অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলে কী পেল বাংলাদেশের মেয়েরা
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলতে এসে সীমিত ওভারের দুই সংস্করণে ছয়টি ম্যাচ জিতেই ফিরছে অস্ট্রেলিয়া। শক্তির বিচারে দুই দলের পার্থক্য যত, তাতে এ ফলটা অনুমিতই। সর্বশেষ শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১৫৬ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ থেমেছে ৭৮ রানে। এ নিয়ে সর্বশেষ ৬ ম্যাচে চারটিতেই বাংলাদেশ গুটিয়ে গেল ১০০-এর নিচে।
এমন সিরিজে প্রাপ্তি খুঁজতে গেলে হয়রানই হওয়ার কথা। দলের সহ-অধিনায়ক নাহিদা আক্তার সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য দুটি প্রাপ্তির কথা বললেন—প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক নিগার সুলতানার অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংস আর বোলারদের ‘ভালো’ পারফরম্যান্স। বোলাররা আরেকটু ভালো করলে চিত্রটা ভিন্ন হতে পারত—এমন আক্ষেপও করলেন শেষ ম্যাচে ৩ উইকেট নেওয়া এই বাঁহাতি স্পিনার।
নাহিদা বোলিং নিয়ে আক্ষেপ করতেই পারেন, তবে বোলাররাই যা একটু লড়াই করেছেন। অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক অ্যালিসা হিলিও যেমন বললেন, বাংলাদেশ বোলাররা মাঝেমধ্যে চ্যালেঞ্জে ফেলেছিলেন তাঁদের। শেষ টি-টোয়েন্টিতেও যেমন ১০০ রানের আগে ৫ উইকেট হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, মাঝের ওভারে ধীরগতির ও নিচু বাউন্সের উইকেটে বাংলাদেশ বোলাররা বেশ চেপে ধরেছিলেন। তবে বোলারদের লড়াই কাজে আসেনি ব্যাটিং-ব্যর্থতায়। যে ফিল্ডিংয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে ঠিক লড়াই করতে হয় না, বাংলাদেশ গুবলেট পাকিয়েছে তাতেও।
ওদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমাদের যে ঘাটতিগুলো হয়েছে, আমরা চেষ্টা করব, সামনের দিনগুলোয় সেগুলো কাটিয়ে ওঠার।
নাহিদা অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে শেখার কথাও বললেন, ‘ওরা অনেক অভিজ্ঞ। অনেকগুলো বিশ্বকাপ জিতেছে। আমরা চেষ্টা করেছি, ওদের বিপক্ষে কীভাবে ভালো ব্যাটিং-বোলিং করা যায়। ওদের থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। আমাদের যে ঘাটতিগুলো হয়েছে, আমরা চেষ্টা করব, সামনের দিনগুলোয় সেগুলো কাটিয়ে ওঠার।’
সেটি কতটা কাটিয়ে উঠল বাংলাদেশ, তা জানতে অবশ্য খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। এ মাসের শেষ দিকে প্রথমবারের মতো পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, ভারতের বিপক্ষে সিলেটে যেটি শুরু ২৮ এপ্রিল। নাহিদার আশা, সেখানেই ফলটা পাবেন তাঁরা, ‘আমরা চেষ্টা করব, এই সিরিজে যে ঘাটতিগুলো ছিল, সেগুলো নিয়ে কাজ করার। আমরা আশা করছি, পরবর্তী সিরিজে ভালো খেলার চেষ্টা করব।’
আর হিলি বলছেন, বাংলাদেশের মতো দলের উন্নতির উপায় বড় দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত খেলা, ‘তারা দারুণ একটি দল। কোনো অসম্মান না করেই বলছি, বড় দলগুলোর সঙ্গে নিয়মিত খেললে—অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড এখানে এসে যদি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে এমন কন্ডিশনে, তাহলে এ দলের আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়বে। এবং তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে যে তারা লড়াই করতে পারে।’
অস্ট্রেলিয়ার কাছে এ সফর ছিল বিশ্বকাপের আগে কন্ডিশনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়া। শেষ দুটি ম্যাচে বেশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারে অদল-বদলের পর শেষ ম্যাচে বোলিংয়ে এসেছেন সাতজন, উইকেটের দেখা পেয়েছেন সবাই। আইসিসির পূর্ণ সদস্যদলগুলোর ম্যাচে এমন ঘটনা এই প্রথম। এরপরও হিলি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা দেখেন, ‘আমি মনে করি, বিশ্বকাপে সত্যিকারের হুমকি হবে তারা। নিজেদের কন্ডিশন বড় সুবিধা। এই দল শীর্ষ কয়েকটি দলের জন্য বিপজ্জনক হবে।’
প্রতিপক্ষের বিপদ ঘটাতে গেলে যে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এমন পারফরম্যান্সের অনেকটাই উন্নতি করতে হবে, তা তো জানা কথাই এখন।