বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পাত্তা পায়নি বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে এদিন ৫ উইকেটে ৩৮২ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ৮১ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির কারণে শেষ পর্যন্ত ২৩৩ রানে গিয়ে থামে। এই ম্যাচের পর দল হিসেবে বাংলাদেশ সমালোচিত হলেও দারুণ ইনিংসের জন্য প্রশংসিত হচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজাও মাহমুদউল্লাহকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। বলেছেন, তাঁর এই ইনিংস নতুন করে জাগিয়ে দিতে পারে বাংলাদেশকে।
মাহমুদউল্লাহর প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে বাংলাদেশের হারের জন্য ঘরের মাঠের স্পিনিং উইকেটকে দায়ী করে রমিজ বলেছেন, ‘বাংলাদেশের উচিত গতিময় উইকেট বানিয়ে এমন ব্যাটসম্যান নিয়ে আসা যারা কিনা ভালো উইকেটে ফাস্ট বোলারদের মোকাবিলা করতে পারে। এতে তাদের সামগ্রিক ক্রিকেটেরও অনেক উন্নতি হবে। স্পিনারদেরও বাউন্সি উইকেট দরকার। কারণ, স্পিনাররা বাংলাদেশের জয়ের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিজ দেশে তো টার্নিং উইকেট বানিয়ে জিতে যাচ্ছে। কিন্তু আপনি যদি বাউন্সি উইকেট বানান তবে টার্ন না হলেও বোলাররা সফল হতে পারে। ভালো উইকেট বা বাউন্সি উইকেটের কারণে আপনার ব্যাটিং–বোলিং দুটোরই উন্নতি হবে। এমনটা হলে আপনাকে বিশ্ব মঞ্চে এমন একপেশে ম্যাচ আর দেখতে হবে না। দেখুন, তারা অনেক রান দিয়েছে। অনেক বাজে বোলিং করেছে তারা।’
এরপর মাহমুদউল্লাহর ১১১ রানের ইনিংসটির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন রমিজ। মাহমুদউল্লাহ তাঁর পছন্দের ব্যাটসম্যান জানিয়ে পিসিবির সাবেক প্রধান বলেছেন, ‘যদি ব্যাটিংয়ে আপনার দলের প্রথম ৫–৬ জনের মধ্যে একজনই শুধু দুই অঙ্ক স্পর্শ করে, তাহলে আপনি রান তাড়া কীভাবে করবেন! আর অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার মুশফিক ও সাকিব যদি তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যায় তবে চাপ বেড়ে যায়। এর মধ্যেও মাহমুদউল্লাহ দারুণ একটি ইনিংস খেলেছে। সে আমার খুব পছন্দের। কারণ, চুপচাপ থেকে সে ব্যাটিং করে যায়। বিশ্বকাপ দলে শুরুতে তার নাম (থাকার কথা) ছিল না। পরে দলে ঢুকেছে। এরপরও সে অসাধারণ ইনিংস খেলেছে। বিশ্বকাপে সে আগেও ভালো করেছে। এটা তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। তার হেলমেটে বল লেগেছিল। কিন্তু এরপরও সে হুক পুল অনেক ভালো খেলেছে।’
মাহমুদউল্লাহর এই ইনিংস বাংলাদেশকে নতুন করে জাগিয়ে দিতে পারে বলেও মনে করছেন পাকিস্তানের এই সাবেক অধিনায়ক, ‘এই ইনিংসে সে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে একটি বার্তাও দিয়েছে। বিশেষ করে ব্যাটসম্যানদের জন্য। সে জানিয়েছে, যদি আপনার বড় মন থাকে, আবেগ থাকে, ব্যাকফুটে যদি ভালো খেলতে পারেন এবং নিজেকে যদি সময় দেন, তবে আপনি যেকোনো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ভালো করতে পারেন। সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি ইনিংস সে খেলেছে। কারণ, যখন উইকেট পড়তে থাকে এবং আপনি জানেন যে জেতা কঠিন, তখন মনোযোগও আর থাকে না। কিন্তু সে জানত, নিজেকে তার প্রমাণ করতে হবে। সে জানত, তার নিজের ক্যারিয়ারের জন্য এটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। সে হয়তো ভেবেছে, এই ইনিংসের কারণে পরের ম্যাচে বালাদেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশকে বেশ কিছু বার্তা সে দিয়েছে। এখন আগামী ম্যাচে বাংলাদেশ কী করে সেটাই দেখার।’
বাংলাদেশের পরের ম্যাচ ২৮ অক্টোবর কলকাতায় নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে।