ছে, তা দেদারসে গিলছে সবাই এবং জগতের সব কিছুই তাদের কাছে মহা আনন্দের উপলক্ষ হয়ে উঠছে। হাতে কাজ না থাকলে এসবে মজাই লাগত। কিন্তু অমন হা হা হো হো হাসি আর চিৎকার-চেঁচামেচির মধ্যে ক্রিকেট রিপোর্টিং করা কঠিন এক চ্যালেঞ্জ। বল বাই বল কমেন্ট্রি-পূর্ব যুগ, তার ওপর ক্রিকেট ম্যাচ কাভার করতে অপরিহার্য স্কোরারও নেই।
ইউনিভার্সিটি অব মালয় মাঠে ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে অস্থায়ী তাবুর নিচে বসা স্কোরারের সঙ্গে কথা বলতে গেছি, হা রে রে রে করে তেড়ে এলেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা—‘ডোন্ট ডিস্টার্ব হার!’ ’ডোন্ট ডিস্টার্ব হার!’
স্কোরারের কাজটা যে নিজেরই করতে হবে, সেটি অবশ্য প্রথম ম্যাচেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। সেই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনা, যারা আগের বছর ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে লাতিন আমেরিকান চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ক্রিকেটেও যে 'কোপা আমেরিকা' আছে, সেটি ওই আইসিসি ট্রফিতে গিয়েই প্রথম জেনেছি।
ইউনিভার্সিটি অব মালয় মাঠে ম্যাচ শুরু হওয়ার আগে অস্থায়ী তাবুর নিচে বসা স্কোরারের সঙ্গে কথা বলতে গেছি, হা রে রে রে করে তেড়ে এলেন স্থানীয় এক কর্মকর্তা—‘ডোন্ট ডিস্টার্ব হার!’ ‘ডোন্ট ডিস্টার্ব হার!’
স্কোরার ছিলেন এক তরুণী, আবার ভালোমতো তাকিয়ে দেখলাম, মোটেও অন্য কোনো কারণে ডিস্টার্ব করার মতো চেহারা নয়। ওই কর্মকর্তাকেও তা বোঝানোর চেষ্টা করা হলো। ক্রিকেটে ম্যাচ রিপোর্টিং করতে কেন স্কোরারের সাহায্য অপরিহার্য, এই মৌলিক বিষয়টাও। কোনো লাভ হলো না। মালয়েশিয়ার মানুষকে ক্রিকেট শেখানোর জন্য যে টুর্নামেন্টের আয়োজন, স্কোরারেরও হাতেখড়ি হচ্ছে তাতেই। স্কোরারের মুখ দেখেই বোঝা গেল, খেলোয়াড়দের চেয়েও বেশি টেনশনে তিনি, সাংবাদিকদের সাহায্য করবেন কীভাবে?
