পন্ত-পান্ডিয়ার দাপটে সিরিজ ভারতের
৩০০ রানের উইকেটে ২৫৯ তুলে অলআউট হয়ে গেলে কি আর জেতার আত্মবিশ্বাসটা এত থাকে! বোলাররা অবশ্য ইংল্যান্ডকে সেই আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ৭২ রানের মধ্যে ভারতের ৪ উইকেট ফেলে দিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাভ হলো কই। ঋষভ পন্ত আর হার্দিক পান্ডিয়া যে দাঁড়িয়ে গেলেন! পান্ডিয়ার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের সঙ্গে উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান পন্তের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে ভারত ম্যাচ জিতে যায় ৫ উইকেট আর ৪৭ বল হাতে রেখে। একই সঙ্গে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটাও ২-১ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
সিরিজের আগের দুটি ম্যাচ হয়েছে একেবারে একতরফা। ওভালে ইংল্যান্ডকে ১১০ রানে গুটিয়ে দিয়ে ভারত জিতেছিল ১০ উইকেটে। লর্ডসে ১০০ রানে জিতে ইংল্যান্ড আবার সেটার বদলা নিয়েছে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে আজ পন্ত-পান্ডিয়ার জুটিটা হওয়ার আগপর্যন্ত মনে হচ্ছিল, এবার বুঝি কিছুটা লড়াই হবে। কিন্তু দুজন মিলে ১১৫ বলে ১৩৩ রানের জুটি গড়ে ম্যাচটা কী দারুণভাবে বের করে নিয়ে গেলেন ইংল্যান্ডের হাত থেকে।
তাড়া করতে নামা ভারতকে শুরুতে নাড়িয়ে দেন বাঁহাতি পেসার রিস টপলি। দুই ওপেনার—অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান এবং সঙ্গে বিরাট কোহলি, তিনজনই টপলির শিকার। এর মধ্যে রোহিত-কোহলি দুজনই আউট হয়েছেন ১৭ রান করে, মাত্র ১ রান ধাওয়ানের। ৩৮ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা ভারতকে আরও বিপদে ফেলেন ইংলিশ পেসার ক্রেইগ ওভারটন, ১৬ রান করা সূর্যকুমার যাদবকে যশ বাটলারের ক্যাচ বানিয়ে।
পন্ত-পান্ডিয়ার গল্পটা শুরু এরপরে। পান্ডিয়া শুরু থেকে পাল্টা আক্রমণে গেছেন, রান করে গেছেন ১০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে। ওপাশে পন্ত খেলেছেন রয়েসয়ে, উইকেট আগলে রাখায় মনোযোগী থেকে। পান্ডিয়ার ফিফটি এসেছে ৪৩ বলে, তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া পন্তও পরে ৫০ করেন ৭১ বলে। তবে ফিফটি পেরোনোর পর পন্তও হাত খুলে মারতে শুরু করেন, একসময় পান্ডিয়াকেও ছাড়িয়ে যান রানে। ৫৫ বলে ৭১ রান করে পান্ডিয়া যখন ব্রাইডন কার্সের বলে বেন স্টোকসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান, পন্তের ওপাশে অপরাজিত ৮৮ বলে ৭৭ রানে।
সঙ্গী হারিয়ে গুটিয়ে যাওয়ার বদলে আরও আগ্রাসী হয়েছেন পন্ত, ১০৬ বলে করে ফেলেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিও। ওপাশে রবীন্দ্র জাদেজা বলতে গেলে প্রায় দর্শক হয়েই দেখেছেন পন্তের ব্যাটিং। শেষ পর্যন্ত দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন পন্ত, অপরাজিত রয়ে গেছেন ১১৩ বলে ১২৫ রান করে। দুর্দান্ত ইনিংসে ১৬টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছক্কাও।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের রানটা ২৫-পার হয় মূলত জেসন রয়, জস বাটলার, মঈন আলী ও ওভারটনের চেষ্টায়। রয় করেন ৩১ বলে ৪১, বাটলার ৮০ বলে ৬০, মঈন ৪৪ বলে ৩৪। নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকা ইংল্যান্ডের হয়ে শেষ দিকে ৩৩ বলে ৩২ রান যোগ করেন ওভারটন। কিন্তু কেউ শতকের বেশি স্ট্রাইক রেটে বড় ইনিংস খেলতে না পারায় স্কোরবোর্ডে রানটা জুতসই হয়নি ইংল্যান্ডের।
ব্যাট হাতে দারুণ ফিফটির আগে বল হাতে ৭ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৪ ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে ফেরান পান্ডিয়া। পন্ত হয়েছেন ম্যাচসেরা, তবে ৩ ম্যাচ মিলিয়ে ১০০ রান ও ৬ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা পান্ডিয়াই।