মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্ট যখন মার্শ পরিবারের ‘আক্ষেপ’
৯৬ রানে দাঁড়িয়ে মির হামজার বলে স্লিপে আগা সালমানের হাতে ধরা পড়লেন মিচেল মার্শ, সঙ্গে সঙ্গেই ক্যামেরা চলে গেল গ্যালারির দিকে। সেখানে বাবা জিওফ মার্শ, ভাই শন মার্শের চোখেমুখে হতাশা স্পষ্ট। পার্থে ঠিক আগের টেস্টেই ৯০ রানে আউট হয়েছিলেন মিচেল মার্শ; সেখানেও তাঁর পরিবার ছিল গ্যালারিতে। তবে মাঠটা যখন এমসিজি, তখন শতকের কাছে আউট হয়ে যাওয়ার হতাশাটা মার্শ পরিবারের একটু বেশিই!
অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত এ মাঠে মিচেল মার্শের বাবা জিওফ মার্শ খেলেছিলেন ৭টি টেস্ট। অর্ধশতক পেরিয়েছিলেন ৩ বার। তবে শতকের দেখা পাননি। ১৯৯০ সালের বক্সিং ডে টেস্টে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৭৯ রানে অপরাজিত ছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। তবে দল জিতে গিয়েছিল বলে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি আর। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৮৬ রান, ছিলেন ইনিংসে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার।
মিচেলের ভাই শনের আক্ষেপটা আরও বেশি। ক্যারিয়ারে চারটি বক্সিং ডে টেস্ট খেলেছেন তিনি। ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে আউট হয়েছিলেন ৯৯ রানে। সেটিও আবার রানআউট! পরের বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি অর্ধশতক পান, কিন্তু তিন অঙ্ক আর ছোঁয়া হয়নি তাঁর।
মিচেল মার্শ এ নিয়ে মেলবোর্নে খেললেন চারটি বক্সিং ডে টেস্ট। ২০১৫, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে খেলা আগের তিন টেস্ট মিলিয়ে তাঁর সর্বোচ্চ ছিল অপরাজিত ২৯ রান। এবার প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে আউট হয়ে যাওয়া ‘ছোট’ মার্শ আজ যখন দ্বিতীয় ইনিংসে নামেন, ১৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ধুঁকছে। শুরুর দিকে স্লিপে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান। পরে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত অল্পের জন্য পক্ষেও আসে তাঁর।
‘জীবন’ কাজে লাগিয়ে পালটা আক্রমণে দারুণ এক ইনিংস খেলেন, স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে গড়েন ১৫৩ রানের জুটি। ৯০ পেরিয়েছেন চার মেরে। কিন্তু শতক পাওয়া যখন সময়ের ব্যাপার মনে হচ্ছিল, তখনই সালমানের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হয়ে থামতে হয় তাঁকে। ক্যারিয়ারে এ নিয়ে তৃতীয়বার নড়বড়ে নব্বইয়ে গিয়ে থামলেন তিনি। তবে এবারের আক্ষেপ হয়তো আগের দুবারকে ছাড়িয়ে গেছে।
দিনের খেলা শেষে অবশ্য বক্সিং ডে টেস্টে মার্শ পরিবারের ‘আক্ষেপ’ নিয়ে মজা করেছেন এ অলরাউন্ডার। বলেছেন, ‘শন ৯৯ রানে রানআউট হয়েছিল, বাবা ৮৬ করেছিল। আমার মনে হয় (এখানে) আমাদের একটু ইতিহাসই আছে। আশা করি, আরেকটি সুযোগ পাব।’
সর্বশেষ অ্যাশেজের পর থেকে তাঁর ক্যারিয়ারের পুনর্জন্মই হয়েছে বলা যায়। হেডিংলিতে দারুণ শতক করেছিলেন। সে টেস্ট থেকে এখন পর্যন্ত তাঁর গড় ৬৭.৫০। এভাবে খেলতে থাকলে ৩২ বছর বয়সী মার্শ আরও কয়েকটি বক্সিং ডে টেস্ট খেলার সুযোগ পাবেন, আশা করাই যায়।
তখন যদি মেলবোর্নে মার্শ পরিবারের আক্ষেপটা মেটাতে পারেন তিনি!