সিরিজসেরা তাসকিন বললেন, ‘আরও আসবে’
বাংলাদেশের কিংস্টন জয়ে তাসকিন আহমেদের ভূমিকা কী? স্কোরকার্ড বলছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসে নিয়েছেন ১ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট। পরিস্থিতি বিচারে পরের ইনিংসে তাঁর ২টি উইকেট বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট সিরিজ ১-১ ব্যবধানে ড্র করায় এই পেসারের কী অবদান? তখন তাঁর যৌথভাবে সিরিজসেরা হওয়ার মাহাত্ম্যটা পরিষ্কার ফুটে ওঠে।
তাসকিনের কাঁধের চোটের কথা মোটামুটি সবারই জানা। এই চোটের কারণে টেস্ট ক্রিকেটটা কিছুদিন আগেও নিয়মিত খেলতে পারেননি। কিন্তু তাঁর পছন্দের এই সংস্করণে খেলার সুযোগ পেলে নিজের পুরোটাই নিংড়ে দেন। প্রমাণ হলো, দুই ম্যাচের এই সিরিজে বোলারদের পরিসংখ্যান। ৪ ইনিংসে নিয়েছেন ১১ উইকেট—দুই দলের বোলারদের মধ্যে তাসকিনের চেয়ে বেশি উইকেট আর কেউ নিতে পারেননি। এই সিরিজে পেসারদের মধ্যে তাসকিনই সবচেয়ে বেশি বোলিং করেছেন (৬৪.১ ওভার)। ইনিংসে সেরা বোলিংও তাঁর। অ্যান্টিগায় ২০১ রানে হারের প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন ৬৪ রানে ৬ উইকেট। সেটা তাঁর ক্যারিয়ারসেরা বোলিং।
কিংস্টনে জয়ের জন্য ২৮৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে গুরুত্বপূর্ণ ২টি উইকেট নিয়েছেন তাসকিন। তিনে নামা কিসি কার্টিকে ফেরানোর পর মিডল অর্ডারে আউট করেছেন জাস্টিন গ্রিভসকে। এই টেস্টে ১০১ রানে জয়ের পর তাসকিন সিরিজসেরার পুরস্কার হাতে হাসতে হাসতে নিজের আনন্দ প্রকাশ করলেন এভাবে, ‘আলহামদুলিল্লাহ, এটা অনেক বড় একটা অর্জন। আমরা টেস্ট সিরিজ ড্র করলাম। কারণ, ওদের কন্ডিশনে অনেক বড় বড় দলও ভোগে।’
গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান সফরে দুই টেস্টই জয়ের পর বাজে সময় কেটেছে বাংলাদেশ দলের। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা ৪ টেস্টে হেরেছে বাজেভাবে। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এই সিরিজ ড্র করাকে বেশ বড় অর্জন হিসেবেই দেখছেন তাসকিন, ‘আমরা একটু কঠিন সময় পার করছিলাম। পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ জয়ের পর কয়েকটি সিরিজ হারাতে আমরা মানসিকভাবে একটু পিছিয়ে ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। দুটো ম্যাচেই আমার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছি।’
তাসকিন চেষ্টা করার কথাটা বলার পর সিরিজসেরার ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরে বললেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহতালা আমাকে এই পুরস্কারটি দিয়েছেন সিরিজসেরার। ইনশআল্লাহ, আরও অনেক (পুরস্কার) আসবে। আমি আমার শোল্ডার নিয়ে (কাঁধের চোট কাটিয়ে) টেস্ট ক্রিকেটে আসার জন্য অনেক চেষ্টা করছিলাম। আল্লাহর রহমতে আগের চেয়ে ভালো আছি। আশা করছি, আল্লাহ চাইলে এমন অনেক বড় অর্জন হবে সামনে।’