মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে স্পিন-স্বর্গ বললে ভুল হবে না। এ মাঠে শীর্ষ তিন উইকেটশিকারি বোলারের তিনজনই স্পিনার। নামগুলোও প্রত্যাশিত—সাকিব আল হাসান (৭৬), তাইজুল ইসলাম (৬৯) ও মেহেদী হাসান মিরাজ (৫২)। নিচু বাউন্সের এই উইকেটে বল বাঁক খাবে, এটাই প্রত্যাশিত। কিন্তু সেই মিরপুরেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে আধিপত্য দেখালেন বাংলাদেশ দলের পেসাররা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটের ১৪টিই নিয়েছেন ইবাদত-তাসকিনরা, বাংলাদেশের কোনো টেস্টে যা সর্বোচ্চ। এর আগে এক টেস্টে বাংলাদেশের পেসাররা সর্বোচ্চ ১৩টি উইকেট নিয়েছিলেন গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দেশের মাটিতে এক টেস্টে পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট ছিল ১০টি—২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে।
তাসকিন আহমেদ প্রথম ইনিংসে উইকেটশূন্য থাকলেও আজ ৩৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নিজের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করলেন। আরেক পেসার ইবাদত হোসেন আজ ১ উইকেট নিলেও প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছেন। আর শরীফুল ইসলাম প্রথম ইনিংস ২ উইকেট নেওয়ার পর আজ আফগানদের দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর শিকার ৩ উইকেট।
২০১৯ সালে বাংলাদেশ দলকে যে আফগানরা টেস্টে হারিয়েছিল, তাদেরই এবার উড়িয়ে দিতে এই পেসারদের বিরাট ভূমিকা। আজ ম্যাচ শেষে লিটন চার বছরের ব্যবধানে দুই টেস্টের পার্থক্য তুলে ধরতে গিয়ে পেসারদের কথাটা আলাদা করে উল্লেখ করলেন, ‘আমরা বড় ব্যবধানে জেতা মানে বড় দল হওয়ার পথে এগোচ্ছি। আমরা এখন অনেক টেস্ট খেলি। আর ২০১৯ সালে আমাদের পেস বোলিং এত ভালো ছিল না। এখন অনেক ভালো।’
মিরপুরের উইকেটে পেসারদের সাফল্যে সন্তুষ্টি ফুটে উঠল লিটনের পরের কথায়, ‘আমরা মিরপুরে ৩ পেসার নিয়ে খেলি না। যেহেতু এখানে উইকেটে যথেষ্ট সাহায্য ছিল, পেসাররা সেটা কাজে লাগাতে পেরেছে। তারা তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। আমি এতে খুশি।’ ভবিষ্যতেও এমন উইকেটে খেলবে কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে লিটন বলেন, ‘এটা প্রতিপক্ষের ওপর নির্ভর করবে।’
পেস বোলিং বিভাগের উন্নতি কতটা হলো, লিটন সেটা বুঝিয়েছেন এভাবে, ‘ওরা কত ভালো করছে, সেটা পিচ ম্যাপেই বোঝা যায়। ওরা এখন কাভার পয়েন্ট ছাড়া বল করছে। ওদের বিপক্ষে আমাদের নেটে ব্যাটিং করতেও কষ্ট হয়। তাতে আমাদের প্রস্তুতিও ভালো হচ্ছে। এটা ধরে রাখতে পারলে নতুনেরা আরও আগ্রহী হবে।’