অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া হলো না জোন্সের

স্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার ডিন জোন্স। কাল তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে।ছবি: এএফপি

ধাক্কা!

আচমকা ডিন জোন্সের মৃত্যুসংবাদ শোনার পর এটাই হয়তো অনেকের প্রথম প্রতিক্রিয়া। কিরণ মোরের অবস্থাও ঠিক তাই। সকালে দুজন একসঙ্গেই ছিলেন। একসঙ্গে নাশতা করেছেন। দুপরে কি না সেই ব্যক্তিটা মারা গেলেন! আইপিএলের ধারাভাষ্য দলে তাঁর সঙ্গী ইরফান পাঠানও ধাক্কা সামলাতে বেগ পাচ্ছেন। সকালের নাশতা করে আর দশটা দিনের মতোই রোজকার অভ্যাস মেনে হাঁটাহাঁটি করেন জোন্স। ইরফানের যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, কাল মুম্বাইয়ের এক হোটেলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ ক্রিকেটার।

জোন্সকে অস্ট্রেলীয় দলের কোচিং স্টাফ করতে চেয়েছিলেন ল্যাঙ্গার।
ছবি: এএফপি

ধাক্কাটা সইতে তাই কষ্ট হচ্ছে জাস্টিন ল্যাঙ্গারেরও। অস্ট্রেলিয়া দলের এ প্রধান কোচ জানিয়েছেন, আগামী বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে অস্ট্রেলিয়া দলের কোচিং প্যানেলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল ৫৯ বছর বয়সী জোন্সের। কিন্তু তার আগেই জীবনের উইকেট ছাড়তে হলো ওয়ানডে ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের ধরন পাল্টে দেওয়ার পথিকৃৎদের একজন জোন্সকে। তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়ি ছাড়ির সময়ে ল্যাঙ্গারের আবির্ভাব ঘটেছিল। জোন্সকে ‘আদর্শ’ হিসেবেই দেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। কিছুদিন আগে ফেসটাইম অ্যাপে টম মুডি, জিওফ মার্শ ও জোন্সের সঙ্গে কথা বলেছিলেন ল্যাঙ্গার। ঠিক তখনই তাঁকে ডেভিড ওয়ার্নার-স্টিভ স্মিথদের জন্য কাজে লাগানোর ভাবনাটা এসেছিল ল্যাঙ্গারের মাথায়।

সংবাদকর্মীদের আজ ল্যাঙ্গার বলেন, ‘জোন্সের সঙ্গে ৫-১০ মিনিট কথা বলার পরই ভাবনাটা মাথায় আসে। তাকে “মেন্টর” হিসেবে পেলে খুব ভালো হয়। কথা বলার পর তিনি বার্তা পাঠান—আমার কথা ভাবার জন্য ধন্যবাদ। তোমাদের সঙ্গে এখন থাকতে পারলে ভালোই হতো। এটা ছিল আমার জীবনে অন্যতম সেরা বিকাল।’ ল্যাঙ্গারের চোখে জোন্স ক্রিকেটে ‘বিপ্লব’ আনা খেলোয়াড়দের একজন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ভিভ রিচার্ডস ও অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহর কথায়ও ঝরেছে একই সুর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টে দেওয়া স্ট্যাটাসে ভিভ লিখেছেন, ‘আমি যাদের বিপক্ষে খেলেছি তাদের মধ্যে তুমি খেলোয়াড়ের চেয়েও বেশি কিছু ছিলে। আমার বন্ধু, আমার ভাই।’

স্টিভ ওয়াহ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘অনেকভাবেই সে ছিল (খেলার) একজন দূত ও উদ্ভাবক। সানগ্লাস পরে মাঠে নামা প্রথম খেলোয়াড় এবং ব্যাটের চুক্তিতে ভালো পয়সা এনে দেওয়ার পথটা তৈরি করেছিলেন সে। ওয়ানডে ক্রিকেটটা ছিল তার খেলা এবং তাকে দেখতে এমসিজিতে একজন হলেও বেশি দর্শক হতো।’