অভিষেকের ইতিহাস ধরে রাখলেন রাব্বি
>ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে ৩০ পেরিয়ে ওয়ানডেতে অভিষিক্ত হয়েছেন ফজলে রাব্বি। তাঁর আগের পাঁচজনের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। সে ধারা বজায় রেখে ১৩তম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেকে শূন্য রানে আউট হয়েছেন রাব্বি
ফজলে মাহমুদ রাব্বির অভিষেক ঘটবে, তা মোটামুটি জানাই ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে পরীক্ষিত হলেও জাতীয় দলে নতুন। তবু রাব্বির বয়স দেখে অনেকেই নিশ্চয় অবাক হয়েছেন? এতকাল তো কচি–কাঁচাদের অভিষেক ঘটেছে জাতীয় দলে। ৩০ বছর বয়সী রাব্বিকে দিয়ে সেই ধারা ভাঙল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু ধারা ভেঙে কি কোনো লাভ হলো?
অভিষিক্ত কারও কাছ থেকে পারফরম্যান্সের হিসাব চাওয়াটা ছেলেমানুষি। তাই লাভ-ক্ষতির হিসাবটা ভবিষ্যতের জন্য তোলা রইল। রাব্বি আপাতত ‘আনলাকি থার্টিন’। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের যে কজন ক্রিকেটার অভিষেকেই শূন্য রানে আউট হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে রাব্বি সর্বশেষ সংযোজন, ১৩তম।
রাব্বির জন্য আরও হতাশার খবর হলো, এর আগে বাংলাদেশের যে ১২জন অভিষেকেই ‘ডাক’ মেরেছেন তাঁদের মধ্যে দলে নিজের জায়গা পাকা করতে পেরেছিলেন শুধু একজন। এই তালিকায় গাজী আশরাফ হোসেন লিপু কিংবা জাহাঙ্গীর শাহ বাদশাদের কথা আলাদা। কারণ বাংলাদেশ ১৯৮৬ সালে প্রথম ওয়ানডে খেলার সময় তাঁরা ক্যারিয়ারের প্রায় শেষ দেখে ফেলেছিলেন। কিন্তু ডলার মাহমুদ, এনামুল হক জুনিয়র, মনিরুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম, জাকির হোসেন, জিয়াউর রহমানদের ক্ষেত্রে এ কথা খাটে না। সে যা–ই হোক, আগের ‘ওঁরা ১২জন’-এর মধ্যে নিজের জাতটা চেনাতে পেরেছেন শুধু আফতাব আহমেদ।
কচি–কাঁচাদের অভিষিক্ত করার ধারা ভেঙে ৩০ বছর বয়সীকে নামিয়ে দিয়েও কোনো লাভ না হওয়ায় লাভ-ক্ষতির হিসাবটা তাই উঠছে। তবে এই হিসেব রাব্বির ‘ডাক’ মারার জন্য নয়। আসলে ৩০ বছর পার করে জাতীয় দলে এসে বাংলাদেশ দলকে কেউ খুব বেশি কিছু দিতে পারেননি। ওয়ানডেতে ৩০ বছর বয়সে এ পর্যন্ত অভিষেক ঘটেছে মোট ছয়জনের। এর মধ্যে তিনজনের ঘটনা বাংলাদেশের অভিষেক ম্যাচে, অর্থাৎ সেই ১৯৮৬ সালে। রকিবুল ইসলাম ও সামিউর রহমানের অভিষেক ঘটেছিল ৩৩-এ। আর বোলিং অলরাউন্ডার জাহাঙ্গীর শাহ সেদিন ছিলেন ৩৭ ছুঁই ছুঁই। রকিবুল ৫ রান করেছিলেন। বাকি দুজন শূন্য। জাহাঙ্গীর অবশ্য ২ উইকেট পেয়ে আসল কাজটা করেছিলেন।
১৯৮৮ সালে ৩০ বছর বয়সে অভিষিক্ত হলেও ওয়াহিদুল গনি শুধু বল করতে পেরেছিলেন। ক্যারিয়ারের একমাত্র সেই আন্তর্জাতিক ম্যাচে ৬ ওভারের মতো বল করে কোনো উইকেট পাননি। বাংলাদেশ ওয়ানডে মর্যাদা পাওয়ার পর এর আগে শুধু একজন খেলোয়াড়েরই অভিষেক ঘটেছে ৩০ বছর বয়সে। ব্যাটসম্যান মাহবুবুর রহমান সেলিম। ১৯৯৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অভিষিক্ত ম্যাচে ৩ রান করেছিলেন মাহবুবুর। ওই একটা ম্যাচই খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের জার্সিতে। আর রাব্বি তো তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবেই অভিষেকে শূন্য পাওয়া ‘বুড়ো’ হয়েই গেলেন।
স্থানীয় ক্রিকেটে অভিজ্ঞদের সুযোগ দেওয়া হয় না বলে অনেক কথাবার্তাই হয়। ২০ বছরে মাত্র দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ৩০ পেরিয়ে অভিষেক হয়েছে রাব্বির। নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিতে পারবেন তো রাব্বি? ইতিহাস কিন্তু আশা দেখাচ্ছে না।