অবিশ্বাস ছড়িয়ে মালিঙ্গার আবারও ডাবল হ্যাটট্রিক
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ডাবল হ্যাটট্রিকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন লাসিথ মালিঙ্গা। তাঁর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ১৩০ বছরে এমন কিছু দেখেনি। টানা চার বলে চার উইকেট পাওয়ার কাজটা যে কতটা কঠিন, সেটা গত ১২ বছরেও বোঝা গেছে। এটা সম্ভব জানার পরও কেউ করে দেখাতে পারেননি। মালিঙ্গাই তাই দায়িত্ব বুঝে নিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে উপহার দিলেন আরেকটি ডাবল হ্যাটট্রিক!
টি-টোয়েন্টি সিরিজ আগেই জিতে গেছে নিউজিল্যান্ড। আজকের ম্যাচ নিয়ে তাই খুব একটা আগ্রহ ছিল না কারও। শ্রীলঙ্কা প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১২৫ রান তোলার পর হয়তো অনেকে টিভির চ্যানেলও বদলে নিয়েছেন। দুর্ভাগা তারা, মালিঙ্গার ইতিহাস গড়াটা যে দেখা হলো না তাঁদের। প্রথম দুই ওভার ভালোই খেলছিল নিউজিল্যান্ড। বিনা উইকেতে ১৫ রান তুলে ফেলা দলটির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল তৃতীয় ওভারে। তৃতীয় বলে কলিন মানরোকে আউট সুইঙ্গারে (মানরোর জন্য ভেতরে ঢোকা বল) বোল্ড করলেন মালিঙ্গা। তাতেই প্রথম বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে উইকেটের সেঞ্চুরি হয়েছে মালিঙ্গার।
পরের বলটিও আউট সুইঙ্গার ছিল। এলবিডব্লুর দাবিতে সাড়া দেননি আম্পায়ার। কিন্তু মালিঙ্গা রিভিউ নিতে দেরি করেননি। আউট হতেই হলো রাদারফোর্ডকে। পরের বলটি মোকাবিলা করতে নেমেছিলেন টানা দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে জয় এনে দেওয়া কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। মালিঙ্গার এক ইয়র্কার তাঁকেও ফেরত পাঠাল ড্রেসিং রুমে, হ্যাটট্রিক! একমাত্র বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দুটি হ্যাটট্রিকের মালিক হলেন মালিঙ্গা।
ইতিহাস গড়ার বাকি ছিল এরপরও। ওভারের শেষ বল খেলার দায়িত্ব পেয়েছিলেন রস টেলর। আরেকটি অবিশ্বাস্য ইয়র্কার গিয়ে আঘাত হানল টেলরের প্যাডে। জোরালো আবেদন আর আম্পায়ারের আঙুল ওপরে উঠতেও দেরি হয়নি। চার বলে চার উইকেট, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দ্বিতীয় ডাবল হ্যাটট্রিক। ২০০৭ বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি হলো, আবার হলো না। সেবার সব উইকেটই ছিল রিভার্স সুইংয়ে, ভেতরে ঢোকা বলে। এবারের ঘটনা নতুন বলে, আউট সুইং আর লেট সুইং দিয়ে। একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে পাঁচটি হ্যাটট্রিকের কীর্তি তো আর এমনি এমনি হয়নি তাঁর।
এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েও থামেননি মালিঙ্গা। নিজের তৃতীয় ওভারেও আরেকবার আঘাত হেনেছে। তিন ওভারে ৫ রান দিয়ে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে নিউজিল্যান্ডকে শেষ করে দিয়েছেন। ১০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ৫২ রান করেছে নিউজিল্যান্ড।