টি-টোয়েন্টি লিগের দুর্নীতিবিরোধী ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, আলোচনায় বিপিএলও

টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বিপিএলের কথা উঠে এসেছে। ছবিটি প্রতীকীপ্রথম আলো

কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি লিগ আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নীতিমালা পরিপালন করে না বলে অভিযোগ করেছেন সংস্থাটির এক সাবেক কর্মকর্তা। আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটে সাত বছর তদন্ত সমন্বয়কের কাজ করা এই কর্মকর্তার নাম স্টিভ রিচার্ডসন। গত বছর আইসিসি থেকে বিদায় নেওয়া রিচার্ডসন জানান, কয়েকটি টি–টোয়েন্টি লিগের আয়োজক কর্তৃপক্ষ এবং কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজিমালিকের দুর্নীতি নিয়ে আইসিসি চিন্তিত।

বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ঘিরে চলা দুর্নীর্তির প্রসার নিয়ে এক প্রতিবেদনের সূত্রে রিচার্ডসনের সঙ্গে কথা বলেছে দ্য টেলিগ্রাফ। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের বিপিএলে গত দুই বছরে ৩০টির বেশি দুর্নীর্তির অভিযোগ উঠলেও কাউকে নিষিদ্ধ করা হয়নি। এমনকি অনেকে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত খেলাও চালিয়ে যান।

টেলিগ্রাফের ‘কীভাবে ক্রিকেট নিজেকেই খেয়েছে’ শিরোনামের বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে চলা বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট ও লিজেন্ডস লিগে দুর্নীতির অভিযোগ আছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের বিষয়ে বলা হয়, অন্য অনেক লিগের মতো বিপিএলও দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য আইসিসিকে তালিকাভূক্ত করেনি। এই কাজটি স্বল্প খরচে তারা নিজেরাই করে।

বিপিএল কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেয় না উল্লেখ করে প্রতিবেদনে লেখা হয়, ‘সর্বশেষ দুই বছরের বিপিএলে ৩০টির বেশি দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, কিন্তু একজনও নিষিদ্ধ হয়নি। প্রায়ই দুর্নীর্তির অভিযুক্তরা প্রমাণ হওয়ার আগপর্যন্ত বছরের পর বছর খেলায়ও থেকে যান।’

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি টেলিগ্রাফকে বলেন, ‘অভিযোগ জানাতে অনেক খেলোয়াড়ই ভয় পান। প্রথম কারণ, তাঁদের পারিশ্রমিক না–ও দেওয়া হতে পারে, দ্বিতীয় কারণ তাঁরা নিজেদের অনিরাপদ বোধ করতে পারেন। তাঁরা তখনই জানান, যখন সরাসরি অ্যাপ্রোচ করা হয়। কিন্তু শুধু সন্দেহের ওপর খুব কমই বলেন।’ এই ব্যক্তির নাম বা পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

২০২৩ সাল পর্যন্ত আইসিসি দুর্নীতিবিরোধী ইউনিটে তদন্ত সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করা রিচার্ডসন বলেন, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নিজেদের মতো করে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনার ঝুঁকি আছে, ‘যখন ছোট ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ নিজস্ব ইভেন্ট কাভার করে, তখন ঝুঁকি হচ্ছে, এর মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বিধান কি ততটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে? আইসিসি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে, তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা ও তথ্যের জন্য যোগাযোগ না করে একজন দুর্নীতিবিরোধী কর্মকর্তা মাঠে থাকলেই লিগকে সর্বোত্তমভাবে রক্ষা করা যায় না। এর মধ্যে অনেক কিছুই আছে।’

আরও পড়ুন

বর্তমানে স্পোর্টস ইন্টেগ্রিটি কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করা রিচার্ডসন জানান, আইসিসিতে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজির ভূমিকা নিয়ে সব সময়ই চিন্তিত ছিলেন তিনি। দুর্নীতিরোধে বোর্ডগুলোর সজগ দৃষ্টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সব সময়ই দুর্নীতিবাজরা তৎপর হওয়ার চেষ্টা করেন। এর অর্থ এই নয় যে সব লীগে দুর্নীতিবাজরা কাজ করছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ভালো উদ্দেশ্যের মানুষ, যাঁরা হয়তো বুঝতেই পারছেন না যে তাঁরা কী করছেন।’