অস্ট্রেলিয়ার সাফল্যের পেছনে ‘গলফ’ আর ‘সংগীত’
করোনার এ সময়ে জৈব সুরক্ষাবলয়ে দিনের পর দিন কাটানো একধরনের শাস্তি। যেকোনো খেলার ক্রীড়াবিদেরাই অভিযোগ করেন, করোনা থেকে বাঁচতে ‘বলয়’ তৈরি করার অর্থ একরকম বন্দিত্বই।
ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে সমস্যাটা আরও বেশি। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলার জন্য বিদেশবিভূঁইয়ে তো বটেই, নিজেদের দেশেই দিনের পর দিন হোটেল বন্দী অবস্থায় কাটাতে হয় তাঁদের।
এবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে প্রায় সব দেশই একাধিক দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেছে। একটা বলয় থেকে আরেকটা বলয়, তারপর আরেকটা—দিনের পর দিন পরিবার–পরিজন ছাড়া থাকতে থাকতে একধরনের অবসাদ চলে আসাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
ভারতের মতো দুর্দান্ত টি–টোয়েন্টি দল তো সেমিফাইনালে উঠতে না পেরে জৈব সুরক্ষাবলয়ে দিনের পর দিন কাটানোকে দুষেছে। এর বিরুদ্ধে কমবেশি অভিযোগ আছে সবারই। কিন্তু একটা তথ্য সবাইকে অবাক করতে পারে, জৈব সুরক্ষাবলয় নাকি রীতিমতো উপভোগ করেছে অস্ট্রেলিয়া। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম শিরোপা জয়ের নেপথ্যেই নাকি উপভোগ্য জৈব সুরক্ষাবলয়।
তথ্যটা দিয়েছেন অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি জানিয়েছেন কীভাবে গোটা অস্ট্রেলিয়া দল জৈব সুরক্ষাবলয় উপভোগ করেছে। তাদের উপভোগের মূল অনুষঙ্গ নাকি ছিল গলফ খেলা আর গান শোনা, ‘আমাদের উত্থান–পতন ছিল না, এটা বলব না। অবশ্যই ছিল। ব্যাপারটি অনেকটাই ঢেউয়ের সাগরে নৌকা বাওয়ার মতো। কখনোই আরামদায়ক নয়। জৈব সুরক্ষাবলয় এমনই। সব সময়ই কঠিন। তবে সেটিকে উপভোগ্য করে নিয়েছিলাম আমরা।’
জৈব সুরক্ষাবলয়ে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটাররা চুটিয়ে গলফ খেলেছেন। এমনকি প্রিয় গানগুলো শুনেও তাঁরা নিজেদের উজ্জীবিত করেছেন, ‘বলয়ের মধ্যেই আমরা একসঙ্গে গলফ খেলেছি। আমরা সবাই মানসিক দিক দিয়ে হালকা মেজাজে থাকার চেষ্টা করেছি। সতীর্থদের সঙ্গ উপভোগ করেছি। আমাদের হোটেলে সব সময়ই গান বাজত। হোটেলকক্ষে, এমনকি করিডোরে। কেউ কখনো কক্ষের দরজা বন্ধ করতাম না। এটাই আমাদের নীতি ছিল।’
উপভোগের মন্ত্রটা নিজেদের মগজে ঢুকিয়ে নিতে পারার কারণেই অস্ট্রেলিয়া শেষ পর্যন্ত সবার ওপরে। প্রথমবারের মতো টি–টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন। খেলা কিংবা সতীর্থদের সঙ্গ যখন কোনো দলের উপভোগ্য হয়ে ওঠে, তখনই মার্কাস স্টয়নিস–ম্যাথু ওয়েডের সেই বীরত্বগাথা, কিংবা ডেভিড ওয়ার্নার, মিচেল মার্শদের দাপট দেখা যায়। অস্ট্রেলিয়া করোনাকালে জৈব সুরক্ষাবলয় জয় করার মন্ত্রটা আবিষ্কার করে ক্রিকেট দুনিয়াকে বড় একটা টেক্কাই দিয়ে দিল।
অস্ট্রেলিয়ানরা তো এমনই হয়!