আইপিএলের যে কীর্তি শুধুই জাদেজার
রবীন্দ্র জাদেজার দুর্দান্ত সব ক্যাচ নেওয়া আর রান বাঁচানো দেখে ভারত জাতীয় দলের ফিল্ডিং কোচ টি. দিলীপ কয়েক মাস আগে ‘ফিল্ডার অব দ্য ম্যাচ’-এর পুরস্কার হিসেবে মেডেল চালুর আহ্বান জানিয়েছিলেন।
অন্য অলরাউন্ডারের সঙ্গে জাদেজার সবচেয়ে বড় পার্থক্য বোধ হয় এখানেই। জাদেজা ব্যাটিং-বোলিংয়ের সঙ্গে ফিল্ডিংয়েও অসাধারণ। শুধু ফিল্ডিংয়ের জন্য হলেও তাঁর ওপর চোখ বন্ধ করে ভরসা রাখা যায়।
বছরের পর বছর ধরে ফিল্ডিংয়ে আস্থার প্রতীক হয়ে থাকা জাদেজা এবার অনন্য কীর্তিই গড়ে ফেললেন। আইপিএল ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কমপক্ষে ১০০০ হাজার রান, ১০০ উইকেট ও ১০০ ক্যাচের নজির গড়েছেন চেন্নাই সুপার কিংসের এই অলরাউন্ডার। গত রাতে ঘরের মাঠ এম এ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে জাদেজার নৈপুণ্যেই কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে চেন্নাই।
আইপিএলে ১০০০ রান ও ১০০ উইকেটের মাইলফলক অনেক আগেই ছুঁয়েছেন জাদেজা। কাল কলকাতার বিপক্ষে খেলতে নামার আগে তাঁর ক্যাচসংখ্যা ছিল ৯৮। ম্যাচের প্রথম বলেই ফিলিপ সল্ট আর শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে শ্রেয়াস আইয়ারের ক্যাচ নিয়ে ১০০ ক্যাচের মাইলফলক স্পর্শ করেন জাদেজা।
আইপিএলে কমপক্ষে ১০০ ক্যাচ (উইকেটকিপার ব্যতীত) আছে আরও চারজনের—বিরাট কোহলি, সুরেশ রায়না, কাইরন পোলার্ড ও রোহিত শর্মার। এ ছাড়া কমপক্ষে ১০০০ রান আছে ৯২ জনের আর কমপক্ষে ১০০ উইকেট আছে ২৪ জনের। কিন্তু ১০০০ রান, ১০০ উইকেট আর ১০০ ক্যাচের কীর্তিটা জাদেজা ছাড়া আর কারও নেই।
কাল অবশ্য ফিল্ডিংয়ের চেয়ে নিজের বোলিং-ভেলকিই বেশি দেখিয়েছেন জাদেজা। পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেটে ৫৬ রান তুলে ফেলা কলকাতার ব্যাটিং-ধসের শুরুটা হয়েছে জাদেজার সৌজন্যেই। ক্রিজে থিতু হওয়া দুই ব্যাটসম্যান অঙ্গকৃষ রঘুবংশী ও সুনীল নারাইনের পর হার্ড হিটার ভেঙ্কটেশ আইয়ারকেও ফিরিয়েছেন তিনি। এ তিনজনের আউটে কলকাতার রানের গতিতেও বাঁধ পড়েছিল।
এমন কীর্তির রাতে ম্যাচসেরাও হয়েছেন জাদেজা। এ ক্ষেত্রে ছুঁয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনিকে। চেন্নাইয়ের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৫ বার ম্যাচসেরা হওয়ার রেকর্ডটা এত দিন ধোনির একার ছিল। কাল সেই কীর্তিতে ভাগ বসিয়েছেন জাদেজা।
আইপিএলে এখন পর্যন্ত ২৩১ ম্যাচে ২৭৭৬ রান করেছেন জাদেজা, উইকেট নিয়েছেন ১৫৬টি। এবারের আসরেই ১০০ ছক্কা ও ২০০ চারের মাইলফলকও ছুঁয়েছেন।
২০০৮ সালে আইপিএলের উদ্বোধনী আসরেই রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে শিরোপা জেতেন জাদেজা। ২০১১ সালে রাজস্থান ছেড়ে যোগ দেন বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ফ্র্যাঞ্চাইজি কোচি টাস্কার্স কেরালায়। পরের মৌসুমেই যোগ দেন চেন্নাইয়ে। তখন থেকেই দলটির ‘ঘরের সন্তানের’ মতো হয়ে আছেন। জিতেছেন আরও তিনটি শিরোপা। মাঝে চেন্নাই বেশ কয়েকটি কেলেঙ্কারির দায়ে দুই মৌসুম নিষিদ্ধ ছিল। ওই দুই মৌসুম খেলতে হয়েছে গুজরাট লায়নসের হয়ে।