সেই ম্যাচের পর স্কোরকার্ড পেতেও ভোগান্তির সীমা নেই। টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল হোটেল ক্রাউন প্লাজায় আইসিসির সেক্রেটারিয়েটে সেটির খোঁজ করার পর এ ওকে দেখিয়ে দেয়, তিনি আবার আরেকজনকে। ম্যাচ রিপোর্ট করতে স্কোরকার্ডের প্রয়োজনীয়তাও বোঝাতে হলো তাদেরকে। অবশেষে একজন তা বুঝতে পেরেছেন বলে মনে হলো। পেরেছেন বলেই পাওয়া গেল বিশাল এক আশ্বাসবাণী—‘স্কোরকার্ড ফাইনাল করা হচ্ছে। আপনারা আগামীকালই তা পেয়ে যাবেন।’ যা শুনে মানুষ কখন হাসব না কাঁদব দ্বিধায় পড়ে যায়, সেটি সম্যক উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম।
কিন্তু ম্যাচ রিপোর্ট লিখতে স্কোরকার্ড তো লাগবেই। মাঠে স্কোরবোর্ডের অবস্থা কহতব্য ছিল না। স্কোরারের সহায়তা না পাওয়ার কথা বলেছিই। স্কোরকার্ড না পেলে তো সর্বনাশ। আচ্ছা, আচ্ছা, বাংলাদেশ দলের তো নিজস্ব স্কোরবুক আছে। সেটি আনতে ম্যানেজার গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত। কিন্তু হোটেল রুমের ‘দ্বার’–এ গিয়ে সেই অভিযানের অপমৃত্যু। লিপু ভাই রুমে নেই।
মেজাজ ততক্ষণে চরমে। ম্যাচ শেষ হয়েছে বেলা ৩টায়, অথচ ৭টায়ও লিখতে বসতে পারছি না। কী করি? কী করি? উদ্ধারকর্তা হয়ে এলেন আর্জেন্টিনা দলের ম্যানেজার ক্রিস্টিয়ান নিনো। লিফটের সামনে দেখা, সেখানেই পরিচয়। তাঁর কাছ থেকে আর্জেন্টিনা দলের স্কোরবুক নিয়ে তা ফটোকপি করার পর সত্যিকার অর্থেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচা। পরের ম্যাচগুলোয় আর টুর্নামেন্ট কমিটির ভরসায় থাকিনি। বাংলাদেশ দলের স্কোরবুকই বাঁচিয়েছে আমাদের।
তখন কল্পনাও করিনি, টুর্নামেন্টের প্রথম দিন এমন উপকার করা ওই আর্জেন্টাইন ভদ্রলোকের সঙ্গে পরবর্তী সাক্ষাৎটাই হবে ভীষণ অপ্রীতিকর। আয়ারল্যান্ড-বাংলাদেশ খেলায় ম্যাচ রেফারি এই নিনো। বৃষ্টির পর খেলা শুরু করে আবার তা বন্ধ করে দিয়ে আম্পায়াররা বাংলাদেশের নিশ্চিত জয় কেড়ে নেওয়ার পর ক্রিকেটারদের মতো আমরা সাংবাদিকেরাও মহাক্ষুব্ধ। নিনোকে গিয়ে ধরলাম, ‘আমরা বাংলাদেশের মিডিয়া, আপনার সঙ্গে কথা বলতে চাই।’ নিনো কথা বলতেই রাজি নন। ‘আপনাকে বলতেই হবে, কারণ আমাদের পত্রিকা অফিস পয়সা খরচ করে পাঠিয়েছে, আমাদের দেশের মানুষের জানার অধিকার কাছে কী কারণে খেলা বন্ধ হলো’—এই কথাগুলো যেভাবে বলেছিলাম, সাংবাদিক হিসেবে তা আমার অধিকারের আওতায় পড়ে না।
কিন্তু তখন আর সেসব নীতিমালা মনে নেই। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উঠে যাচ্ছে, হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি হবে নিছকই একটা প্রদর্শনী ম্যাচ—এই আনন্দ হঠাৎই নিভে যাওয়ার যন্ত্রণা সব শিষ্টাচার ভুলিয়ে দিয়েছে। নিনো বেচারা আমার যুদ্ধংদেহী চেহারা দেখে আম্পায়াররা যে আনফিট, সে মন্তব্যে পর্যন্ত একমত পোষণ করে প্রায় দৌড়ে তাঁর রুমে ঢুকে গেলেন।
এটা শুধুই একটা উদাহরণ। নইলে জীবনে ওই একবারই সাংবাদিকের পেশাদারত্বের মন্ত্র ভুলে নির্ভেজাল সমর্থক বনে যাওয়ায় আবেগে ভেসে যাওয়ার গল্প আরও আছে। অন্ধকার থাকতেই হোটেল থেকে মাঠে রওনা হয়ে যেতাম আমরা। সকাল সাতটা থেকেই কুয়ালালামপুর পরিণত হবে জ্যামের শহরে। শহরের নানা প্রান্তে, কখনো বা শহরের বাইরের মাঠে কখন পৌঁছাব তার ঠিক নেই। এই ঝুঁকি এড়াতেই ম্যাচ শুরুর চার-পাঁচ ঘণ্টা আগে রওনা হয়ে বেশির ভাগ দিন আমরা মাঠে পৌঁছুতাম কাকভোরে। আকরাম খানের কীর্তিধন্য হল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচের দিন যখন আমরা একটু দূরে ট্যাক্সি থেকে নেমে দল বেঁধে মাঠের দিকে যাচ্ছি, তখন পূবাকাশে মাত্র উঁকি দিচ্ছে সূর্য। মাঠে চুন দিয়ে বাউন্ডারি লাইন আঁকছিলেন একজন। এমন দল বেঁধে কারা যেন এগিয়ে আসছে দেখে ভয় পেয়ে ওই লোক কাজ ফেলে ভোঁ দৌড়!
