দক্ষিণ আফ্রিকাকে কি ‘দ্বিতীয়’ বিশ্বকাপ এনে দিতে পারবেন মার্করাম
এইডেন মার্করামের এমন একটি অর্জন আছে, দক্ষিণ আফ্রিকার আর কোনো ক্রিকেটারের তা নেই। ২০১৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে অধিনায়ক হিসেবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন মার্করাম। দেশটির ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত একমাত্র বৈশ্বিক ট্রফি সেটিই।
ক্রিকেটে ১০ বছর খুব একটা লম্বা সময় নয়। মার্করাম এটিও জানেন, জুনিয়র পর্যায়ে একটা টুর্নামেন্ট আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দেওয়ার মধ্যে বিশাল পার্থক্য। সোমবার নিউইয়র্কে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নতুন সে অভিযানই শুরু হচ্ছে মার্করামের।
এএফপিকে মার্করাম বলেছেন, ‘বয়সভিত্তিক একটা টুর্নামেন্টে তো এত মানুষের নজর থাকে না। আর তরুণ তারকা হিসেবে চাপের ব্যাপারটি অতটা মাথায়ও থাকে না। সামনে কী, সেটি সামলানোই ব্যাপার ছিল তখন। এখন অনেক বেশি পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি দরকার আছে। সবাই যাতে ভালো একটা অবস্থানে থাকে, সেটিও নিশ্চিত করতে হয়।’
মার্করাম এরপর বলেন, ‘বিশ্বকাপ অনেক বড় একটা টুর্নামেন্ট। তবে কয়েকটিতে খেলার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। ফলে আমার একটা ধারণা আছে। একটা জিনিস অবশ্য বদলায়নি—অংশ নিতে পেরে আমি আগের মতোই রোমাঞ্চিত।’
২০১৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মার্করাম। ১২৩.৩৩ গড়ে ৩৭০ রান করে হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। সেবার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন কাগিসো রাবাদা, সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই পেসার। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একমাত্র রাবাদাকেই ওই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দল থেকে সতীর্থ হিসেবে পাচ্ছেন মার্করাম।
তবে সিনিয়র পর্যায়ের বিশ্বকাপের আগে রেকর্ডটা সুবিধার নয় দক্ষিণ আফ্রিকার। রব ওয়াল্টার কোচ ও মার্করাম অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে ৮ ম্যাচ খেলে মাত্র দুটি টি-টোয়েন্টি জিতেছে দলটি; সব কটি ম্যাচই আবার খেলেছে দেশের মাটিতে। গত সপ্তাহে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে তিন ম্যাচ সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যদিও মার্করামসহ সাতজন খেলোয়াড় আইপিএলে ব্যস্ত থাকায় এ সিরিজে ছিলেন না। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছে আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের সাত নম্বরে থেকে।
তবে সাম্প্রতিক ফলের দিকে তাকালে পুরো চিত্র টের পাওয়া যাবে না বলে মনে করেন মার্করাম। তাঁর মতে, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রায়ই পূর্ণশক্তির দল খেলায়নি। এর পেছনে নতুন খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারের সঙ্গে আছে খেলোয়াড়দের ‘ওয়ার্কলোড’ও।
বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার সম্ভাব্য ব্যাটিং লাইনআপ অবশ্য বেশ শক্তিশালী। কুইন্টন ডি কক, মার্করাম, হাইনরিখ ক্লাসেন, ডেভিড মিলারের সঙ্গে আছেন ট্রিস্টান স্টাবস। তাঁদের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে একমাত্র ডি ককই খেলেছেন।
কোচ রব ওয়াল্টারের মতে, তাঁর দলের বোলাররা শুরুতেই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট এনে দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন। যদিও দীর্ঘ চোট থেকে ফেরা আনরিখ নর্কিয়া আইপিএলে ঠিক ছন্দে ছিলেন না, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও সুবিধা করতে পারেননি। মার্করাম বলেছেন, ‘তার বড় চোট ছিল। খেলা থেকেও লম্বা সময় দূরে থাকতে হয়েছে। তবে আমাদের সবার সমর্থন আছে তার প্রতি। আমরা জানি, সে কী করতে পারে।’
আইপিএল ফাইনাল খেলে মার্করাম, ক্লাসেন ও মার্কো ইয়ানসেন দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মঙ্গলবার। বাংলাদেশ সময় ৩ জুন তাঁদের প্রথম ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। মার্করাম বলছেন, ‘এসবে আসলে অভ্যস্ত হয়ে যেতে হয়। এখনকার দিনে অনেক খেলোয়াড়ের জন্যই এটি বাস্তবতা। একদিক থেকে সরাসরি অনুশীলনে নেমে সোমবারের জন্য প্রস্তুত হওয়ার ব্যাপারটি ভালোই। শ্রীলঙ্কার ভালো একটা টি-টোয়েন্টি দল আছে। ভালো শুরুটা জরুরি। আমাদের ভালো একটা দল আছে।’
শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকা ছাড়াও গ্রুপ ‘ডি’-তে আছে বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল।