অলিম্পিকে ক্রিকেট ঢুকিয়ে আরও সাফল্য চায় ভারত
অলিম্পিক বা এশিয়ান গেমসের মতো ক্রীড়া আসরে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে একদিন খুব একটা আগ্রহী ছিল না ভারত। সে কারণেই এশিয়ান গেমসের দুটি আসরে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত থাকলেও ভারত তাতে অংশ নেয়নি। ২০১০ গুয়াংজু এশিয়ান গেমস ও ২০১৪ ইনচন এশিয়ান গেমসে ক্রিকেটে সোনা জিতেছিল যথাক্রমে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা।
ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কমনওয়েলথ গেমস ও এসএ গেমসেও। ১৯৯৮ সালে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেমসের ক্রিকেটে ভারত অংশ নিলেও দক্ষিণ এশীয় ক্রীড়া আসর এসএ গেমসে ভারত সব সময়ই ক্রিকেটে ছিল অনুপস্থিত। এবারের টোকিও অলিম্পিকে ইতিহাসের সেরা সাফল্য পেয়েছে ভারত। জিতেছে ১টি সোনা, ২টি রুপা ও ৪টি ব্রোঞ্জ। সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়েই কিনা ভারত এখন আগ্রহী অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে। আইসিসি নাকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ইতিবাচক ইঙ্গিত পেয়েই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) কাছে ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ক্রিকেট ঢোকানোর আবেদন করেছে।
ভারতের ইচ্ছাটা পরিষ্কার। ক্রিকেট অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হলে (ছেলে, মেয়ে দুই শ্রেণিতেই) তাদের অন্তত দুটি পদকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ভারতীয় ক্রিকেটের বর্তমানের যে রমরমা অবস্থা, তাতে অলিম্পিকে ক্রিকেট ইভেন্ট হিসেবে যুক্ত হলে ভারতই লাভবান হবে।
গত এপ্রিলে বিসিসিআই সভায় অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে বিভিন্ন করণীয়, সুবিধা-অসুবিধা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, অলিম্পিকে ক্রিকেট ঢোকানোর ব্যাপারে বেশ ইতিবাচক ভারতীয় ক্রিকেট সংগঠকেরা। তবে এ ক্ষেত্রে ভারতের দুশ্চিন্তা আইওসি। তাদের হস্তক্ষেপটাই আসলে সমস্যা বিসিসিআইয়ের। এ ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা ও কর্তৃত্ব চায় তারা। তবে অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হলে যে সেটি আইওসির নিয়ন্ত্রণেই আয়োজিত হয়, এটা নিয়ে কোনো দ্বিমতের অবকাশ নেই। বিসিসিআই এটাই যতটা সম্ভব কমিয়ে ফেলতে চায়। বিসিসিআই কর্তারা একটা বিষয়ে একমত, অলিম্পিকে ক্রিকেট ঢুকলে সেটি ভারতের জন্যই লাভজনক একটা ব্যাপার।
২০২৮ সালে অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হলে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা ‘অলিম্পিয়ান’ হতে পারবেন কিনা, সেটি নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। আরও সাত বছর পর কোহলি খেলায় থাকবেন কিনা, সেটি একটা বড় প্রশ্ন। তবে ঋষভ পন্ত, কে এল রাহুলরা অলিম্পিকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
আইওসি অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে অনাগ্রহী নয়। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করে দিয়েছে তারা। এরই মধ্যে টিভি স্বত্বসংক্রান্ত খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখছে তারা। আইওসিও বোঝে, অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হলে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের বিরাট বাজারটা তারা ধরতে পারবে। ক্রিকেটে এখন নানা সংস্করণ চালু হয়েছে, টি-টোয়েন্টি তো আছেই। হালে চালু হয়েছে টি-টেন আর হানড্রেডস (১০০ বলের খেলা)। তিনটি সংস্করণই অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্তির দাবিটাকে আরও জোরালো করে প্রতিষ্ঠিত করেছে।