অভিষেকেই ৪ ‘মানকাডিং’ করলেন ১৬ বছর বয়সী
ক্রিকেটে আউটের ধরনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিতর্কিত ধরনই বোধ হয় এটিই। সেই ১৯৪৭-৪৮ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতের ভিনু মানকড়ের সৌজন্যে ক্রিকেটে ঠাঁই পেয়ে যাওয়া আউটের এ ধরনটির নামও মানকড়ের নামেই—মানকাডিং। প্রথম থেকে আউটের এ ধরন নিয়ে যে বিতর্ক, এখনো সেটি নিষ্পত্তির কোনো লক্ষণই নেই।
কালেভদ্রে এক-দুবার মানকাডিং দেখা গেলেই বিতর্কটা উসকে ওঠে, এভাবে আউট দেওয়াটা ঠিক কি না এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তির বান ছোটে। কিন্তু কোনো এক ম্যাচেই যদি চারবার ‘মানকাডিং’ হয়, তাহলে কী হতে পারে!
অবিশ্বাসে চোখ কপালে তোলার কিছু নেই। আসলেই এক ম্যাচে চারবার মানকাডিং হয়েছে, আর সেটি করেছেন একই বোলার!
ঘটনাটা মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে। গতকাল বাছাইপর্বের আফ্রিকান অঞ্চলের ম্যাচে উগান্ডার বিপক্ষে কাণ্ডটা ঘটিয়েছেন ক্যামেরুনের ১৬ বছর বয়সী মায়েভা দুমা! আরও অবিশ্বাস্য লাগবে, যখন শুনবেন, এই ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে দুমার!
ডানহাতি পেসার দুমা ম্যাচে ৩২ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর হাত থেকে বল বের হওয়ার পর উগান্ডার ব্যাটাররা যতটা ভুগেছেন, তার চেয়ে বেশি ভুগেছে দুমার হাত থেকে বল বের হওয়ার আগে। দুমার হাত থেকে বল স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা ব্যাটারের দিকে যাওয়ার আগেই নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থাকা ব্যাটার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন, দুমাও সুযোগটা নিয়েছেন দুহাত ভরে। ব্যাটার ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন দেখে বল না ছুড়েই হাত দিয়ে স্টাম্প ভেঙে দিয়েছেন।
তা-ও একবার করলেও কথা ছিল, চার-চারবার একই কাজ করেছেন দুমা। চার ব্যাটারকে এভাবে ফিরিয়েছেন প্যাভিলিয়নে! উগান্ডার ব্যাটাররা অন্যের দুর্দশা থেকে শেখেন, এমন দাবি অন্তত এ ম্যাচে করতে পারছেন না!
দুমার এত মানকাডিংয়ের ফল কী হয়েছে? ১৬ ওভার শেষে উগান্ডার রান ছিল ১ উইকেটে ১৬৩, সেই উগান্ডাই ২০ ওভার শেষ করেছে ৬ উইকেটে ১৮৬ রান নিয়ে। আইসিসির ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, উগান্ডার ব্যাটাররা এভাবে আউট হওয়া সহজভাবেই মেনে নিয়েছেন। অবশ্য দুমার এত চাতুরির পরও ব্যাটিংয়ে ভরাডুবির মূল্য দিয়ে ক্যামেরুন বিশাল ব্যবধানেই ম্যাচটা হেরেছে। মাত্র ৩৫ রানে অলআউট হয়েছে ক্যামেরুন।
এ ম্যাচে চারবার দেখা গেলেও মানকাডিং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ বিরল ঘটনাই বটে। ১৯৪৭-৪৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিল ব্রাউনকে এভাবে আউট করে আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন মানকড়। ২০১৯ আইপিএলে ইংল্যান্ডের জস বাটলারকে ভারতের রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মানকাডিংও বেশ আলোচনায় এসেছিল।