সমর্থক হয়ে যাওয়ার কথা বলছিলাম, সেটি এমনই যে, হল্যান্ডের বিপক্ষে মহানাটকীয় জয় পাওয়ার পর কিছুক্ষণের জন্য আমি হয়তো জ্ঞানও হারিয়ে ফেলেছিলাম। চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে উঠে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে জড়িয়ে ধরেছিলাম মনে আছে। এরপর দেখি, আমি মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে!
কে যেন আমাকে টেনে তুলল। একটু পর অস্থায়ী ড্রেসিংরুমে উঁকি দিয়ে দেখি, আকরাম খান হাঁটুতে দুই হাত রেখে উবু হয়ে কাঁদছেন। যা দেখে আমিও হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করলাম। এটা অবশ্য এমন ঘটা করে বলার মতো কিছু নয়। কারণ ওই ম্যাচের পর মাঠে বাংলাদেশের এমন কেউ ছিলেন না, যিনি কাঁদেননি।
আইসিসি ট্রফির পুরোটা জুড়েই এমন বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা। সব লিখতে গেলে এই লেখা আর শেষ হবে না। শেষ করি মজার একটা ঘটনা দিয়ে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আমাকে বললেন, ‘শুভ্র, একটা কাজ করে দিতে পারবে?’
আমি একটু অবাক হয়েই বললাম, ’কী কাজ? পারলে অবশ্যই করব।”
লিপু ভাই বললেন, ‘তোমাকে কিন্তু এটা গোপন রাখতে হবে। কালকের ম্যাচটা তো খুব ইম্পর্ট্যান্ট। প্লেয়ারদের ইনস্পায়ার করতে বাড়তি কিছু করতে চাই। কয়েকটা চিঠি লিখে দিতে পারবে? ইনস্পায়ারিং কথাবার্তা...আমি টিম মিটিংয়ে তা পড়ে শুনিয়ে বলব, বাংলাদেশ থেকে ভক্তরা পাঠিয়েছে।'
আমি রাত জেগে হাতের লেখায় নানা বৈচিত্র্য এনে ৮/১০টা চিঠি লিখে লিপু ভাইকে দিলাম। পরদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতকে রীতিমতো উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ (বুঝতেই পারছেন, পুরোটাই আমার চিঠির গুণে!)। মজাটা হলো ম্যান অব দ্য ম্যাচ এনামুল হক মনির সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে। মনি খুব আবেগভরে বলতে শুরু করলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর আর সর্বজনীন কোনো উৎসবের উপলক্ষ পায়নি। আমরা সেই উৎসবের উপলক্ষ এনে দিতে চাই। আমরা....’
আরে, কথাগুলো এত পরিচিত লাগছে কেন? রহস্যটা পরিষ্কার হতেই আমি একটু মুচকি হাসলাম। কাল রাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের উদ্দেশে লেখা চিঠিগুলোর একটিতে তো আমি ঠিক এই কথাগুলোই লিখেছিলাম না!