তবে কি আগেভাগে প্রথম ইনিংসের সমাপ্তি ঘোষণার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল বেন স্টোকসের? প্রশ্নের উত্তরটা আজ সন্ধ্যা পর্যন্তও ‘দেখা যাক, কী হয়’তে আটকে ছিল। কিন্তু এজবাস্টন টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ড অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে অনেকে ভুল বলতেই পারেন।
ব্রেন্ডন ম্যাকক্যালামের মস্তিষ্কপ্রসূত, আক্রমণাত্মক–ফলকেন্দ্রিক টেস্ট ক্রিকেটের সমার্থক হয়ে দাঁড়ানো ‘বাজবল’ নয়; মূলধারার টেস্ট খেলেই যে ইংল্যান্ডকে জবাব দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া! তাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন উসমান খাজা। তাঁর সেঞ্চুরিতেই বড় সংগ্রহের পথে হাঁটছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের ৮ উইকেটে ৩৯৩ রানের জবাবে দিন শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১১ রান তুলেছে প্যাট কামিন্সের দল। সফরকারীরা পিছিয়ে ৮২ রানে।
ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়া খাজা অপরাজিত ১২৬ রানে। উইকেটে তাঁর সঙ্গী কিপার-ব্যাটসম্যান অ্যালেক্স ক্যারি (৫২*)। স্বভাবসুলভ আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ১ ছক্কা ও ৮ চারে ঠিক ৫০ রান করেন টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের তিন নম্বর ব্যাটসম্যান ট্রাভিস হেড।
এজবাস্টনে আজ দিনের খেলা শুরুর আগে বৃষ্টি নামে। মেঘলা আকাশের নিচে খেলা শুরু হয় ৫ মিনিট দেরিতে। সহায়ক কন্ডিশনে ইংল্যান্ডকে দ্রুত সাফল্য এনে দেন স্টুয়ার্ট ব্রড। চমৎকার বোলিংয়ে জাগান হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। যদিও শেষ পর্যন্ত পাননি সেই স্বাদ। তবে একটা রেকর্ডে নাম ঠিকই তুলে ফেলেছেন। ডেভিড ওয়ার্নারকে এ নিয়ে ১৫ বার আউট করলেন ব্রড, যা টেস্টে নির্দিষ্ট কোনো ব্যাটসম্যানকে বেশিবার আউট করার তালিকার শীর্ষ দশে উঠে এসেছে।
পরের বলটি ব্রড করেন অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ। সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট চালান মারনাস লাবুশেন। তবে জনি বেয়ারস্টোর দুর্দান্ত ক্যাচে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ব্যাটসম্যান। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি স্টিভেন স্মিথও। স্টোকসের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন স্মিথ। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি।
৬৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর চতুর্থ উইকেটে ট্রাভিস হেডকে নিয়ে ইনিংস মেরামত করেন খাজা। তাঁদের ৮১ রানের জুটি ভাঙেন টেস্টে অবসর ভেঙে ফেরা মঈন আলী। এরপর ক্যামেরন গ্রিনকেও ফেরান এই অলরাউন্ডার।
তবে ষষ্ঠ উইকেটে ক্যারিকে নিয়ে আরেকটি বড় জুটি গড়েন খাজা। তাঁদের প্রতিরোধ ভাঙার সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু গড়বড় করেন জনি বেয়ারস্টো। জো রুটের ক্য়ারির দেওয়া ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করতে পারেননি।
এরপর দ্বিতীয় নতুন বল নিয়েই চমৎকার ইনসুইংয়ে খাওয়াজার স্টাম্প ভেঙে দেন ব্রড। কিন্তু বলটি ‘নো’ হওয়ায় বেঁচে যান অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার।
দিনের শেষ দিকে টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন ক্যারি। খাজার সঙ্গে তাঁর অবিচ্ছিন্ন জুটি ৯১ রানের। এই দুজনের ব্যাটেই কাল তৃতীয় দিনে লিড নেওয়ার আশায় থাকবে অস্ট্রেলিয়া।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস : ৭৮ ওভারে ৩৯৩/৮ (ডি.)
(রুট ১১৮*, বেয়ারস্টো ৭৮, ক্রলি ৬১; লায়ন ৪/১৪৯, হ্যাজলউড ২/৬১, গ্রিন ১/৩২)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস : ৯৪ ওভারে ৩১১/৫
(খাজা ১২৬*, ক্যারি ৫২*, হেড ৫০; ব্রড ২/৪৯, মঈন ২/১২৪, স্টোকস ১/৩৩)
* দ্বিতীয় দিন শেষে অস্ট্রেলিয়া ৮২ রানে পিছিয়ে